ফ্যাকাশে কুয়াশা আর হিমেল হাওয়া ঠাকুরগাঁওয়ে!

সফিকুল ইসলাম শিল্পী,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :

কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় তীব্র শীত এঁটে সেটে  সেটে বসেছে  হিমালয়ের পাদদেশের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।
তীব্র শীতের ছোবলে বিপাকে পড়েছে সকল বয়স ও পেশার মানুষগুলো। তীব্র শীত উপেক্ষা করে কাজের সন্ধানে বেরিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন কর্মজীবীরাও। দরিদ্র মানুষ কাজে যেতে ভয় পেয়েও দারিদ্রকে ফাঁকি দিতে পারেনি,তাই তারা খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন প্রতি দিনের মত।
নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন কম দামে শীতবস্ত্র কিনতে হকার্স ও পুরাতন কাপড়ের মার্কেটে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। সুযোগ পেয়ে বিক্রেতারা অতিরিক্ত দাম হাঁকিয়ে অধিক মুনাফা করছেন বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।
ঘন কুয়াশায় হরিপুর,রানীশংকৈল,বালিয়াডাঙ্গি,পীরগন্ঞ ও ঠা্কুরগাঁও শহরে অনেক বেলা অবধি রাস্তায় লোক বের হয়নি। যানবাহন কমে গেছে। যেসব যানবাহন চলাচল করেছে সেগুলো চলেছে হেডলাইট জ্বালিয়ে।
শীতের আগমন ঘটেছে। চারপাশে রুক্ষতার আঁচড় জানান দিচ্ছে তার আগমনী বার্তা। এই শীতের সঙ্গী হতে গরম কাপড়ের দেখা মিলছে বাজারে। শীত মানেই নানা স্বাদের খাবার আর তার সাথে ফ্যাশনেবল গরম কাপড়। যার মাঝে কান টুপি, হাত মোজা আর মাফলার না হলেই নয়। শীতে রোগ খুব দ্রুত ছড়ায়। তাই এর থেকে মুক্তি পেতে চাই সুরক্ষা। আর এই সুরক্ষার বলয় থাকে আমাদের হাতের কাছেই। যার অপর নাম গরম কাপড়। তবে গরম কাপড় কেবল গরম আর আরাম দায়ক হলেই হবে না। একে হতে হবে ফ্যাশনেবলু।
ফ্যাকাশে কুয়াশা আর হিমেল হাওয়া বইতে থাকায় ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষজন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অনেকে প্রচন্ড ঠান্ডা হতে আত্মরক্ষার্থে বাড়ির উঠোনে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা চালাচ্ছে।
তীব্র শীতে বাড়ছে ডায়রিয়া নিমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ শীতজনীত বিভিন্ন রোগ। সবচেয়ে বেশি কাহিল হচ্ছে শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে  বেশ শিশু  ভর্তি হয়েছে এ কারণে শিশু ও বৃদ্ধরা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
এদিকে শীতল বাতাস আর কুয়াশা থাকায় যানবাহন গুলো হেড লাইট জ্বালিয়ে রাস্তায় চলাচল করছে।
এ অঞ্চল বন্যা-জলোচ্ছ্বাস এর মত প্রাকৃতিক দূর্যোগ মুক্ত হলেও শীত এ জনপদের অভাবী লোকজনের জীবনে দূর্যোগ হিসেবেই নেমে আসে প্রতি বছর। ফলে উত্তর জনপদের ছিন্নমূল, অভাবী ও দুস্থ  মানুষেরা সমাজের বিত্তবানদের দ্বারস্থ হয় প্রতি বছর একখানা কম্বল অথবা পুরাতন শীত বস্ত্রের জন্য। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা এবং স্থানীয় কিছু দাতব্য ও সমাজ সেবা মূলক সংগঠন শীত কবলিত মানুষের সাহায্যার্থে এগিয়ে এলেও তাদের দানকৃত শীতবস্ত্র চাহিদার তুলনায় একান্তই অপ্রতুল হওয়ায় চাওয়া-পাওয়ার হিসেবের গড়মিল থেকেই যায় অভাবী মানুষের জীবনে।
