লাকী আখন্দর দাফন সম্পন্ন
https://www.obolokon24.com/2017/04/laki_22.html
এরপর তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে কিংবদন্তি এই সংগীতশিল্পীর প্রতি গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে তাঁর প্রতি শেষবারের মতো শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সর্বস্তরের মানুষ। এর আগে সকাল ৯টায় বারডেম হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ আরমানিটোলার নিজ বাস ভবনে নেওয়া হয়।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজ বাসাতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী লাকী আখন্দ। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
২০১৫ সালে ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে লাকী আখন্দর। এরপর থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনারি কেয়ার ইউনিটে ভর্তি ছিলেন তিনি। গত ৭ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল (বিএসএমএমইউ) ছেড়ে আরমানিটোলায় নিজ বাসায় ফেরেন তিনি।
শিল্পীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডেও নিয়ে যাওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার জন্য তখন পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। থাইল্যান্ড থেকে ফিরে তিনি ইউনাইটেড হাসপাতাল ও বারডেমে চিকিৎসা নেন। পরে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয় তাঁকে।
লাকী আখন্দর জন্ম ১৯৫৬ সালের ১৮ জুন। শৈশব পেরোতেই তিনি সুযোগ পেয়ে যান রেকর্ড লেভেল প্রতিষ্ঠান এইচএমভিতে। তারপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। ছন্দ-লয়ের টানে তিনি ভেসে চললেন সুরদরিয়ায়।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু জি সিরিজের এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, 'লাকী আখন্দ হলেন সুরের বরপুত্র'। সে অনুষ্ঠানে তাকে আজীবন সম্মাননা জানানো হয়।
লাকী আখন্দ ছিলেন একাধারে সংগীত পরিচালক, সুরকার ও গীতিকার। ১৯৮৪ সালে সারগামের ব্যানারে বের হয় তাঁর সেলফ টাইটেলড ডেব্যু অ্যালবাম 'লাকী আখন্দ'। ওই অ্যালবামের বেশ কয়েকটি গান ব্যাপক সাড়া ফেলে।
ছোট ভাই হ্যাপি আখন্দকে নিয়ে সৃষ্টি করেন বিখ্যাত গান 'আবার এলো যে সন্ধ্যা'। লাকী আখন্দর উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে 'এই নীল মনিহার', 'আমায় ডেকো না', 'কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে', 'যেখানে সীমান্ত তোমার', 'মামনিয়া', 'বিতৃষ্ণা জীবনে আমার', 'কি করে বললে তুমি', 'লিখতে পারি না কোনো গান', 'ভালোবেসে চলে যেও না' প্রভৃতি।
১৯৮৭ সালে ছোট ভাই হ্যাপি আখন্দর মৃত্যুর পরপর সংগীতাঙ্গন থেকে অনেকটা স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান এই গুণী শিল্পী। মাঝখানে প্রায় এক দশক নীরব থেকে লাকী আখন্দ ১৯৯৮ এ 'পরিচয় কবে হবে' ও 'বিতৃষ্ণা জীবনে আমার' অ্যালবাম দুটি নিয়ে আবারও ফিরে আসেন শ্রোতাদের মাঝে।
কুমার বিশ্বজিতের কণ্ঠে 'যেখানে সীমান্ত তোমার', আইয়ুব বাচ্চুর 'কি করে বললে তুমি', হাসানের 'হৃদয়ের দুর্দিনে যাচ্ছে খরা'র মতো কালজয়ী গানের সুরারোপ করেন তিনি।
'লিখতে পারি না কোনো গান আজ তুমি ছাড়া' ব্যান্ডতারকা জেমসের এই বিখ্যাত গানটির সুরসংযোজনা ও সংগীত পরিচালনা করেছেন লাকী আখন্দ।