দুর্নীতি ঠেকাতে ফেসবুকে প্রচারনা, পীরগঞ্জে ১০ টাকার চাল নিয়ে তুঘলকি কারবার!

মামুনুর রশিদ মেরাজুল পীরগঞ্জ (রংপুর) থেকেঃ
পীরগঞ্জে খাদ্যবান্ধব কর্মসুচীর ১০ টাকার চাল নিয়ে তুঘলকি কারবার চলছে। প্রতিটি ইউনিয়নেই বিস্তর অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। কোন ইউনিয়নেই ওই কর্মসুচীর শর্ত মানা হয়নি। উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নে স্বচ্ছল, প্রভাবশালী, জনপ্রতিনিধি, চাকরীজীবি, একই পরিবারের সবাই তালিকাভুক্ত হয়েছেন। অপরদিকে ইউনিয়নটিতে ইউপি চেয়ারম্যান নিজেই চালের ডিলার হয়েছেন। দুর্নীতি ঠেকাতে ইউএনও ফেসবুকে প্রচারনা চালাচ্ছেন।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসুচীর আওতায় তালিকাভুক্ত দরিদ্র পরিবারের প্রত্যেককে ১০ টাকা কেজিতে প্রতিমাসে ৩০ কেজি চাল দেয়া হচ্ছে। কিন্তু তালিকা তৈরীতে কালক্ষেপন করায় পীরগঞ্জে গত সেপ্টেম্বর মাসের বরাদ্দ থেকে দরিদ্ররা বঞ্চিত হয়েছে। তারপরও অক্টোবর মাসের বরাদ্দ নিয়ে প্রতিটি ইউনিয়নেই তুঘলকি কারবার চলছে। তালিকা তৈরীতে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, ডিলার নিয়োগে উৎকোচ গ্রহন এবং ক্ষমতাসীনরাই ডিলারী নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলার ১১ নং পাঁচগাছী ইউনিয়নে ১০ টাকা কেজির চালের তালিকা তৈরীতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, দরিদ্রদের তালিকা তৈরীর সময় একজন জুয়াড়ী ও সচিবের মাধ্যমে প্রত্যেকের কাছ থেকে রিসিফট দিয়ে ১’শ টাকা করে চৌকিদারী ট্যাক্স আদায় করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ। এ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অসহায় দরিদ্ররা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দরিদ্ররা জানান, এলিট মন্ডল আমাদের কাছ থেকে চৌকিদারী ট্যাক্স নিলেও ১০ টাকার চাল পাইনি। অনেক ক্ষেত্রে একই ক্রমিক নম্বরে একাধিক নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ইউনিয়নটিতে ১ হাজার ৫’শ জনকে ১০ টাকার চালের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ওই তালিকায় দেখা যায়, একই পরিবারের ওসমান গনির পুত্র বদরুদ্দোজা (৫৬০), ফরহাদ (৫৭১), নুরুন্নবী (৫৮২), নুরুল হুদা (৫৮৪), ফারুক (৫৮৭) তালিকাভুক্ত হয়েছে। ইউপি মেম্বার সেকেন্দার মিয়া (৫৫০)সহ তার পরিবারের জোহরা (৫১৬), আমিনুল (৫৩০), মিনারা (৫৪৯), লাভলী (৫৯৪) তালিকাভুক্ত হয়ে চাল নিয়েছেন। অপরদিকে জুনিদপুর দাখিল মাদরাসার সুপার সুলতান মিয়া (৫১২) সহ তার ২ ভাই প্রভাবশালী হায়দার আলী (৫১১), সোলায়মান আলী (৫৭৯), চালকল ও খামারের মালিক আবুল কাশেম (৫৫৪), চাল ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম (৫৯৭), খয়বর মিয়া (৬০৭), ব্যবসায়ী শাকিল (৬৩৮), মাছের খামারী আনারুল (৫৮৬), জোয়াদ (৫৮৫), মাহামুদা (৬৭৫) কে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। উল্লেখিত ব্যাপারে ওই ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ মিয়া বলেন, ডাবলিং কার্ড হওয়ায় সেগুলো আমি দেখছি। আর অনেকদিন ধরে চৌকিদারী ট্যাক্স আদায় হয় না। তাই এবারে এলিট মন্ডলকে দায়িত্ব দিয়ে ১’শ টাকা করে ট্যাক্স আদায় করেছি। এতে ইউনিয়ন পরিষদের প্রায় দেড় লাখ টাকা আদায় হয়েছে। তালিকা তৈরীতে অনিয়মের ব্যাপারে তিনি বলেন, অনেক মেম্বার দুর্নীতি করেছে, সেগুলো যাচাই-বাছাই করছি। তিনি আরও বলেন, চালের ডিলারশীপ আমি আমার ছোট ভাই হাফিজার রহমানের নামে নিয়েছি। আর এলিট মন্ডলের স্ত্রী জাহানারা বেগমের নামে একটি ডিলারী দিয়েছি। বিভিন্ন ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসুচীতে তুঘলকির ব্যাপারে ইউএনও কমল কুমার ঘোষ বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আমি আমার একাউন্টে অভিযোগ দেয়ার জন্য জনসাধারনকে বলেছি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 2349548835190412745

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item