সুন্দরগঞ্জে দুর্বৃত্ত কর্তৃক এমপি লিটনকে হত্যার প্রতিবাদে হরতাল, অবরোধ ও বিক্ষোভ


নুরুল আলম ডাকুয়া, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি ::
২৯ গাইবান্ধার-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা আ’লীগ সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে কিছু সংখ্যক দুর্বৃত্ত সর্বানন্দ ইউনিয়নের উত্তর সাহাবাজ (মাস্টারপাড়াস্থ) নিজ বাড়িতে ঢুকে গুলি করে হত্যা করার প্রতিবাদে গতকাল রবিবার সকাল ৬টা থেকে দিনব্যাপী হরতাল, অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল ও ট্রেন আটকিয়ে রেল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় বিক্ষুদ্ধ জনতা। এছাড়া তারা কালো ব্যাচ ধারণ করে পথ সভা অব্যাহত রেখেছে। হরতাল  চলাকালে উপজেলার সর্বত্র হাট-বাজারের দোকান-পাট, মিল-কারখানা, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমা বন্ধ ছিল। সর্বত্রই কালো পতাকা ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে শোক পালন করছেন তারা। হরতাল চলাকালে কোন প্রকার যানবাহন এমনকি দু-পাল্লার কোন পরিবহন ছেড়ে যায়নি। এতে করে উপজেলার সাথে দেশের সকল প্রকার যান যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়ে। বিক্ষুদ্ধ জনতা সকাল থেকে বামনডাঙ্গা ষ্টেশনে লালমনিরহাট-শান্তাহারগামী ট্রেনটি অবরোধ করে রেলযোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
যেভাবে গুলি করে এমপিকে হত্যা করা হলোঃ  বিকাল থেকে এমপি লিটনের বাহির উঠানে ক্রিকেট খেলারত সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সাইফুল ইসলাম জানায়, দুটি মোটর সাইকেল যোগে আগত ৫ জন বহিরাগত যুবক এমপি লিটনের সাথে দেখার করার অজুহাতে বিকাল ৪টা থেকে তার তার বাড়ির বাহির উঠান ও সামনের রেল লাইন দিয়ে ঘোরাফেরা করছিল। কিন্তু তাদের খেলা চলাকালে যুবকরা এমপি লিটনের সাথে দেখা করার জন্য কাল ক্ষেপন করে। আস্তে আস্তে সন্ধ্যা ঘুনিয়ে আসলে ওই যুবকরা ক্রিকেট খেলোয়াদের খেলা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য শাসায়। তারা যুবকদের শাসানোয় ভয় না পেয়ে খোলা অব্যাহত রাখার এক পর্যায়ে দেখতে পায় রেল লাইনে অবস্থানরত বাহিরাগত দু-যুবক মোবাইল ফোনে কার সাথে যেন কথা  বলছিল। কথা বলা শেষে যুবদ্বয় এমপি লিটনের বাহির উঠানে অবস্থান নিলে পূর্ব থেকে অবস্থানরত ৩ যুবক এমপিকে কথা বলার অজুহাতে তার অতিথি কক্ষে ডেকে নিয়ে আকস্মিক ভাবে পরপর ৫ রাউন্ড গুলি ছুড়ে এবং দ্রুত মোটর সাইকেল যোগে স্থান ত্যাগ করে।
এমপির বাড়ির সামন দিয়ে চলমান রেল লাইনে  কর্মরত শ্রমিক মাহির ও আনারুল ইসলাম জানায়, গুলির শব্দ পেয়ে তারা ভিত হয়ে পড়েন। তারা দেখতে পায় এমপির বাড়ি হতে বাহির হয়ে এক মোটর সাইকেলে মুখোসধারী ৩ যুবক দ্রুত তাদের পাশ দিয়ে কোমড়ে পিস্তুল ঝুলিয়ে দ্রুত চলে যায়।

গুলির শব্দ পেয়ে কাজের লোক ইউসুফ আলী ও এমপির সহর্ধমীনী সৈয়দা খুরশিদ জাহান স্মৃতি দৌড়ে অতিথি কক্ষে গিয়ে এমপিকে গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। পরে তারা আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে  দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন।    

এদিকে গত শনিবার রাতেই পুলিশের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, পুলিশ সুপার আশরাফুল ইসলামসহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার পর থেকে এমপি লিটনের বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করে অতিথি কক্ষটি  ( যে কক্ষে এমপিকে গুলি করা হয়) কর্ডন করে রেখেছে। 

অপর দিকে থানা অফিসার ইনচার্জ আতিয়ার রহমান জানান, গত শনিবার রাতে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি যৌথ ষাড়াষি অভিযান চালিয়ে হত্যা কান্ডের সাথে  জড়িত থাকার সন্দেহে ১৫ জনকে আটক করেছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে।

পারিবারিক সুত্র জানান, গতকাল রবিবার এমপি লিটনের লাশ ময়না তদন্ত শেষে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হিমঘর থেকে নিয়ে রংপুর পুলিশ লাইন মাঠে প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে হেলিকপ্টার যোগে ঢাকায় নিয়ে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। এমপিকে হত্যার ঘটনায় সুন্দরগঞ্জ চেয়ারম্যান এ্যাসোসিয়েশন এক সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানানোসহ আজ সোমবার সকল ইউপি কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলণ ও মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুন্দরগঞ্জ চেয়ারম্যান এ্যাসোসিশনের আহবায়ক আমিনুল ইসলাম লেবু। অন্যদিকে পৌর আ’লীগ ৩ দিনের শোকসহ বিভিন্ন কর্মসুচির ঘোষণা দেয়।


উপজেলার সর্বত্রই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি  টহল অব্যাহত রাখে।

পুরোনো সংবাদ

নিবিড়-অবলোকন 7578687368904418497

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item