পীরগাছায় সরকারী প্রাথমিক স্কুলের উন্নয়ন বরাদ্ধ উত্তোলনে অনিয়ম

ফজলুর রহমান,পীরগাছা(রংপুর) ঃ

রংপুরের পীরগাছায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিদ্যালয় ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা (স্লিপ)-এর বরাদ্ধকৃত টাকার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্লিপের টাকার কাজ শেষ না হতেই বিদ্যালয়গুলোর প্রধান শিক্ষকের নিকট থেকে অনৈতিক লেনদেনের মাধমে প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করায় এ নিয়ে এলাকার শুশীল সমাজ ও অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তারা অবিলম্বে ওই দূর্ণীতির তদন্ত পূর্বক জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করছে।
শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা যায়, উপজেলার ১ শত ৭৯ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য প্রতিটিতে ৪০ হাজার টাকা করে ৭১ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসারগণ শিক্ষা উপকরণসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসার কারণে কাজ শেষ না হলেও নিজ উদ্যোগে কাজ সম্পন্ন হয়েছে মর্মে প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করেন। আর এ জন্য প্রধান শিক্ষকদের গুনতে হয়েছে ২/৫ হাজার টাকা ঘুষ এবং শিক্ষকদের কাছ থেকে ভুয়া বিলপত্র নিয়ে স্কুলগুলির যৌথ হিসাব নাম্বারে টাকা ছাড় করে দেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রধান শিক্ষক বলেন, এটিও সাহেবরা আমাদের প্রত্যয়ন পত্র দিয়েছেন। স্যারেরা বলেছেন পছন্দ মতো বিলপত্র জমা দিলেই হবে।
উপজেলার দুধিয়াবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিদ্যালয় ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা (স্লিপ)-এর বরাদ্ধকৃত টাকা ব্যয়ে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোজাফ্ফর হোসেন সরকারী নীতিমালাকে তোয়াক্কা না করে সহকারী শিক্ষক মনোয়ারা বেগমকে স্লিপ কমিটি, রুটিন মেরামত কমিটি ও প্রাক-প্রাথমিক বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য করে নিজের ইচ্ছে মতো ব্যয় বিল-ভাউচার অফিসে দাখিল করে অর্থ উত্তোলন সাপেক্ষে সমুদয় অর্থ আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে। পরিপত্র অনুযায়ী স্লিপ বাস্তবায়ন কমিটিতে সহকারী শিক্ষক পুরুষ স্বপন, প্রাক-প্রাথমিক বাস্তবায়ন কমিটিতে হুমায়ুন কবির থাকার কথা থাকলেও তাদেরকে উক্ত কমিটিতে রাখা হয়নি। বিদ্যালয়ের পুরাতন ইট দিয়ে শপথ মঞ্চের কাজ করলেও তিনি ৫শ ইট ক্রয় বাবদ ৪ হাজার টাকার ভূয়া বিল-ভাউচার তৈরী করেছেন। বৈদ্যুতিক পাখাসহ বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ক্রয় বাবদ ৫ হাজার টাকা বিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে ক্রয় করলেও স্লিপ থেকে ব্যয় দেখিয়েছেন। অনুরুপভাবে ভূয়া ভাউচারের মাধ্যমে প্রায় ৩০ হাজার টাকা তছরুপ হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত চতুর প্রধান শিক্ষক ৫হাজার৫শত টাকায় একটি সাউন্ড বক্স ক্রয় করেছেন চট্্রগামের অভি ইলেকট্রোনিকস এন্ড ইলেকট্রিক সার্ভিস সেন্টার থেকে । বাংলাদেশ গনহত্যা সম্পর্কিত একটি বই তিনি ক্রয় করেছেন শূন্য প্রকাশনী মীরপুর ঢাকায়। উল্লেখ্য যে,উক্ত প্রধান শিক্ষক প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা উপকরন ক্রয় করেছেন রুমানা বই বিতান বাংলাবাজার ঢাকা থেকে। রুমানা বই বিতান এর বর্তমান সত্বাধিকারী হলেন দাদন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম @ আব্দুর রহিম বলে জানা যায়। দাদন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম দীর্ঘদিন থেকে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার লাজিজা ’কে ম্যানেজ করে বিদ্যালয় ফাঁিক দিয়ে রংপুর জেলাসহ পাশ্ববর্তী জেলা ও থানা গুলোতে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা উপকরনের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন।
এব্যাপারে দুধিয়াবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাফ্ফর হোসেন এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, অফিসের সাথে সমন্বয় করে বিল-ভাউচার তৈরী করেছি। 
উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসারগণ সাংবাদিকদের জানান, জুনের মধ্যে টাকাগুলো ছাড় না করলে টাকা ফেরৎ যাবে। তাই শিক্ষকদের কাছ থেকে অগ্রিম বিলপত্র নিয়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রত্যয়ন পত্র দিয়েছি। তবে তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি বিষয়টি সঠিক নয়।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিক-উজ-জামান এ বিষয়ে বলেন, স্লিপের টাকার কাজ শেষ করার আগে প্রত্যয়নপত্র দেয়ার সুযোগ নেই। টাকার বিনিময়ে প্রত্যয়নপত্র দেয়া হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 1872734116621263887

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item