পঞ্চগড় জেলার ৫ জয়িতার জীবন সংগ্রামের কাহিনী

মোঃ সাইদুজ্জামান রেজা,পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ

পঞ্চগড় শহরের মসজিদপাড়া মহল্লার রেখাতুন নেহারের জীবন কাহিনী
০১। অর্থনৈতিক ভাবে সাফল্য অর্জনকারী এক নারী । দরিদ্র কৃষক পিতার সংসারে আমার শৈশব জীবন অতিবাহিত হতে থাকে। শৈশবে মাতা মৃত্যূ বরণ করায় আমার জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। বিমাতার সংসারে বাবার অভাব অনটনের কারনে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করা সম্ভব হয় নি। তার পরেও নবম শ্রেণী পর্যন্ত অধ্যায়ন করি। তারপর মাত্র ১৪ বছর বয়সে এক ছোট পরিবারের গ্রাম্য ডাক্তার মোঃ আবু হোসেন এর সহিত বিবাহ হয়। বাল্যকালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ায় আমার জীবনে হতাশা নেমে আসে। হতাশার ঘোর কুয়াশা কেটে আমি পঞ্চগড় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর হতে সেলাই প্রশিক্ষন গ্রহণ করি। প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর আমি নিজেই একটি সেলাই মেশিন ক্রয় করে হাতের কাজ সহ নানা রকম কারুপণ্য তৈরী করতে থাকি এবং সেসব পণ্য সামগ্রী নিকটস্থ দোকানে বাজারজাতকরণ করতে থাকি। ধীরে ধীরে আমার আর্থিক স্বচ্ছলতা আসতে থাকে। এভারে এক পর্যায়ে কিছু অর্থ ও ঋণ নিয়ে মসজিদপাড়া,পঞ্চগড় শহরে একটি কারুপণ্যের দোকান প্রতিষ্ঠা করি। ০২ থেকে ০৩ জন কর্মচারী দোকানে কাজের জন্য রাখি। তারপর থেকে আমার দোকানে কারুপণ্য তৈরী ও বিক্রয় হতে থাকে। এভাবে দোকান হতে যে আয় হয় তা দিয়ে আমি সমাজে প্রতিষ্ঠিত হই। আমার প্রতিষ্ঠানের সুনাম সমগ্র পঞ্চগড় শহরে ছড়িয়ে পড়ে। বিকাশ বাংলাদেশ,পঞ্চগড় হতে গুণী নারীর মধ্যে একজন গুণী ব্যক্তি হিসাবে ভূষিত হই এবং পুরস্কার অর্জন করি। এরপর মিরগড়,পঞ্চগড় এর একটি সংঘ হতে সফল উদ্যোক্তা হিসাবে পুরুষ্কার পাই এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, পঞ্চগড় হতে কারুপণ্যের জন্য পুরস্কার পাই। বর্তমানে আমার প্রতিষ্ঠানটি সুপরিচিত। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর,পঞ্চগড় হতে নিবন্ধন নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রমের পরিধি আরো বৃদ্ধি করি। এর ফলে নকশি কাঁথা ব্লকবটিক, কারচুপির কাজ করা জামা কাপড়, শাড়ি ,থ্রিপীচ, ওড়না ,হাতে তৈরী ব্যাগ ইত্যাদি পণ্য বাজারজাত করে আর্থিকভাবে সফলতা অর্জন করতে পারি। এর পাশাপাশি বিদেশী কবুতর পালন করে আর্থিকভাবে লাভবান হই। এই সব ব্যবসা ও প্রশিক্ষনের মাধ্যমে আমার ০২ (দুই) সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে সক্ষম হই। বড় ছেলে-মোঃ সায়েদুর রহমান ২০০৩ সালে পঞ্চগড় বিপি স্কুল হতে এস,এস,সি, ২০০৫ সালে ঢাকা নটরডেম কলেজ হতে এইচ,এস,সি এবং বর্তমানে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কলেজ হতে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করাতে ভুমিকা রাখি। তাছাড়াও আমার ছোট ছেলে মোঃ আমির হামজা (রিয়াদ) বর্তমানে জাহাঙ্গীর নগর ইউনিভার্সিটি কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র। আমার ছোট সংসারে জীবনের বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে দুই সন্তানের লেখাপড়ার খরচ বহনের পাশাপাশি আমি আর্থিকভাবে সফলতা অর্জন করি।বর্তমানে আমাকে অন্যের সহেযোগিতা বা স্বামীর উপড় নির্ভর করতে হয় না। আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পেরে আমি মহান আল্লাহর কাছে চির কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপণ করি।

পঞ্চগড় শহরের ইসলামবাগ মহল্লার সানজিদা আক্তারের জীবন কাহিনী

০২ নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করেছেন যে নারী। আমার জম্ম পঞ্চগড় সদর উপজেলার ইসলামবাগ মহল্লায়। গরীব পনিবারের একজন সাধারণ মেয়ে। দুই ভাই এক বোন,বাবা বেকার।আমার বড় ভাই বিদ্যুতের মিস্ত্রি। কোন রকমে বড় ভাই আমাকে এসএসসি পাশ করায়। তারপর আমাকে ১৮ বছর বয়সে বাড়ি ভিটা বিক্রি করে আমাকে  বিয়ে দেয়। বিয়ের ২ বছর পরে আমার দুটি জমজ কন্যা সন্তানের জম্ম হয়। সন্তান দুইটি শারীক সমস্যার কারণে,আমার ননদ,শাশুড়ী ও স্বামী সকলে আমার উপর অমানবিক নির্যাতন করে এবং  সন্তান ও আমার ভরণপোষন থেকে বঞ্চিত করে। তারপরও আমি মানুষের বাসায় কাজ করে পরিববারের সবার সাথে মিলেমিশে থাকার চেষ্ঠা করি। তার পরেও পরিবারের লোকজন আমার উপর অমানবিক নির্যাতন করে এবং সব সময় অক্যথ ভাষায় গালিগালাজ করে। পরবর্তীতে আমি আইনের আশ্রয় নেই। থানায় বিচার করে এবং আমাকে শশুর বাড়িতে নিয়ে য়ায়। এর পর শুরু হয় আবার নির্যাতন এবং আমার শাশুড়ী আমাকে বাড়ীতে থেকে বের করে দেয়। আমি নিরুপায় হয়ে  আবার বাবার বাড়িতে চলে আসি। আমার এই অবস্থা দেখে বাবা ব্রেইন ষ্টোক করে মারা য়ায়। বাবা মারা য়াওয়ার পর একটু নত হয় এবং আবারও আমাকে নিয়ে য়ায়। নিয়ে য়াওয়ার পর সেই রাতে  আবাও আমার উপর নির্যাতন শুরু হয়। আমি রাতে অন্ধকারে বাচ্চা দুটিকে নিয়ে বাঁচার জন্য পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেই। সেখানে একদিন থাকার পরও শাশুড়ী ও স্বামী কেউই আমার খোজ নেয়নি। সেখান থেকে আমি বাবার বাড়িতে চলে আসি। আমার ভাই আমাকে  এই অবস্থা দেখে তার বউ বাচ্চাকে নিয়ে অন্যত্র চলে যায়। সব কিছু হারিয়ে দুই জমজ কন্যা সন্তান নিয়ে আবার শুরু হয় সংগ্রামের পথ চলা। এরপর আমি বাচ্চা দুটি আমার মায়ের কাছে রেখে ঢাকা চলে য়াই। ঢাকায় গিয়ে