কিশোরগঞ্জে তিনজনের ভাগ্যে জোটেনি বয়স্ক ও বিধবা ভাতার কার্ড

মোঃ শামীম হোসেন বাবু,কিশোরগঞ্জ,নীলফামারী

 কেউ নব্বই ছুয়েছেন। কেউ আশিতে পা দিয়েছেন। অসহায়  এই বয়োজেষ্ঠ মানুষগুলোর সন্তানাদি থেকেও যেন নেই।  কারন তারা কেউ খোঁজ রাখেন না  বৃদ্ধ বাবা মায়ের। আবার কারো ছেলে সন্তান না থাকায়  নিজের পেটের দায়ে তারা কেউ কেউ এই বৃদ্ধ বয়সে মানুষের জমিতে শ্রমিকের (কামলার) কাজ করে পেটের ক্ষুদা নিবারন করেন। তাদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম বয়সীদের আর্থিক সচ্ছলতা থাকা সত্বেও জুটেছে সরকারের বয়স্ক ভাতার কাজ। শুধু জোটেনি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের খামাত গাড়াগ্রাম গ্রামের মৃত আপান উদ্দিনের স্ত্রী মর্জিনা বেওয়া, কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের মুশা বালাপাড়া গ্রামের সর্গীয় ভাদু মোহন্তের স্ত্রী শোকো বালা ও বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি গ্রামের মৃত ওসমান মুন্সির ছেলে নুর ইসলামের।

মর্জিনা বেওয়া,  গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের খামাত গাড়াগ্রাম গ্রামের মর্জিনা বেওয়ার বয়স ৯০ বছর । বয়সের ভাড়ে ন্যাজু এই বৃদ্ধা লাঠিতে ভড় দিয়ে কোন রকমে চলাফেরা করেন। তার স্বামী  বিশ বছর আগে মারা গেছেন। তার এক ছেলে এক মেয়ে। একমাত্র ছেলে সেও ১৫ বছর আগে মারা গেছেন । তখন থেকে তার জায়গা হয় তার নাতী ফিরিজুল ইসলামের বাড়িতে। মর্জিনা বেওয়া কান্নাজড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে জানান, মোর নাওয়ে ( আমার নামে) বিদুয়া (বিধবা) ভাতা করার জন্য দুলাল নামে এক জনকে এক হাজার টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু বিধবা ভাতার কার্ডতো দুরের কথা টাকাও ফেরৎ পাইনি।

নুর ইসলাম, বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি গ্রামে বাড়ি নুর ইসলামের তার বয়স ৭০। তার তিন ছেলে দুই মেয়ে। তার তিন ছেলে ঢাকায় গার্মেন্সে চাকরি করেন। দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। নুর ইসলাম তার স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে থাকেন।  ছেলেরা খোঁজ না নিলেও তারা বেশ ভালোই চলতেন। গত দুই বছর আগে পেটের ব্যাথা  নিয়ে তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে অপারেশন করে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসলেও আগের মত কাজ করতে পারেননা। নুর ইসলাম জানান, আমি চেয়ারম্যানের কাছে বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য গিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি আমাকে কার্ড করে দেননি। বর্তমানে আমি কঠিন অবস্থার মধ্যে জীবন যাপন করছি।

শোকো বালা,কিশোরগঞ্জ সদর  ইউনিয়নের মুশা বালাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শোকো বালা ৭৫। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার স্বামী ভাদু মহোন্ত তাকে সাথে নিয়ে ভারতে পালিয়ে যান। কিন্তু দেশ স্বাধীনের পর দেশ মাতৃকার টানে আবার ফিরে আসেন। দেশে ফিরে তার এক ছেলে ও এক মেয়ের জ¤েœর পর তার স্বামী মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি অনেক কষ্টে একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দেন। তার একমাত্র ছেলের বিয়ে হয়। কিন্তু ছেলের যা রোজগার তাতে তাদের সংসার চলেনা। তাই তিনি মানুষের বাড়িতে কামলার কাজ করেন। তিনি বলেন বাবা, আমার  খুব কষ্ট কাজ না করলে খাবো কি, এই বৃদ্ধ বয়সে বিধবা ভাতার জন্য অনেকের কাছে গিয়েছি কিন্তু কোন কাজ হয়নি।  এ ব্যাপারে বাহাগিলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যার আতাউর রহমান শাহ দুলুর সাথে মোবাইলে কথা বললে তিনি বলেন, আমি বাহিরে আছি পরে কথা বলব। গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চিকিৎসা নিতে ঢাকায় অবস্থান করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 3351496502403503943

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item