রংপুরে জেএমবি-পুলিশ বন্দুকযুদ্ধ গ্রেফতার ৪: অস্ত্র উদ্ধার: আহত ৪


রংপুর অফিসঃ
রংপুর মহানগরীর চন্দনপাট শাহবাজপুর চাপড়ার দোলা এলাকার একটি পরিত্যাক্ত ইটভাটায় শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে জেএমবি সদস্যরা নাশকতার পরিকল্পনাকরাকালীন সময়ে পুলিশের অভিযানে জেএমবি-পুলিশ বন্দুকযুদ্ধে ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। এসময় ৪ জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে বেলাল হোসেন জাপানী নাগরিক হোসিও কোনি হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামী সাদ্দাম হোসেনের দীক্ষাগুরু বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। অভিযানের সময় উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমান অস্ত্র। গ্রেফতারকৃতদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান রোববার দুপুরে তার সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, জাপানী নাগরিক কোনিও হোসি হত্যার পর এই অঞ্চলের জেএমবি সদস্যরা গা ঢাকা দেয়। আমাদের কাছে কিছুদিন থেকে খবর ছিল জেএমবি সদস্যরা আবারও সক্রিয় হচ্ছে এই এলাকায় নাশকতার জন্য। এরই মধ্যে শনিবার রাতে জেএমবি সদস্যরা নগরীর শাহবাজপুর এসএমবি ইটের ভাটায় বড়ধরনের নাশকতার পরিকল্পনার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকে। খবর পেয়ে রাত দুই টার দিকে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় পুলিশকে লক্ষ করে জেএমবি সদস্যরা গুলি ও ককটেল ছুড়তে থাকে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে ৫ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এ সময় এসআই মাসুদ রানা, মামুনুর রশিদ, কনেস্টবল সদস্য আসাদ ও আব্দুল খালেক আহত হন। এক পর্যায়ে জেএমবি সদস্যদের পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তারা হলো বেলাল হোসেন(৪৬), এরশাদ আলম(২৭), আশরাফুল আলম(২৩) ও আল আমিন (২০)। এদের মধ্যে বেলাল এর বাড়ি রংপুরের পীরগাছার দুর্গাপুর আর বাকী তিন জনের বাড়ী পীরগাছার পশুয়া টাঙ্গাইলপাড়া গ্রামে। আহত পুলিশ সদস্যদের রাতেই রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয় বলে জানান এসপি।

এসপি প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও জানান, গ্রেফতারকৃত বেলাল হোসেন হোসিও কোনি মামলার চার্জশটভুক্ত আসামী সাদ্দামের দীক্ষাগুরু। তার কাছেই সে জেএমবির শিক্ষা নেয়। সে ১৯৯১ সাল থেকে ৯৪ সাল পর্যন্ত শিবির করতো। ৯৪ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত জামায়াত করতো। ২০১৪ সালে সে জেএমবিতে যোগ দেয়। অপর গ্রেফতারকৃত এরশাদ আলমও আগের শিবির করতো। পরে ২০১৪ সালে জেএমবিতে যোগ দেয়। বাকীরা শুরু থেকেই জেএমবির সক্রিয় সদস্য।
এসপি জানান, গ্রেফতারকৃতরা হোসিও কোনি মামলার আসামী নয়, তবে তারা এই ঘটনার সাথে জড়িত ছিল কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে। এজন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে কোর্টে চালান দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, এদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদি হয়েছে সন্ত্রাস ও নাশকতা, অস্ত্র এবং বিষ্ফোরক আইনে তিনটি মামলা করেছে।

এসপি জানান, এসময় একটি দেশি পিস্তল, স্টিলের চা পাকি চারটি, চাইনিজ কুড়াল ১ টা, রাম দা একটি , ছোট কুড়াল  এক টি, লোহার পাইপ চারটি ককটেল, জিহাদী বই এগারটি, পাটের বস্তা চার টি, মোবাইল সেট চারটি উদ্ধার করা হয়।

প্রসঙ্গত: গতবছর ৩ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০ টায় রংপুর মহানগরীর উপকণ্ঠ কাউনিয়া উপজেলার কাচু আলুটারী এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে খুন হন হোসি। এ ঘটনায় কাউনিয়া থানার ওসি বাদি হয়ে ৩ অজ্ঞাত ব্যাক্তির নামে মামলা করে। গত ৭ আগষ্ট রংপুর জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক আরিফুর রহমানের আদালতে জাপানী নাগরিক হোসি কোনিও হত্যাকান্ডের ১০ মাস ৭ দিন পর ৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহন করেন। এরা সবাই নিষিধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জমিয়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ(জেএমবি) এর কিলিং মিশনের লিডার ও সদস্য। এদের মধ্যে মাসুদ রানা (২১), এসহাক আলী(২৩), লিটন মিয়া (২৩), আবু সাঈদ(৩৫) গ্রেফতার হয়ে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি। তাদের বাড়ি রংপুরের পীরগাছা উপজেলায়। অপর অভিযুক্ত কুড়িগ্রামের সাদ্দাম হোসেন (২১), গাইবান্ধার নজরুল ইসলাম (২৮) এবং পঞ্চগড়ের সাখাওয়াত হোসেন(৩৩), রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসানুল্লাহ আনছারী (২৮) পলাতক আছে। এখন মামলাটি রংপুর স্পেশাল জজ আদালতে বিচারাধীন আছে

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 3917176081933570836

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item