সেচ নীতিমালা নেই,পীরগঞ্জে সেচ মুল্য নির্ধারনে অরাজকতা

মামুনুররশিদ মেরাজুল,নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

পীরগঞ্জে ইরি-বোরো ধানের জমিতে স্থানীয় পর্যায়ে পানি সেচ মুল্য নির্ধারন নিয়ে অরাজকতা চলছে। নির্দিষ্ট সেচ নীতিমালার অভাবে একর প্রতি মোটা অংকের টাকা গুনছে কৃষকরা। উপজেলা সেচ কমিটির সদস্য সচিবের স্বেচ্ছাচারিতা আর উৎকোচ বাণিজ্যের কারণে অসহায় পড়েছে কৃষক। ফলে কৃষি বিভাগের ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, এবারে ইরি-বোরো মওসুমে ২২ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে ধানের চাষ হবে। গতবছরের তুলনায় এবারে প্রায় ৬’শ ৫০ হেক্টর জমিতে কম চাষ হচ্ছে। কৃষি বিভাগ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের ৩০৮টি গ্রামকে ৩৬ টি ব্লকে ভাগ করে কৃষি সেবা দিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমীর চন্দ্র ঘোষ বলেন, মাঠপর্যায়ে আমাদের যথেষ্ট নজরদারী হলেও এবারে ধান চাষ কমেছে। কৃষকদের কাছ থেকে জেনেছি, ইরি-বোরোর জমিতে পানিসেচের মুল্য পরিশোধ করা নিয়েও তারা হিসাব-নিকাশ কষছেন। তিনি আরও জানান, প্রতি একর ইরি-বোরো ধান চাষে প্রায় ২ হাজার টাকা মুল্যের পানি সেচ দিতে হয়। যা হেক্টর প্রতি ৫ হাজার টাকা নির্ধারন করা হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ইরি-বোরো ধান চাষে পানি সেচ নিয়ে গভীর ও অগভীর নলকুপ মালিকদের মাঝে অনৈতিক প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। একর প্রতি পানি সেচ মুল্য ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে। এবারে বেশকিছু এলাকায় গভীর-অগভীর নলকুপ মালিকরা পানি সেচ মুল্য গতবছরের চেয়ে ১ হাজার টাকা বৃদ্ধি করেছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় ভুক্তভোগী কৃষকরা উপজেলা সেচ কমিটির সদস্য সচিব বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এর সেচ বিভাগ পীরগঞ্জ ইউনিটের উপ-সহকারী প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ করলেও সুরাহা পাচ্ছেন না। ওই কর্মকর্তা উল্টো কৃষকদের ধমক দিয়ে বলছেন, ধানের মুল্য বাড়লে, পানি সেচের মুল্যও বাড়বে। বিশ্বস্ত সুত্র জানিয়েছে, সেচ যন্ত্র মালিকদের সাথে ওই কর্মকর্তার গোপন আতাঁতের কারণে গভীর নলকুপে ম্যানেজার কিংবা মালিকানা নির্ধারনসহ পানি সেচের ক্ষেত্রে নানান ঝামেলা চলছে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছর প্রতি একর জমিতে পানি সেচ মুল্য গভীর নলকুপ মালিকরা ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা নিতো। এবারে তা বেড়ে সাড়ে ৪ হাজার টাকা করা হয়েছে। উপজেলার ভেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের আর্শ্বিনারপাড়া গ্রামের গভীর নলকুপ মালিক নওফল মিয়া এবারে একর প্রতি ১ হাজার ২’শ টাকা বাড়িয়ে ৪ হাজার ২’শ টাকা নির্ধারন করেছেন। এ ব্যাপারে ওই ইউনিয়নের করঞ্জাগাড়ীর বিজয়, সুবাশ, পানবাড়ীর সাদেক মিয়া বলেন, পানি স্যাচের মুল্য এতো বেশী হলে আর ধানের আবাদই করা যাবা নায়। বাজারোত ধানের দাম নাই। আবাদোত খালি খরচ! কিষাণপাট, সার, ওষুধ, পরিচর্যা করতেই অনেক খরচ। হামরা শুনছি স্যাচের পানির জন্যে সরকার ২০ শতাংশ করি ট্যাকা ভুর্তুতি দিছে। সে ট্যাকা তো চেখে দেখি না।
উপজেলা সেচ কমিটির সদস্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমীর চন্দ্র ঘোষ বলেন, এবারের সেচ কমিটির সভায় ইরি-বোরো চাষে পানি সেচের মুল্য একরে লালমাটির জন্য সাড়ে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা এবং সাদা মাটির জন্য ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা করার সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশটি এখনো কার্যকর হয়নি। তিনি আরও বলেন, সরকার সেচের জন্য মোট বিদ্যুৎ বিলের উপর ২০ শতাংশ হারে কৃষকদেরকে ভুর্তুকি দিচ্ছে। উপজেলা সেচ কমিটির সদস্য সচিব ও সেচ বিভাগ পীরগঞ্জ ইউনিটের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সৌরভ বিশ্বাসের কাছে একাধিকবার মোবাইল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। অফিসেও তাকে পাওয়া যায়নি। ওই কমিটির সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মন্ডলকে অফিসে এবং মোবাইলে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 2845668099016198903

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item