চিলাহাটী-হলদিবাড়ি সীমান্তে রেলপথ পরিদর্শনে ভারতীয় হাই কমিশনারের সচিব ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর

এআই পলাশ, চিলাহাটি, নীলফামারী প্রতিনিধি ঃ


নীলফামারীর চিলাহাটি হয়ে ভারতের হলদিবাড়ি পর্যন্ত পুণরায় রেল যোগাযোগ চালুর লক্ষ্যে বাংলাদেশের চিলাহাটি সীমান্ত পরিদর্শন করেছে দুই দেশের প্রতিনিধি দল। আশা করা হচ্ছে আগামী ২০১৮ সালের জুন মাসে উভয় দেশের রেলপথ জোড়া লাগবে।

আজ শনিবার সকাল ১১টার দিকে চিলাহাটি সীমান্ত পরিদর্শন করেন বাংলাদেশস্থ ভারতীয় হাই কমিশনারের ফাষ্ট সেক্রেটারী দিব্বাঞ্জন রায় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ট্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক কালিকান্ত ঘোষ। এ সময় ভারতের হলদীবাড়ি সীমান্তে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ভারতীয় পূর্ব রেল (এনজিপি) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার দেব ও শাখা প্রকৌশলী আর,কে সিং। এ ছাড়া প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ছিলেন উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বিএসএফ ও বিজিবির সদস্যগণ।

পরিদর্শন শেষে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের ভারতীয় রেলওয়ের (এনজিপি সেকশন) নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর দে জানান এ বছরের জুন মাস নাগাদ হলদিবাড়ি হতে বাংলাদেশের সীমান্ত ডাঙ্গাপাড়া পর্যন্ত ২ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার রেল পথের নির্মান কাজ শেষ করা হবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের অংশের রেলপথ দ্রুত স্থাপনের বিষয়ে ভারতীয় প্রতিনিধি দল তাগাদা প্রদান করেন।

বাংলাদেশস্থ ভারতীয় হাই কমিশনারের ফাষ্ট সেক্রেটারী দিব্বাঞ্জন রায় বলেন, চিলাহাটি-হলদিবাড়ি সীমান্ত দিয়ে দুই দেশের মধ্যে রেল চলাচল উভয় দেশের মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি। সেটি শীঘ্রই পুরণ হতে চলেছে। এতে উভয় দেশের মানুষের মধ্যে বন্ধন আরো দৃঢ় হবে। তিনি উল্লেখ করে বলেন ১৯৪৭ ও ১৯৬৫ সালের আগে রেলওয়ের দুই দেশের পুরাতন যে সব লিং গুলো বন্ধ রয়েছে তা চালু করণে দুই দেশ একমত হয়েছে। এরমধ্যে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যোগাযোগের ৩টি লিং  চালু করা হয়েছে। আরেকটির  কাজ চলছে। এবার চিলাহাটি - হলদিবাড়ির রেলপথ স্থাপন হলে ৫টি লিং চালু হবে। এতে  রেলরুটে বাংলাদেশ-ভারতে পূর্বে যে অবস্থানে ছিল সেটি পুনরায় ফিরে আসবে।

এ সময় বাংলাদেশ রেলওয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর কালিকান্তি ঘোষ জানান, বাংলাদেশের চিলাহাটি রেলস্টেশন হতে ভারতীয় সীমান্ত পর্যন্ত ৭ দশমিক ৫০ কিলোমিটার রেলপথ স্থাপনের পর দুই দেশের রেলপথ জোড়া লাগানো হবে। এ জন্য বাংলাদেশ রেলের পক্ষে এই কাজের জন্য টেন্ডার আহবানের প্রস্তুতি চলছে। টেন্ডার হয়ে গেলে চলতি বছরের জুন মাস হতে কাজ শুরু করে  ২০১৮ সালের জুনে কাজ শেষ করা হবে। আশা করা হচ্ছে ওই সময় উভয় দেশের রেলপথ জোড়া লাগবে। এই কাজ সম্পন্ন হলে এই পথে ভারতের হলদিবাড়ি ও বাংলাদেশের চিলাহাটির মধ্যে সরাসরি  ট্রেন যোগাযোগ চালু হবে।

সূত্রমতে, ১৯৬৫ সালের আগে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নের চিলাহাটি সীমান্তের ডাঙ্গাপাড়া নামক স্থানের ৭৮২ মেইন পিলার সংলগ্ন এলাকা দিয়ে রেল যোগাযোগ ছিল বাংলাদেশের চিলাহাটি ও  ভারতের হলদিবাড়ির মধ্যে। সেটি বন্ধ হওয়ার পর ভারতের হলদিবাড়ি থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত এবং চিলাহাটি থেকে ভারতে সীমান্ত পর্যন্ত রেল পথের অবকাঠামো পরিত্যক্ত হয়।

চিলাহাটির প্রবীন ব্যাক্তিরা জানায় ভারত বাংলাদেশের চিলাহাটিতে  শেষবার ট্রেনের বাঁশি শোনা গিয়েছিল ১৯৬৫ সালে। সেই থেকে রেলের চাকা হলদিবাড়ির থেকে সীমান্ত পেরিয়ে আর বাংলাদেশের চিলাহাটিতে ঢোকেনি। অবশেষে উভয় দেশের সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও বাংলাদেশ সরকার।

প্রসঙ্গতঃ বাংলাদেশের দেশের বৃহত্তম নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানাটি অসম বেঙ্গল রেলওয়ের উদ্যোগে ১৮৭০ সালে স্থাপন করা  হয়েছিল। ওই সময় ভারতের শিলিগুড়ি থেকে ছেড়ে হলদিবাড়ি হয়ে বাংলাদেশের নীলফামারীর চিলাহাটি ও সৈয়দপুর এবং দর্শনা দিয়ে দাজিলিং মেইল ট্রেনটি কলকাতা চলাচল করতো। এ ছাড়া চিলাহাটি থেকে হলদিবাড়ি ও জলপাইগুড়ি পর্যন্ত চলাচল করতো একটি পাসপোর্ট ট্রেন। চালু ছিল স্থলবন্দর ও চেকপোস্ট। কিন্তু পাক-ভারত যুদ্ধের পর চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথ ও স্থলবন্দর বন্ধ হয়ে যায়। এরপর উভয় দেশ স্থাপিত রেলপথ ১৯৬৫ সালে উঠিয়ে ফেলে। বর্তমানে উভয় দেশের রেললাইন না থাকলেও রয়েছে রেলপথের অবকাঠামো।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 428464082571364549

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item