আমি বিউটিশিয়ানের কাজ শিখি। এরপর আমি আমার বাবার বাড়িতে আসি। পঞ্চগড় শহরে আমি একটি রুম ভাড়া নেই এবং  বিউটিশিয়ানের কাজ শুরু করি। কাজ করে আমি কিছু সঞ্চয় জমা করি। আমি একটি সেলাই মেশিন কিনি। বিউটিশিয়ানের পাশাপাশি আমি সেলাই কাজ করি। জীবনের উন্নতির জন্য আমার উপার্জনের টাকা দিয়ে হাঁস-মুরগি কিনে তা লালন পালন করতে থাকি। বর্তমানে আমার দুই সন্তানের খরচ চালানো সম্ভব হচ্ছে। এভাবে এখন আমি মোটামুটিভাবে চলছি। নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে আবার ও নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করি। আমার এখন সচ্ছলতা ফিরে এসেছে। সমাজে আমি মাথা উচু করে বেঁচে আছি। বর্তমানে জমজ দুই কন্যা সন্তানকে নিয়ে আমার কিছুটা হলেও সুখের হাওয়া বইছে।#
    
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার মধ্যপাড়া গ্রামের সেতারা বানু জীবন কাহিনী
০৩ সফল জননী। মোছাঃ সেতারা বানু,স্বামী মৃত রহিদুল ইসলাম,পিতা-মৃত অখিমউদ্দীন সরকার,মাতা-জবেদা খাতুন,গ্রাম-মধ্যপাড়া,দেবীগঞ্জ,পঞ্চগড়। ১০ ভাই-বোনের মধ্যে সেতারা ছিলেন ২য়। বৃহৎ পরিবারে শত দুঃখ কষ্টের মাঝেও সেতারার সংসার সুখেই ছিল। এক সময় সেতারার পিতা তাকে স্কুলে ভির্তি করে দেয়। ধীরে ধীরে সেতারা বড় হতে থাকে এবং মনে নানা রকম স্বপ্ন নিয়ে লেখা-পড়া করতে থাকি। ১৯৭৮ সেতারা এসএসসি পরীক্ষা দেই।ভালই কাটছিল স্কুল জীবন। কিন্তু সবার কপালে কি সুখ সহ্য হয়। একদিন সেতারা বাবা রহিদুল ইসলামের সাথে সেতারার বিয়ে দেয়। তখন সেতারার লালিত স্বপ্ন ভেঙ্গে তছনছ হয়ে য়ায়। যে সময় মেয়েরা স্বপ্ন পুরণের বুক বরা আশা ও অদম্য সাহস নিয়ে কলেজে যাবে,কিন্তু নিয়তির কি পরিণতি সে সময় সেতারাকে যেতে হয় স্বামীর ঘরে।স্বামীর সংসারে সেতারার আর লেখাপড়া করা হয়নি।সংসার জীবনে ১৯৮৪ সালে সেতারা বেগমের বড় মেয়ের জম্ম হয়। তিন বছর যেতে না যেতেই ১৯৮৭ সালে জম্ম হয় বড় ছেলে এবং ১৯৮৯ সালে জম্ম হয় ছোট ছেলের। সেতারা লেখাপড়ার মর্ম বুঝতেন। তাইতো তিনি নিজে বেশি দুর লেখাপড়া করতে না পারলেও সন্তানদেরকে লেখাপড়া থেকে বঞ্চিত করেননি। বড় মেয়ে ২০০২ সালে এসএসসি পাশ করে কলেজে ভর্তি হয়। বড় ছেলে ২০০৪ সালে এসএসসি পাশ করে এইচএসসি ভর্তি হয় এবং ছোট ছেলে ২০০৯ সালে এসএসসি পাশ করে কলেজে ভর্তি হয়। সুখেই কাটছিল সেতারা সংসার। একদিন হঠাৎ সেতারা স্বামী এ জগৎ সংসারের মায়া ত্যাগ করে পরপারে পাড়ি জমায়। মনে হয় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে সেতারা মাথায়। কিন্তু সেতারা থেমে থাকেনি। তিনি তার সন্তানদের লেখাপড়া চালিয়ে যেতে থাকেন। এরপর ২০১১ সালে লেখাপড়া শেষ করার পরে সেতারা বানু তার বড় মেয়েকে ঢাকার একটি কোম্পানীর ম্যানেজারের সাথে বিয়ে দেন। বড় ছেলে ২০১১ সালে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে এম.