সংস্কারের অভাবে ধ্বংশ হয়ে যাচ্ছে ফুলবাড়ীর ঐতিহ্যবাহী ২শ বছরের পুরোনো কাচারী বাড়ীটি ।

মেহেদী হাসান উজ্জল ফুরবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

     সংস্কার অভাবে ধ্বংশ হয়ে যাচ্ছে, দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার অতিত ঐতিহ্যের নিরব সাাক্ষী হয়ে দাঁড়ীয়ে থাকা, জমিদার ইদ্র চাঁদ বোথরার ২শ বছরের পুরোনো কাচারী বাড়ীটি।
    পৌর শহরের গৌরীপাড়া মৌজায অবস্থিত এই ঐতিহ্যবাহী কাচারী বাড়ীটি, এক সময় উপজেলা ভুমি অফিস হিসেবে ব্যবহারীত হলেও, এখন এই বাড়ীটির পার্শে উপজেলা ভুমি অফিসের নতুন ভবন নির্মান হওয়ায়, এখন এই বাড়ীটি, অব্যবহৃত হয়ে পড়ে আছে, ফলে দির্ঘ দিন এই বাড়ীটি সংস্কার না করায়, বাড়ীটির দেয়ালের প্লাস্টার খুলে যাচ্ছে, ইতিমধ্যে ভেঙ্গে পড়েছে ভবনটির দ্বিতলায় উঠা-নামা করা সীড়িটি। এখনেই সংস্কার করা না হলেই, ধবংশ হয়ে যাবে অতিত ঐতিহ্যর নিরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা, এই ঐতিহ্যবাড়ী ভবনটি।
     জমিদার ইন্দ্র চাঁদ বোথরা প্রজাদের যাতায়াতের সুবিদার্থে, ছোট যবুনা নদির ধারে ১৮৮৬ সালে নির্মান করেন এই কাচারী বাড়ীটি, বাড়ীটির দেয়ালে এখনো খোদাই করা অক্ষরে লেখা আছে, নির্মান সাল ও জমিদারের নাম। এই বাড়ীটির প্রধান ফটকে দু’টি বাঘের খোদাই করা মুরাল রয়েছে, এ জন্য এই কাচারী বাড়ীটিকে বাঘ মার্কা বাড়ী বলে এলাকায় পরিচিত আছে। বাড়ীটি পুর্ব-পশ্চিমে লম্বা, দ্বিতল ভবন, এই ভবনে মোট বড় বড় ৭টি কক্ষ আছে, বাড়ীটির দেয়াল গুলো তৎকালিন চান সুড়কি ও ইট দ্বারা নির্মিত  ৩০ ইঞ্চি থেকে ৪০ ইঞ্চি মোটা,  লোহার বীম ও শাল কাঠের উপর নির্মিত ছাদ। বাড়ীটির ছায়া ঘেরা মনোরম পরিবেশ।
    এলাকার প্রবীনদের দেয়া তথ্য মতে, এই কাচারী বাড়ীটি সুচনা লগ্ন থেকে, প্রজাদের খাজনা প্রদানসহ জমিদারের দাপ্তরিক কাজে ব্যবহৃত হত বলে, এই বাড়ীটি কাচারী বাড়ী হিসেবে পরিচিত। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় জমিদারী প্রথা বিলুপ্তির পর, জমিদার এই বাড়ী জমি রেখে ভারতে চলে গেলে, তৎকালিন সরকার এই জমি ও বাড়ীটিকে শত্রু সম্পত্তি হিসেবে তালিকা করে, এবং  এই কাচারী বাড়ীতে উপজেলা ভুমি অফিস হিসেবে ব্যবহার করে। ২০০৮ সাল পর্যন্ত এই বাড়ীটি ছিল ফুলবাড়ী উপজেলা ভুমি অফিস। ২০০৭-২০০৮ সালে সরকার এই বাড়ীটির পার্শে, উপজেলা ভুমি অফিসের একটি নতুন ভবন নির্মান করায়, এখন সেই ভবনে উপজেলা ভুমি অফিসটি স্থান্তর করা হয়।
    উপজেলা স্ব-নামধন্য চিকিৎসক ডাঃ রেজাউল ইসলাম লাবু বলেন, ইন্দ্র চাঁদ বোথরার এই বাড়ীটি শুধু একটা পুরোনো ভবন নয়, আমাদের ঐতিহ্যবাহী অতিতের এক নিরব সাক্ষী, এই ঐতিহ্যবাহী নির্দশন গুলোকে যদি, আমরা ধরে না রাখতে পারি, তাহলে আমাদের প্রজন্মের নিকট কি ভাবে উপস্থাপন করবো যে, আমাদের অতিত কত গৌরবের কত ঐত্যিহ্যের। একই কথা বলেন ফুলবাড়ী শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক অবিনাশ চন্দ্র রায়, জিএম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোজাম্মেল হোসেন।
     এলাকাবাসীর অভিযোগ এই বাড়ীটি ও থানার ভবনটি ছিল এই উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ভবন, কিন্তু থানার ভবনটি মেরামত না করে ভেঙ্গে ফেলায় একটি ঐতিহ্যবাহী ভবনকে ধবংশ করা হয়েছে, এই ভবনটিও যদি ভেঙ্গে যায়, তাহলে এই উপজেলার অতিত ঐতিহ্যকে ধবংশ হয়ে যাবে।
    চিকিৎসক রেজাউল ইসলাম লাবু বলেন, এই বাড়ীটি সংস্কার করা হলে সুধু আমাদের ঐীতহ্যকে রক্ষা করা হবেনা, বরং এই বাড়ীটি ডাকবাংলো হিসেবে ব্যবহার করে, সরকার রাজস্ব্য আয়ও করতে পারে। এ জন্য উপজেলার প্রবীন শিক্ষক, সাংবাদিক ও পেশাজিবী প্রতিনিধি গণ এই ঐতিহ্যবাহী বাড়ীটি সংস্কার করে, এই উপজেলার অতিত ঐতিহ্যকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের নিকট জোরদাবী জানিয়েছেন।
    এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ এহেতেশাম রেজার সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন এই বিষয়টি উপজেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ সংস্কারের সীদ্ধান্ত দিলে সংস্কারের কাজ শুরু হবে।

পুরোনো সংবাদ

নিবিড়-অবলোকন 2653422056484099760

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item