সুন্দরগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের প্রহারে ২ ছাত্র গুরুতর আহতের ঘটনা ধামা চাপার চেষ্টা

দু-দফায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল হলেও প্রধান শিক্ষক বহাল তবিয়তে


নুরুল আলম ডাকুয়া, সুন্দরগঞ্জ(গাইবান্ধা) থেকেঃ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম ছাপড়হাটী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের প্রহারে ৫ম শ্রেণির ২ ছাত্র গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনা দু-দফা তদন্তে প্রমানিত হওয়ায় তদন্তকারী কর্মকর্তা পৃথক পৃথক ভাবে তদন্ত রিপোর্ট উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর দাখিল করেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগসাজশ করে ঘটনার ধামা-চাপা চেষ্টা করছেন। ফলে প্রহারকারী প্রদান শিক্ষক বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
    জানা গেছে, উপজেলার পশ্চিম ছাপড়হাটী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অখিলেশ চন্দ্র বর্মণ গত ৯ এপিল দুপুর ২টার দিকে ৫ম শ্রেনির ছাত্র শাহীন ও গোলাপকে ডেকে তার শরীর টিপে দেয়ার জন্য বলেন। ছাত্রদ্বয় ক্লাশের পড়া ছেড়ে প্রধান শিক্ষকের এই আদেশ না মানায় ক্ষুদ্ধ হয়ে তিনি শ্রেণি কক্ষেই ৫ম শ্রেণির ওই ২ ছাত্রকে বাসের বাতি ( বেত) দিয়ে স্বজরে বেদম প্রহার করেন। প্রহারের শিকার ছাত্র শাহিন মিয়া ও গোলাপ হোসেন  গুরুতর আহত হয়ে শ্রেণি কক্ষে লুটিয়ে পড়ে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করলে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোজাম্মেল হক দায়িত্বরত সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার পরিমল চন্দ্র বর্মকে মোবাইল ফোনে অভিযোগ করেন। ঘটনার পরদিন ৩৮ জন  ছাত্র অভিভাবকের স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ পত্র ১০ এপ্রিল শিক্ষা অফিসার বরাবর দেয়া হলে এরই প্রেক্ষিতে সহকারী শিক্ষা অফিসার পরিমল চন্দ্র বর্মণ ঘটনা তদন্তে সরেজমিন বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান। তিনি পরপর দু-দফায় ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও এলাকাবাসির নিকট জিজ্ঞাসাবাদে বাশের বাতি (বেত) দিয়ে ছাত্র পেটানোর সত্যতা পান। এতে তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ নিয়ে ওই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য সেলিম মিয়া জানান, প্রধান শিক্ষক প্রায়ঃশই এ ধরণের ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন ও ছাত্রদের সঙ্গে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। উপজেলা শিক্ষা অফিসার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ঘটনার সত্যতা  প্রমাণের তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি। এর আলোকে ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাথে ওই প্রধান শিক্ষক অখিলেশ চন্দ্র বমণ যোগযোগ করার পর তাকে অন্যত্র বদলীর করে দেয়ার কথা ভাবছেন। অভিযোগকারীদের দাবী প্রধান শিক্ষক অখিলেশ চন্দ্র বর্মনকে ছাত্র  প্রহারের ঘটনায় বিভাগীয় মামলা ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দেয়া না হলে পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হবে। এদিকে  অভিযোগ পত্রে দোষী প্রধান শিক্ষককে শাস্তি মুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে সুপারিশ কারী সভাপতি মোজাম্মেল হককে ম্যানেজ করে ঘটনা ধামা-চাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন- ছাত্র পিঠানো কোন ঘটনা নয়। বিদ্যালয়ে সিলিপের বরাদ্দকৃত টাকা থেকে তাকে অংশ না দেয়ায় তিনি অভিযোগ করেছিলেন। বিষয়টি সভাপতির সাথে মিটমাট করে নেয়া হয়েছে। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে, প্রধান শিক্ষক প্রহারের বিষয়টি সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয় গুলো স্থানীয় ভাবে মিটিয়ে নিয়েছি। কাজেই পত্রিকায় খবর লিখে আমার চাকরির ক্ষতি করতে পারবেন না। আর আমি চাকরি যাওয়ারও পয়োরা করি না। এদিকে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্র প্রহারের ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলেও এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় চরম ক্ষুদ্ধ অবস্থায় এলাকাবাসি হতাশায় ভুগচ্ছেন।

পুরোনো সংবাদ

গাইবান্ধা 3287620486461042335

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item