এ শেষ করে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংক এ যোগ দেন। এর পর ইসলামী ব্যাংকের চাকুরী ছেড়ে দিয়ে ২০১৪ সালে শিক্ষা বিভাগে বিসিএস পাশ করে গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী সরকারী কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ছোট ছেলে ২০১২ সালে ¯œাতক পড়া কালীন  সময় ২০১২ সালে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এ যোগ দেন। বর্তমানে সে কুমিল্লায় কর্মরত আছেন। এরই মধ্যে সেতারা বানু ব্র্যাক সামাজিক ক্ষমতায়ন কর্মসুচীর পল্লী সমাজ নামক সংগঠনে যোগ দেন। সেখানে তিনি সভা সমাবেশের মাধ্যমে এলাকার লোকজনকে বিভিন্ন উন্নয়ন মুলক বিষয়ে সরচতন করেন। শত দুঃখ কষ্টের মাঝেও সেতারা তার সন্তানদের লেখাপড়া চালিয়ের যান এবং তার সন্তানদের এম,এ পর্যন্ত লেখাপড়া করান। সেতারার এরকম সফলতার দরুন এলাকার লোকজন মনে করেন সেতারা দেবীগঞ্জ উপজেলার গর্ব।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার মধ্যপাড়া গ্রামের শাকিলার  জীবন কাহিনী
০৪ শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী। মোছাঃ শাকিলা সরকার,পিতা-মৃত আব্দুল হামিদ সরকার,মাতা-মোছাঃ রিয়াজুন নেহার,স্বামী-মোঃ আইনুল হক। আমার বাবারা ছিলেন,দুই ভাই। ছোট ভাই মোঃ  আব্দুল মজিদ  ও বড় ভাই আব্দুল হামিদ। ছোট ভাই  আব্দুল মজিদ ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং অবিবাহিত। কিন্তু  হঠাৎ করে তিনি ১৯৯১ সালে মৃত্যু বরণ করেন। আমার বাবা ছোট ভাইয়ের শোক  না সামলাতে পেরে ১৯৯৩ সালে এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরপারে পাড়ি জমান। কিন্তু দুনিয়াতে রেখে যান আমার পাচ ভাই বোনকে। একমাত্র মা ছাড়া আমাদেরকে দেখার কেউ ছিলোনা। আমার বড় অষ্টম শ্রেণীতে মেজ বোন পঞ্চম শ্রেণীতে  আর ভাই দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে এবং আমি প্রথম শ্রেণীতে পড়ি। ছোট ভাইয়ের বয়স তখন ৬ মাস। আমার মা একটি এনজিও থেকে দর্জি বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে সেলাই মেশিন ক্রয় করে তাতে সেলাই এর কাজ করে যে আয় হয় তা দিয়ে আমাদের সংসারের পাশাপাশি পাঁচ ভাইবোনের লেখাপড়া চালিযে যান। বড় বোন দুইটির লেখাপড়া শেষ হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে য়ায়। আর আমি লেখাপড়া চালিয়ে যেতে থাকি। ২০০৩ সালে আমি কৃতিত্বের সাথে এসএসসি পাশ করি। ইচ্ছা ছিল ভালো কলেজে ভর্তি হওয়ার। কিন্তু টাকা-পয়সার অভাবে ভালো কলেজে পড়া হয়নি। কিন্তু আামি লেখাপড়া বাদ দেইনি। আমি দেবীগঞ্জ কলেজে