শীতের মজাদার পানীয় খেজুরের রস

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কনকনে শীতের তীব্রতায় যখন সারা দেশ কাঁপছে থরথর; ঠিক তখনই ছোট-বড় সবার একদিকেই নজর কখন রশিয়া আসবে রস নিয়ে। রশিয়ার নিকট থেকে একগ্লাস খেঁজুরের রস নিয়ে থরথর কাঁপানো হাতে এক নিশ্বাসে নিঃশেষ। আহ্ কি স্বাদ!!
শীতের এই পানীয়টি খুবই মজাদার। আয়েস করে খায় গাঁও-গ্রামের মানুষজন। এই পানীয়র স্থানীয় নাম খেঁজুর রস। আর যিনি খেঁজুর গাছ হতে এই পানীয় পেড়ে বিক্রয় করেন তাকে গাঁও-গ্রামের মানুষ রশিয়া বলে ডাকে।
রশিয়া প্রত্যেকদিন দুটি মাটির হাঁড়ি বাঁশের ফাঁলিতে ঘাঁড়ে ভার সাজিয়ে রাস্তা দিয়ে “এই খেঁজুরের রস”বলে উচ্চ স্বরে ডাকতে ডাকতে নিয়ে যান ভোর-প্রভাতে। এতে ছোট-বড় সকলেই রসের মৌ মৌ গন্ধ পাওয়ার এবং রস খাওয়ার লোভে রাস্তায় ছুটে যান।
এতো সুন্দর করে খেঁজুর পানীয়গুলো যিনি যতœ সহকারে জনসাধারণকে খাওয়ান সেই রশিয়া বছরে এক থেকে দেড় মাস এই পানীয় বিক্রির কাজটি করে থাকেন। প্রত্যেকদিন এই রস বিক্রি করে তিনি সারাদিনের রোজগারের টাকা উপার্জন করেন। আর এই তিন থেকে চার মাসে যা উপার্জন করেন তাই দিয়ে তিনি বছরের ছয় থেকে আট মাস সংসার চালিয়ে নেন।
জানতে চাওয়া হলে রশিয়া ইউছুফ বলেন, আগের মতন আর গাছ নাই। তাও জীবন তো চালেবার নাগিবে। সেইতেনে প্রত্যেকদিন দুই হাঁড়ি রস নিয়া যাও গ্রামোত। কুনো কুনো সময় শহরোতও যাও। এক গেলাস রসের দাম এলা তিন টাকা। তিন-চার মাস রস বেঁচেয়া দুই-তিন মাসের খোরাক হয়। বছরের আর সময়লা খেঁজুর গাছ পরিষ্কার করো। এইভাবেই দিন যায়।
খেঁজুর রস কিনতে আসা জুয়েল ইসলাম বলেন, খেঁজুর রস সকালে খেলে পেট ঠান্ডা থাকে। অনেক রোগ-বালাই সেরে যায়। তবে এই রস যত ভালো তত খারাপ। রসগুলো চার-পাঁচ দিন হাঁড়িতে বাসি করে রাখলে মাদকে পরিনত হয়। একে তখন তাড়ী বলে। যা খেলে নেশা হয়।
শুধু পানীয় হিসেবেই এই পানীয় ব্যবহৃত হয় তা নয়। এই পানীয় শীতের পিঠা তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়। আবার মজাদার খাবার হলো খেঁজুর গুর। এই রস দিয়ে মজাদার গুরও তৈরি করা হয়। শীতের সকালে স্নিগ্ধ রোদে মাদুর পেতে খেঁজুর গুর আর গুর মাখানো মোলা খেতে খুবই মজাদার। এছাড়াও গবাদি পশুর জন্যও এই পানীয়র দ্বারা তৈরি লালীগুর খুবই স্বাস্থ্যকর।
দেশের উত্তরে এই খেঁজুর গাছের সংখ্যা কম হলেও দক্ষিণে তুলনামূলকভাবে বেশি। এই গাছের চাষ বেশি হলে আঁখ চাষের চাহিদা না কমলেও দেশে চিনির চাহিদা পূরণ হবে খেঁজুর গুর দিয়ে। এমনকি তুলনামূলক বেশি রপ্তানি করা যাবে এই পানীয়র তৈরি গুর। অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বি হওয়া সম্ভব হবে। তাই খেঁজুর চাষ একটি লাভজনক পন্থা। কারণ,একটি খেঁজুর গাছ হতে বছরে ৩২০-৩৫০লিটার রস(পানীয়) পাওয়া যায়। এমনকি গাছ থেকে খেঁজুর ফলও পাওয়া যায়। যা বিক্রয় যোগ্য।

পুরোনো সংবাদ

নিবিড়-অবলোকন 8192962198659368079

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item