পীরগঞ্জে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগঃ ৪৮টি পদ শুন্য জোড়াতালি দিয়ে চলছে কার্যক্রম

মামুনুর রশিদ মেরাজুল,পীরগঞ্জ (রংপুর) থেকে ঃ

পীরগঞ্জে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের অর্ধশত পদ শুন্য থাকায় কার্যক্রম জোড়াতালি দিয়ে চলছে। বিভাগটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাঠপর্যায়ে কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে পদ শুন্য থাকায় এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পৌনে ২’শ পদের মধ্যে অর্ধ শত পদ শুন্য রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের হিসাব অনুযায়ী পীরগঞ্জ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের জনসংখ্যা রয়েছে ৪ লাখ ২৪ হাজার ৪১৪ জন। এই বিশাল জনগোষ্ঠীর মাঝে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান, জন্ম নিয়ন্ত্রন, ইপিআই টিকাদান কেন্দ্রে শিশুদের সেবা প্রদানসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে হয়। ওইসব কাজ করতে মাঠপর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল না থাকায় প্রতিটি ইউনিয়নে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে নিয়মিত রোগীরা সেবা নিতে গেলেও বিভিন্ন কারণে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, গ্রাম পর্যায়ে জন্ম নিয়ন্ত্রন সংক্রান্ত কার্যক্রমও কিছুটা হলেও ঝিমিয়ে পড়েছে। সাধারন মানুষের মাঝে বাল্য বিয়ে-বহু বিবাহ ও অধিক সন্তান গ্রহনের কুফল, জনসংখ্যার বিষ্ফোরন, স্বাস্থ্যহানি সংক্রান্ত বিষয়ের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করতে না পারায় সাধারন মানুষের অজ্ঞতার কারণে হু হু করে জনসংখ্যা বেড়েই চলছে।
স্থায়ী, অস্থায়ী ও দীর্ঘস্থায়ী এই ৩ পদ্ধতিতে জন্ম নিয়ন্ত্রন করা হয় বলে জানা গেছে। স্থায়ী পদ্ধতির মধ্যে ভ্যাসেকটমি (পুরুষ বন্ধ্যাকরণ), অস্থায়ী পদ্ধতিতে ট্যাবলেট-কনডম-ইনজেকশন দিয়ে টিউব্যাকটমি (মহিলা বন্ধ্যাকরণ) এবং দীর্ঘস্থায়ী পদ্ধতিতে ইমপ্ল্যান (৩ বছরের জন্য বাম হাতের বাহুতে ম্যাচের কাঠির মতো শলাকা ঢুকে দিয়ে) এর মাধ্যমে জন্ম নিয়ন্ত্রন করা হয়ে থাকে। কিন্তু গ্রামের অধিকাংশ নারী-পুরুষ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উল্লেখিত জন্ম নিয়ন্ত্রনের পদ্ধতি সম্পর্কে খুব কমই জানে না। প্রচার-প্রচারনা এবং জনবলের অভাবে মাঠপর্যায়ে বিভাগটির সেবা ঝিমিয়ে পড়েছে। সরকারী স্বাস্থ্য সেবাখাত সম্পর্কেও মানুষের মাঝে ইতিবাচক কোন প্রভাব পড়ছে না। টাকার বিনিময়ে গ্রামপর্যায়ে পল্লী চিকিৎসক, বিভিন্ন ব্যক্তি ও এনজিওরাই স্বাস্থ্য সেবা খাতে এগিয়ে আসছে। তবে বিভাগটি শিশুদের ক্ষেত্রে নিয়মিত টিকাদান কর্মসুচী, কৃমিনাশক, গোদ রোগ, কালা জ্বরের ট্যাবলেট বিতরন করছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রগুলোতে মাসে যেসব ওষুধ দেয়া হয়, সেক্ষেত্রেও নেতিবাচক কথা রয়েছে সাধারন মানুষের মাঝে। নিম্ন আয়ের রোগীরা ওইসব কেন্দ্রে গিয়ে ওষুধ না পেয়ে অহরহ ফিরে যাচ্ছে বলে ভুক্তভোগীদের সুত্রে জানা গেছে।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিস সুত্রে জানা গেছে, তাদের অফিস ও মাঠপর্যায়ে মোট ১’শ ৭৬ টি পদ রয়েছে। এর মধ্যে শুন্য পদই রয়েছে ৪৯ টি। ফলে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে বিভাগটি হিমশিম খাচ্ছে। শুন্য পদগুলো হলো ১ জন সহকারী কর্মকর্তা, মেডিকেল অফিসার ১ জন, সিনিয়র অফিসার ১ জন, উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) ১ জন, ফার্মাসিষ্ট ১১ জন, ভিজিটর (পরিবার কল্যান পরিদর্শিকা) ২ জন, এফপিআই (পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক) ২ জন, এফ.ডব্লিউ.এ (মহিলা) ১৮ জন, আয়া ৪ জন, এমএলএসএস ৭ জন। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নাজমুল হুদা বলেন- বিগত চার দলীয় জোটের সরকারের সময় মাঠপর্যায়ে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ নিষ্ক্রিয় থাকায় জনসংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। লোকবলেন অভাবে এখানে দায়িত্ব পালনে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

পুরোনো সংবাদ

স্বাস্থ্য-চিকিৎসা 7333314265511859652

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item