মুক্তিযুদ্ধে রানিশংকৈল উপজেলার প্রথম শহীদ নফিজ উদ্দিন আহমেদ
https://www.obolokon24.com/2017/03/thakurgaon_7.html
চোখ বেঁধে গুলি করে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়
সফিকুল ইসলাম শিল্পী, রানীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ শহীদ নফিজ উদ্দিন আহমেদ স্যার আমাদের গর্ব। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে রানিশংকৈল উপজেলার প্রথম শহীদ তিনিই। ১৯৭১ সালের শুরু থেকেই তিনি এ উপজেলায় স্বাধীনতার স্বপক্ষে মত গঠন শুরু করেন। ১০ মে, ১৯৭১ সারাদিন তিনি স্থানীয় যুবকদের প্রশিক্ষণ দেন, সংগঠিত করেন। একাধারে তিনি ছিলেন শিক্ষা অনুরাগী, সামাজ মনস্ক ও সচেতন একজন ন্যায় পরায়ন মানুষ। ৬০ দশকেই তিনি রানিশংকৈলে প্রগতি ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন এবং রানিশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় পুনঃ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। রানিশংকৈলে মুক্তি যুদ্ধ সংগ্রাম পরিষদ প্রতিষ্ঠা হয় তাঁর হাত দিয়েই। এছাড়া আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগও নেন এ মহান পুরুষ।নফিজ উদ্দিন আহমেদের বড় মেয়ে লিলি বলেন- একদিন তাঁর হাতে প্রতিষ্ঠিত প্রিয় প্রগতি ক্লাবের কাজ শেষে বাড়ী ফিরে আসেন। ভোর রাতে স্থানীয় দালাল রাজাকারদের সহযোগিতায় তাঁকে পাকিস্তানী আর্মীরা গ্রেফতার করে এবং পীরগঞ্জ থানায় ধরে নিয়ে যায়। দুদিন তার ভাই, সন্তান, জায়া সবাই স্থানীয় পেশকার এর কাছে নানাভাবে কান্নাকাটি করেও তাঁকে ছেড়ে দেয়নি। ১৯৭১- এর ১২ মে দিনাজপুরের কাঞ্চন নদির তীরে পাষন্ড পাকিস্তানি দোষররা তাঁকে চোখ বেঁধে গুলি করে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়। জানা যায়- তৎকালীন পাকিস্তানী দারোগা আব্দুর রশিদ বাড়িতে এসে শহীদ নফিজ উদ্দিন আহমেদের মৃত সংবাদটি দিয়ে যান। ১৯৩৫ সালের ১০ আগস্ট দিনাজপুর জেলার রানিশংকৈল থানার সহোদর গ্রামে শহীদ নফিজ উদ্দিন আহমেদের জন্ম। ১৯৫২ সালের উত্তাল ভাষা আন্দোলনে তিনি ছিলেন অগ্র সৈনিক। এই বছর তিনি কামারপাড়া পি আর ইন্সটিটিউশন, গাইবান্ধা হতে এস,এস,সি পাশ করেন। ১৯৫৫ সালে এস এন কলেজ দিনাজপুর হতে এইচ,এস,সি এবং ঐ কলেজ হতেই ১৯৬৫ সালে বি,এ পাশ করেন। তিনি রানিশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন ১৯৫৫ সালে এবং ১৯৫৬ সাল পর্যস্ত আর ১৩ জানুয়ারি ১৯৫৮ হতে ১ অক্টোবর ১৯৫৮ পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।