সমাজ বিনির্মাণের বড় অস্ত্র হচ্ছে যুক্তি: ইবি ভিসি

হুমায়ুন কবীর জীবন,ইবি প্রতিনিধি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেছেন, বিতর্ক বাঙালির ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় জীবনের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। বিতর্কের মধ্যদিয়ে চাই যুক্তি প্রতিষ্ঠা করতে। তিনি বলেন, সমাজ বিনির্মাণের বড় অস্ত্র হচ্ছে যুক্তি। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যুক্তিবাদ রচনা করতে হবে। তিনি বলেন, প্রাচীন গ্রীস ও এথেন্সে বড় বড় রকমের বিতর্ক রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজন করা হতো। বিতর্কের মধ্যদিয়ে একটি সত্যে উপনীত হওয়ার চেষ্টা তারা করতেন। মধ্যযুগে যখন পশ্চিমা বিশ্বে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সূত্রপাত হয় এবং তাদের কারিকুলামে, পাঠ্যতালিকায় এবং সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত একটি অনিবার্য বিষয় ছিল বিতর্ক। পরবর্তীতে ১৮শতকের রেঁনেসা এবং আলোকপর্বের যে অগ্রযাত্রা, তার পিছনে অক্সিজেনের মতো কাজ করেছে বিতর্ক। তিনি বলেন, আধুনিকতা মানেই হচ্ছে বিজ্ঞানমনষ্কতা, তর্কপ্রিয়তা, বিতর্কের মধ্যদিয়ে সত্যে উপনীত হওয়া। সুতরাং আমাদের আধুনিক যুগেও বিতর্কের প্রয়োজনীয়তা অসীম হয়ে দাঁড়িয়েছে শুধুমাত্র বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় নয়, বাংলাদেশেও। ভাইস-চ্যান্সেলর বলেন, আজকের যে যুব সমাজ, সেই যুব সমাজকে যদি বিজ্ঞানমনষ্ক, প্রগতিশীল, আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলতে চাই, তাহলে তাদের তর্কপ্রিয়, বিতর্কপ্রিয়, যুক্তিনিষ্ঠ, বস্তুনিষ্ঠ করে গড়ে তুলতে হবে। তিনি বিতর্কের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ২১ শতকের পৃথিবী চায় সকল রকমের ভেদ-বুদ্ধি বর্জিত একটি একতাবদ্ধ জনগোষ্ঠি। তিনি বলেন, জয় হোক যুক্তির, যুক্তিতে মুক্তি।

বৃহস্পতিবার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডিবেটিং ফেডারেশনের আয়োজনে, ৪র্থ খুলনা বিভাগীয় বিতর্ক উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডিবেটিং ফেডারেশনের সভাপতি এ কে এম সোয়েবের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ শাহিনুর রহমান, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ সেলিম তোহা, চ্যানেল আই’র ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার অভিনেতা শহিদুল আলম সাচ্চু, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডিবেটিং ফেডারেশনের পরিচালক ও ৪র্থ খুলনা বিভাগীয় বিতর্ক উৎসব কমিটির আহবায়ক ড. আরেফিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শামিম রেজা ও ইকো ফুডের জিএম কাজী রুহুল আমিন।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বিতার্কিক ইসমেত জেরিন এর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির মডারেটর  ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. মোঃ মামুনুর রহমান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় প্রফেসর ড. মোঃ শাহিনুর রহমান বলেন, বির্তকের মূল অর্থ হলো যে, কোনটি সত্য, কোনটি যৌক্তিক, কোনটি গ্রহণ করা যাবে-সেটিকে বের করে নিয়ে আসা। বিতর্ক মানুষকে যৌক্তিক করে, বিতর্ক মানুষকে শাণিত করে, বিজ্ঞানমনষ্ক করে, অসাম্প্রদায়িক করে। তিনি বলেন, বিতর্ক একজন মানুষকে যোগ্য করে তোলে কারণ একজন বিতার্কিক কখনো নেতিবাচক জিনিসকে গ্রহণ করে না। বিতর্ক আমাদের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক জীবনে অত্যন্ত জরুরী।

অপর বিশেষ অতিথি প্রফেসর ড. মোঃ সেলিম তোহা বলেন, বিতার্কিকরা বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত দিয়ে দেশ-বিদেশের যে অজানা তথ্যাবলী উপস্থাপন করে এজন্য তারা জ্ঞানী মানুষ হিসেবে হয়ে উঠে। এটি সম্পূর্ণরুপে বিকশিত করতে পারলে দেশ ও জাতী উপকৃত হবে। দিনব্যাপী এ বিতর্ক উৎসবে খুলনা বিভাগের ১০টি জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২ হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পূর্বে ক্যাম্পাসে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। জাতীয় সংগীতের মধ্যদিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সুভ সূচনা হয়।

পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 2090572233930303923

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item