ভর্তি হয়ে ২০০৫ সালে এইচএসসি পাশ করি এবং বি,এস,এস(পাশ ) কোর্সে ভর্তি হই। কিন্তু ১ম বর্ষে পড়া অবস্থায় কোন এক চক্রান্তের স্বীকার হয়ে পার্শ্ববর্তী  ইউনিয়নের  আইনুল হকের সাথে আমার বিয়ে হয়। কিন্তু সুখ কি সবার কপালে সহ্য হয়। বিয়ের পরে আমি জানতে পারি আমার স্বামীর আরেকটি বউ আছে সেখানে তার সন্তানও আছে এবং এর আগেই সে দুইটি বিয়ে করছে। একদিকে দুঃখ কষ্ট মুছে ফেলার আগেও আর দুঃখ কষ্ট এসে আমার জীবনে এসে ভীর জমায়। এভাবে চলতে থাকে আমার জীবন। এর মধ্যে আমার একটি কন্যা সন্তানের জম্ম হয়। স্বামীর বাড়িতে  আর যাওয়া হলো না। বাবার বাড়িতে মায়ের  কাছে থেকে জীবন যাপন করতে থাকি। এর পর ২০১৩ সালে বি,এস,এস পাশ করি। আমি প্রাইভেট পড়িয়ে আমার লেখাপড়াসহ  সংসারের খরচ চালাতে থাকি এবং ব্যাক সামাজিক ক্ষমতায় কর্মসুচীর পল্লী সমাজে যোগ দেই। সেখান থেকে আমি আমার জীবনের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটাতে বিভিন্ন রকম পরামর্শ ও জীবন যুদ্ধে জয়ী হওয়ার সাহস অর্জন করি এবং সেখান থেকে আমি বিভিন্ন সচেতনতা মুলক কর্মকান্ডে অংশ গ্রহণ করি। এরপর ২০১৪ সালে একটি বেসরকারী এনজিও ইএসডিও এর ওয়াশ রেজাল্ট প্রজেক্ট-এ চাকুরী পাই। তখন থেকে আমার জীবন চলতে থাকে বহুতা নদীর মতো। আমার কন্যা সন্তানটি আসতে আসতে বড় হয়ে সে এখন নার্সারীতে পড়ছে। এরপরও আমি বসে থাকিনি। আমি আবার এম,এ ভর্তি হই। বর্তমানে আমি অনান্যদের থেকে ভাল আছি। বর্তমানে আমি বিভিন্ন সভা সংগঠনে নারীদেরকে তাদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটানোর জন্য এবং নারীদের ক্ষমতা অর্জনের পরামর্শ দিয়ে থাকি ও পিছিয়ে পড়া নারীদেরকে জীবন যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য প্রেরণা যোগাই।
পঞ্চগড় শহরের ডোকরাপাড়া মহল্লার আকতারুন নাহার সাকীর জীবন কাহিনী
০৫ সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন যে নারী ঃ পঞ্চগড় বাংলাদেশের সর্বোত্তরে তিন দিক ভারত সীমান্তবর্তী অবহেলিত জেলা পঞ্চগড় যেখানে শিক্ষিতের হার ছিল দেশের সর্বনি¤œ। রাজধানী থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দুরত্বে হেতু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বির্নিমানে ছিল অবজ্ঞা,এখানকার বেলে দো-আঁশ পাথুরে মাটি হেতু ছিল কৃষিতে অনগ্রর অপ্রতুল উৎপাদন বহিরাগত লোক সংখ্যাধিক্য যারা পাথর বালু উত্তোলনকারী মজুর ফলে সামাজিক রীতিনীতি, বিভিন্ন,গোত্রভুক্ত বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ,অনাচার,কু-সংস্কার,অপসংস্কৃতিক, বেআইনি তালাক,নিযার্তন,জুলুম,অত্যাচার ছিল প্রথাগত প্রচলন। এ জনপদে স্কুল কলেজ যাতায়াত রাস্তার পাশে দেখতাম অগনিত মেয়ে বিভিন্ন স্থানে রাস্তার