পীরগঞ্জের পিআইও বদরগঞ্জে কাবিখার ৮৬ টন চাল বিক্রি করেছেন!

নিম্ন মুল্যে চাল বিক্রি, অর্থ আত্মসাত, মাটির কাজ হয়নি, ব্যাংকে টাকা রাখা হয়


মামুনুররশিদ মেরাজুল,নিজস্ব প্রতিনিধিঃ  
রংপুরের বদরগঞ্জের পিআইও মিজানুর রহমান নীতিমালা উপেক্ষা করে ৮৬ মে.টন কাবিখা’র সম্পূর্ন চাল নিম্ন মুল্যে বিক্রি দেখিয়ে কয়েক লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। চাল বিক্রির পর ওই টাকা যৌথ ব্যাংক হিসাবে জমা দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি কোন প্রকল্পেই মাটির কাজ করা হয়নি। ওই ঘটনার পর তিনি বদলী নিয়ে পীরগঞ্জে এসেছেন।
বদরগঞ্জ পিআইও অফিস ও বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে, ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কারে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের স্মারক নং- ৫১.০১.০০০০.০১১.১৬.০৬৮.১৬-২৭৭, তারিখ- ২৪/৩/২০১৬ এ বদরগঞ্জে কাবিখা- খাদ্যশষ্য সাধারন (২য় পর্যায়) প্রকল্পের ৮৬ মে. টন চাল বরাদ্দ আসে। ওই বরাদ্দে বদরগঞ্জের কুতুবপুর ও দামোদরপুর ইউনিয়নে ১০টি করে প্রকল্প, মধুপুরে ৮টি এবং গোপীনাথপুরে ৯টি মোট ৩৭টি প্রকল্প গ্রহন করা হয়। মোটা অংকের টাকা আত্মসাত করতেই কৌশলে প্রকল্পগুলোতে মাটির কাজ না অন্তর্ভুক্ত না করে শুধু সোলার স্থাপন প্রকল্প দেখানোর ফলে সরকারের উদ্দেশ্য ভেস্তে গেছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকরা জানান। এদিকে পিআইও মিজানুর রহমান ওইসব প্রকল্পের সভাপতিদেরকে বরাদ্দপত্র হাতে না দিয়ে নিজেই স্থানীয় ডিও ব্যবসায়ীর কাছে নিম্নমুল্যে প্রতি টন ১০ হাজার টাকা করে ৮৬ মে. টন চাল ৯ লাখ ৫৮ হাজার টাকা বিক্রি করে দেন। বিধি রয়েছে, কাবিখা প্রকল্পের খাদ্যশষ্য কখনোই বিক্রি করা যাবে না, ব্যাংকেও টাকা রাখা যাবে না এবং অবশ্যই বরাদ্দের অর্ধেক দিয়ে মাটির কাজ করতে হবে। তারপরও কাবিখার চাল বিক্রি করে ওই টাকা প্রকল্প সভাপতিদের নামে জামানত দেখিয়ে ইউএনও এবং পিআইও’র যৌথ ব্যাংক হিসাব সোনালী ব্যাংক লিঃ বদরগঞ্জ শাখার হিসাব নং- ০০১০১৫৯৪৪ এ জমা দেখানো হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রকল্প সভাপতিরা জানান। সরকারী নির্দেশ রয়েছে, কাবিখা’র প্রতি টন চালের মুল্য ৩৫ হাজার ১৩৯ টাকা করে ৮৬ মে. টন চালে মোট ৩০ লাখ ২১ হাজার ৯৫৪ টাকা মুল্যমানের কাজ করতে হবে। কিন্তুপিআইও নিজেই ৩৭টি প্রকল্পে বরাদ্দকৃত ওই চাল মাত্র ১১ হাজার টাকা করে টন বিক্রি করেছেন। কমমুল্যে বিক্রি দেখিয়ে তিনি প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বদরগঞ্জের ব্যবসায়ী ও ডিও ব্যবসায়ীরা জানায়, ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে প্রতিটন চাল ২০ হাজার থেকে ২২ হাজার টাকা করে কেনাবেচা হয়েছে। কাবিখা প্রকল্পের কয়েকজন সভাপতি নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, পিআইও অফিস ও একটি কোম্পানীর লোক এসে আমাদেরকে শুধু সোলার প্যানেল দিয়ে গেছে। আমরা এর বেশী কিছুই জানি না।
সুত্র আরও জানায়, বেসরকারী সংস্থা ‘রিসদা-বাংলাদেশ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান কাবিখার ৩৭টি প্রকল্পে সোলার প্যানেল সরবরাহ করে বদরগঞ্জের ইউএনও’র কাছে ৩০ জুন/১৬ইং ৩১ লাখ ৩৯ হাজার ১৬৯ টাকার বিল ভাউচার দাখিল করে। পরে তাদেরকে চেক মুলে সর্বমোট ৯ লাখ ৫৮ হাজার টাকার ব্যাংক সম্পূর্ন বিল পরিশোধ দেখানো হয়েছে। এ ব্যাপারে বদরগঞ্জের বর্তমান পিআইও গোলাম কিবরিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি। পীরগঞ্জের পিআইও মিজানুর রহমান বলেন, বদরগঞ্জে যথাযথভাবে সোলার প্যানেল স্থাপন করা হয়েছে। আমি কম মুল্যে চাল বিক্রি করিনি এবং কোন টাকা আত্মসাত করিনি। বদরগঞ্জের ইউএনও কাজী আবেদা গুলশান বলেন, পিআইও অফিসে যোগাযোগ করেন। পিআইও সব বলতে পারবেন। জেলা ত্রাণ পূনর্বাসন কর্মকর্তা ফরিদুল হক বলেন, ৩০ জুনের পর সোলার প্যানেলগুলো লাগানো হয়েছে। তবে ব্যাংকে টাকা রেখে পরে বিল পরিশোধ করা হয়েছে। তিনি নিম্ন মুল্যে চাল বিক্রির ব্যাপারে কোন কথা বলেননি।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 3636120081724666741

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item