তবুও মানুষ শীত মোকাবেলার তাগিদে কষ্ট করে হলেও কিছু টাকা পয়সা জুটিয়ে একখানা পুরাতন শীতবস্ত্র কেনার জন্য ভীড় করে পুরাতন কাপড়ের দোকানগুলোতে। কিন্তু অতীতের তুলনায় এবার পুরাতন শীতবস্ত্রের দামও বেশ চড়া। তাই কেউ কেউ কিনতে পারলেও অনেকেই দাম শুনেই ফিরে আসছে বিফল মনরথে। ধীরে ধীরে পুরাতন শীতবস্ত্রও যেন অভাবী মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
একটা সময় ছিল যখন মানুষ কাল টুপি পরতো শুধুমাত্র শীত নিবারণের জন্য। কিন্তু এখন কেবল শীত না এটি আপনার ব্যক্তিত্ব কেউ ফুটিয়ে তোলে নানাভাবে। বিভিন্ন রকমের কান টুপি আছে বাজারে। মাস্কি টুপি, মাফলার টুপি, ক্যাপের মতো টুপি আর ঝোলা টুপি। শীত নিবারণের ক্ষেত্রে এগুলো হয়ে থাকে উলের তৈরি। এছাড়াও পুরানো ফ্যাশনের টুপির ভেতরে মোটা উলের টুপি, একসঙ্গে মুখ ও মাথা ঢাকার টুপিও আছে বাজারে। কোন টুপিতে মানাবে বেশি, মুখের গড়ন ও ত্বকের রংয়ের সঙ্গে মিলিয়ে কোন টুপি পরলে দেখতে লাগবে ভালো  যাদের চুল ছোট তারা সম্পূর্ণ চুল টুপির ভেতর রাখতে পারেন। অল্প বড় চুল হলে পাশ দিয়েও চুল বের করে রাখা যায়।
রং নির্বাচন করা উচিত যা সব ধরনের পোশাকের সঙ্গেই হবে মানিয়ে। যেমন কালো, খয়েরি, নীল রংয়ের যে কোনো টুপি মানিয়ে যাবে যেকোনো পোশাকের সঙ্গে। উৎসবমুখর পরিবেশে লাল, সাদা অথবা সবুজ রংয়ের টুপি পরা যেতে পারে। কারো উজ্জ্বল রং পছন্দ হলে হলুদ বা নিওন টুপিও বেছে নিতে পারেন। সবসময় এমন টুপি বেছে নেওয়া উচিত যা একটু ঢিলে হবে। কারণ টুপিতে ব্যবহৃত ইলাস্টিক কপালের কাছে আঁটসাঁট হয়ে থাকলে তা অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি কপালে দাগও ফেলতে পারে।
অতিরিক্ত ঠান্ডায় হাত ব্যথা শুরু করে এবং তার সাথে সাথে হাতে রক্ত চলাচল ও ঠিতমতো করে না। ফলে হাত অবশ থেকে শুরু করে নানা রকম চর্মোরোগ ও হতে পারে। তাই শীত থেকে নিজেকে বাঁচানোর আরেকটি অস্ত্র হচ্ছে হাত মোজা। যদিও গরম হোক বা শীত সব সময়ের সঙ্গী হয়ে থাকে পা মোজা তবে এই শীতের আরেক সঙ্গী হচ্ছে হাত মোজা। উলের তৈরি হওয়ায় এর মাধ্যমে ঠান্ডা হাতের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে ঠান্ডা থেকে হাত রক্ষা পায়।
ধনী পরিবার গুলোতে ছেলে মেয়েদের শীতের ফ্যাশনে আরেকটি সঙ্গী হচ্ছে মাফলার। তরুণ কিংবা তরুণী সবার পছন্দের তালিকায় আছে এটি। উলের নেট মাফলার থেকে শুরু করে এন্ডি কটন এবং পশমি মাফলারসহ নানা রঙের চেক মাফলার পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। এছাড়া মাফলারে আছে দুটি ধরন। শর্ট এবং লং। মেয়েদের মাফলারগুলো কিছুটা শর্ট হয়ে থাকে ছেলেদের তুলনায়। তাছাড়া উলের চেইল এর মাফলারো খুব গ্রহণযোগ্য বর্তমানে। এর সাথে আছে সুতির মাফলারও।

পুরোনো সংবাদ

ঠাকুরগাঁও 1218008538176698937

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item