পাশে প্রখর রোদ্দুর শরীরে সরাদিন পাথর ভাঙ্গছে। কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করতাম কেউ বলত তালাকপ্রাপ্তা, কেউ স্বামীর নির্দ্দেশে এ কাজ করছে। আরোও সাংসারিক জীবন সর্ম্পকে জানতে চাইলে বলত তারা সব সময় স্বামী ও তার স্বজন দ্বারা অত্যাচারিত,নির্যাতিত,তখনই মনে মনে সংকল্প করতাম কিভাবে এ অবস্থার নিরসন করা য়ায়। কিন্তু একাকী এটা সম্ভব নয়। পরে সংগঠন করলাম যার মূল লক্ষ্য ছিল নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে এবং প্রতকারে সাংগঠনিক নির্ভীক উদ্যোগ,তৎপরতা থাকবে। সে ভাবে পরস্পর নামেএকটি সংগঠন স্থাপন করে যার প্রতিপাদ্য পরিবর্তনের লক্ষ্যে সমন্বিত পদক্ষেপ ও সমাজসেবা মহিলা ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কৃর্তক নিবন্ধন প্রদত্ত হয়ে নারীর ক্ষমতায়ন নারীর প্রতি উন্নয়ন  সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সদস্য ও অনুদান সংগ্রহ সাপেক্ষে সংগঠন পরিচালনা করে আসছে। উক্ত সংগঠনে হত দরিদ্র পরিবারের তালাকপ্রাপ্তা, নির্যাতিতা, বিবাহযোগ্য কিশোরীগণের আতœকর্ম সংস্থান সৃষ্টি মুলক ৬মাস ব্যাপি সেলাই প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণার্থীদের বিনামূল্যে সেলাই মেশিনসহ সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামাদী বিতরণ করেছে প্রায় ৫৪ জনকে। ছাড়াও প্রায় ২২০জনকে বিভিন্ন ট্রের্ডএ যেমন,্ এ্যম্ব্রয়ডারী, ব্লকবাটিক, মোমবাতি,ম্যাটতৈরী, পুঁথির ব্রাগতৈরী প্রশিক্ষণ প্রদান ও তাদের আতœকর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করেছে যা ইতোমধ্যে বহুসংখ্যক নারী নির্যাতন, সহিংসতাসহ ধর্ষণ এর সাহসী উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে প্রাপ্য বিচার এর ব্যবস্থা, প্রতিহিংসার স্বীকার নারীর প্রশাসনিক পর্যায়ে যোগাযোগ এর ব্যবস্থা করন চিকিৎসা সহযোগিতা, আইনি সহায়তা, সু-বিচার প্রাপ্তিতে প্রায় ১৬০০জন নির্যাতিত নারী, এবং ধর্ষিতার স্বীকার ও স্বামী দ্বারা নির্যাতন ও দ্বন্দ মিমাংশায় সহযোগিতা করেছে। প্রত্যেক নারী সহিংসতার ক্ষেত্রে সফলতা এসেছে, এই সংস্থার মাধ্যমে অনেক প্রকার ঝুকি জীবনে এসেছে তার পরেও থেমে থাকে নাই নির্ভীক যে নারী ,ইতোমধ্যে বহুসংক্য নির্যাতিতা,ধর্ষিতা, প্রতিহিংসার পাশে থেকে বিচার সালিশী ব্যবস্থা করাসহ স্বামী কৃর্তক অন্যায়ভঅবৈ ঝগড়া দন্দ নারী অধিকার সরব, সোচ্চার ও অপ্রতিরোধ্য যে নারী। যে জীবনের অনেক ঝুকি নিয়ে স্বেচ্ছাকৃত ভাবে অনেক অসহায় দরিদ্র মেয়ের বিভিন্ন সহিংসতার বিরুদ্ধে দাড়িয়েছে এবং সফলও হয়েছে তার অবদান অনন্য।#

পুরোনো সংবাদ

পঞ্চগড় 5347926706164778446

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item