এমপি লিটন হত্যার সমন্বয়ক চন্দন গা ঢাকা দিলেও অপর সমন্বয়ক সুবল পুলিশ নজরদারীতে

নুরুল আলম ডাকুয়া, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:

লিটন হত্যার অন্যতম সমন্বয়ক চন্দন গাঁ ঢাকা দিলেও অপর সমন্বয়ক সুবল পুলিশ নজরদারীতে রয়েছে।
    এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যার পর অন্যতম সমন্বয়ক চন্দন গাঁ ঢাকা দেয়। গত ২১ শে ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী ও অর্থ যোগানদাতা সাবেক এমপি কর্ণেল (অব:) আব্দুল কাদের খান গ্রেফতার হন। পুলিশ তাকে ১০ দিনের রিমান্ড নেয়। রিমান্ড শেষ না হলেও গত শনিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী শেষে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। মামলার তদন্তকরী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবু হায়দার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, ভবিষ্যতে রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার উচ্চাভিলাষে এমপি লিটনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন কাদের খান। এছাড়া হত্যার সব আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এদিকে আগামী ১৫/১৬ দিনের মধ্যে কাদের খানকে প্রধান আসামী করে এমপি লিটন হত্যার চার্জশীট প্রদান করা হবে বলে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক জানান।
এমপি লিটন হত্যায় জড়িত গ্রেফতারকৃত কিলার মেহেদী হাসান, শামীম মন্ডল, শাহীন, রানা ও খুনের সহযোগি কাদের খানের গাড়ি চালক আব্দুল হান্নানের স্বীকারোক্তিতে অন্যতম সমন্বয়ক চন্দন কুমারের নাম উঠে আসে। উপজেলা আ’লীগের দপ্তর সম্পাদক বামনডাঙ্গার মনমথ গ্রামের কাঠ মিস্ত্রি সুশীল  চন্দ্রের ছেলে চন্দনকে পুলিশ খুঁজলে সে গাঁ ঢাকা দেয়।
    এমপি লিটন হত্যার অপর সমন্বয়ক চন্দনের ভগ্নিপতি রংপুর সেবা ক্লিনিকে চিকিৎসারত মনমথ রায়পাড়া এলাকার মৃত জুগি চন্দ্র রায়ের ছেলে কাসাই সুবল চন্দ্র পুলিশের নজরদারীতে রয়েছে। 
    আরো অস্ত্রের সন্ধ্যানে তল্লাশিঃ সুন্দরগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ আতিয়ার রহমান জানান, কাদের খানের স্বীকারোক্তি অনুসরণ করে আরও একটি পিস্তুলের সন্ধানে তার বাড়িতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তল্লাশি অভিযান চলছে।
বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক নাদিম হোসেন বলেন, উপজেলা আ’লীগের দপ্তর সম্পাদক চন্দন কিছু সংখ্যক রাজনৈতিক পরিচয়ধারী সন্ত্রাসীর সাথে দীর্ঘদিন থেকে মিলে মিশে বামনডাঙ্গা হলমোড়ের রেলগেট সংলগ্ন গণির চায়ের দোকান অদুর জাসদ অফিসে এমপি লিটন বিরোধী কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছিল।
কাদের খানের পারিবারিক পরিচয়ঃ আব্দুল কাদের খান ৫ ভাই ৫ বোনের মধ্যে তৃতীয়। তার বাবা মৃত নয়ন খান ছিলেন এলাকায় প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি। তার স্ত্রী নাছিমা বেগম একজন গাইনী বিশেষঞ্জ। একমাত্র ছেলে তানিম ঢাকা মেডিকেল কলেজে শেষ বর্ষে অধ্যয়নরত।
রাজনীতিতে পর্দাপনঃ চাকুরি থেকে অবসর নেয়ার পর কাদের খান ২০০৪ সালে জাতীয় (এ) রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এসময় এলাকায় তিনি নিজ অর্থে বিভিন্ন উন্নয়ন মুলক কাজ করে। পরে ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের শরীক দল হিসেবে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে সুন্দরগঞ্জ আসনে এমপি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী একই দলের মনোনয়নে ওই আসনে নির্বাচনে অংশ নিলেও এমপি নির্বাচিত হন মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন।
কাদের খানের বাড়ির সামনে উৎসুক জনতার ভিড়ঃ গতকাল রোববার দুপুরে কাদের খানের ছাপড়হাটীস্থ গ্রামের বাড়িতে  গিয়ে দেখা যায় শতশত উৎসুক নারী-পুরুষ ভিড় করছে। পরে পুলিশ গিয়ে তাদেরকে ছত্র ভঙ্গ করে দেয়।
স্বজনদের প্রতি কাদের খানের আকুতিঃ এমপি লিটন হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী, কিলাদের অর্থ যোগানদাতা ও কোর্টে স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দী প্রদানকারী আসামী কর্ণেল (অব:) ডাক্তার আব্দুল  কাদের খান স্বজনদের কাছে আকুতি করে বলেন- তোমরা আমাকে মাপ করে দাও, আমি আর বাঁচবো না, তোমরা আমাকে বিদায় দাও। গতকাল রোববার কাদের খানের গ্রামের বাড়ি ছাপড়াহাটীর খানপাড়ায় গেলে তার ছোট ভাই ইউসুফ খানের স্ত্রী ফিরোজা বেগম কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে ভাসুরের এ আকুতির কথা বলেন। তিনি আরও জানান গত বুধবার ২২ ফেব্রুয়ারী রাতে কাদের খানকে গ্রামের বাড়িতে নেয়া হলে তিনি (কাদের খান) প্রশাসনকে উদ্দেশ্যে করে বলেন স্বজনদের কাউকে আমার এ অপকর্মের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন না, তারা কেউ কিছু জানে না। এক প্রশ্নের জবাবে ফিরোজা বেগম বলেন, আমরা বিশ্বাস করতে পারিনি তিনি  (কাদের খান) এ কাজ করতে পারেন। তিনি খুব সহজ-সরল মানুষ। 

পুরোনো সংবাদ

নিবিড়-অবলোকন 3744017326726442941

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item