সৈয়দপুরে ছেলের বিরুদ্ধে অসুস্থ মাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পরিবারকে হেয় প্রতিপন্ন করার অভিযোগ

তোফাজ্জল হোসেন লুতু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:

সৈয়দপুরে বিধবা  মা সাফিয়া খাতুনকে স্বামীর ভিটেবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন তাঁর ছেলেমেয়েরা। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বেলা ১১টায় বিধবার ৩ ছেলে ও এক মেয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই দাবি করেন। শহরের মুন্সিপাড়া খেঁজুরবাগ মসজিদ এলাকার  বাড়িতে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিধবার ছেলে মো. মুজতাহিদ আলী বাবু। এ সময় বিধবার ছেলে মোফাক-খার আলী স্বপন, মুজাহিদ আলী ও মেয়ে সাবিহা আাজুমান্দ বানু নাজনীন ও জামাতা অ্যাডভেকেট মীর মোসাদ্দেক আলী ফিরোজ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে  সন্তানেরা উল্লেখ করেছেন, তাদের বাবা ডা. মর্র্তূজা আলী তাঁর মৃত্যুর আগে সৈয়দপুর শহরের মুন্সিপাড়া খেঁজুরবাগ মসজিদ সংলগ্ন ও বাঙ্গালীপুর নিজপাড়া এলাকায় থাকা জায়গায় সমপরিমাণ লিখে দিয়ে যান ৫ ছেলের নামে। তাদের বিধবা মা সাফিয়া খাতুন তাঁর ছেলে মুজতাহিদ আলী বাবু’র পারিবারিক অংশ হিসেবে পাওয়া বাড়িতে ছোট ছেলে মুস্তাফিজ আলীর সংসারে সঙ্গে বসবাস করতো। বিধবা ছোট ছেলের পরিবারে সঙ্গে থাকলেও তাঁর সকল ছেলেরা মায়ের ভরনপোষন ও চিকিৎসাসহ যাবতীয় খরচ যথাযথভাবে দিয়ে আসছিলেন। তারপরও ছোট ছেলে মুস্তাফিজ আলী বিধবা মায়ের নামে থাকা স্বামী মর্তূজার আলীর দেওয়া দোকান মোটা অংকের থাকা বিক্রি করে দেন। তারপরও বিধবার অপরাপর ছেলে মেয়েরা তা সহজভাবে মেনে নেন। এরপর অর্থালোভী ছোট ছেলে মুস্তাফিজ আলী মানসিক ভারসাম্যহীন বিধবা মায়ের রাজবাড়ী জেলা শহরে পৈত্রিকসূত্রে পাওয়া মূল্যবান জমি-জায়গায় এককভাবে নিজের নামে লিখে নেন। পরে বিধবা’র অন্যান্য ছেলে মেয়েরা ঘটনাটি জানতে পারেন। এতে করে মায়ের জমি এককভাবে নিজের নামে লিখে নেওয়ার কারণে মুস্তাফিজ আলীর সঙ্গে তাঁর অন্যান্য বড় বোন ও ভাইদের মনমানিল্যের সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় বড় ভাই মুজতাহিদ আলী  বাবু তাঁর বাড়িতে থাকা ছোট ভাই মুস্তাফিজ আলীকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু মুস্তাফিজ আলী মুন্সিপাড়াস্থ বড় ভাইয়ের বাড়ি ছাড়তে তালবাহানা শুরু করেন। তখন অনেকটা বাধ্য হয়ে বড় ভাই মুজতাহিদ আলী বাবু তাঁর পারিবারিকভাবে প্রাপ্ত বাড়ি উদ্ধারে আইনের আশ্রয় গ্রহন করেন। আর তখনই ওই বাড়িকে ঘিরে তাদের মধ্যে চরম দ্বন্দ্বের সৃৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠকও হয়। পরবর্তীতে বড় ভাই বাবুর বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বিধবার ছোট ছেলে মুস্তাফিজ আলী সময় চান। তাঁর অনুরোধে তাকে সময়ও দেওয়া হয়। এ সময় বিধবা মা সাফিয়া খাতুন ছোট ছেলে মুস্তাফিজ আলীর পরিবারের সঙ্গে থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
পরবর্তীতে বিধবার ছোট ছেলে মুস্তাফিজ আলী তাঁর মাকে নিয়ে রাতে আঁধারে বড় ভাইয়ের মুন্সিপাড়াস্থ বাড়ি ছেড়ে দিয়ে তাঁর নিজস্ব বাড়িতে গিয়ে উঠেন। সেই থেকে বিধবা সাফিয়া খাতুন শহরের বাঙ্গালীপুর নিজপাড়াস্থ ছোট ছেলের বাড়িতে অবস্থান করছেন।
এদিকে, মানসিক ভারসাম্যহীন বিধবা মাকে ভুল বুঝিয়ে তাঁর রাজবাড়ীতে পাওয়া পৈত্রিক জায়গায় ছোট ছেলে মুস্তাফিজ আলী নিজের নামে লিখে নেওয়ার ব্যাপারে রাজবাড়ী আদালতের শরনাপন্ন হয় অন্যান্য ছেলেময়েরা। এতে করে ভাইবোনদের প্রতি চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন বিধবার ছোট ছেলে মুস্তাফিজ আলী। তিনি ব্রেইন হেমারেজের রোগী বিধবা মা সাফিয়া খাতুনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহারের অপকৌশল শুরু করেন। সুচতুর মুস্তাফিজ আলী বিধবাকে দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁর মুখ দিয়ে  ছেলেমেয়েরা তাকে (বিধবা) স্বামীর ভিটেবাড়ি থেকে গলা ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ তোলেন। যার পরবর্তীতে বিভিন্ন দৈনিক ও আঞ্চলিক পত্রপত্রিকায় ফলাও করে প্রকাশিত হয় একটি সংবাদ। মূলতঃ নিজের নানা অপকর্ম ঢাকতে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে ওই অপকর্ম করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিধবার ছেলেমেয়েরা তাদের ছোট ভাই মুস্তাফিজ আলী অশীতিপর বৃদ্ধা বিধবা মাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে তাঁদের বিধবা  মা সাফিয়া খাতুন স্বেচ্ছায় ছোট ছেলের কথার প্রলোভনে পড়ে তাঁর বাড়িতে চলে গেছেন।  তাদের মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার প্রশ্নই উঠে না বলে দাবি করেন তারা। আর  বর্তমান সমাজের বিকেকবান, বুদ্ধিজ্ঞান সম্পন্ন কোন সন্তান এ রকম ন্যাক্কারজনক কাজ করতে পারেন না ?  তারা বলেন, এখন  তারা সকল ভাইবোনেরাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত এবং সমাজের তাদের একটি গ্রহনযোগ্যতা মানসম্মান ও ইজ্জত রয়েছে। ওই ঘটনায় তাদের  চরম সম্মানহানি ও ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে।  

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 7748266455661608841

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item