প্রয়োজনীয় স্থানে নেই সেতু। আবার সেতু আছে রাস্তা নেই

মোঃ শামীম হোসেন , কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী॥

বুল্লাই নদীর বসুনিয়াপাড়া খালের উপর দীর্ঘদিন ধরে একটি সেতু দাবি করে  আসছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার রনচন্ডি ইউনিয়নের বসনিয়াপাড়া ও রনচন্ডি গ্রামের হাজারো মানুষজন। কিন্তু দীর্ঘদিনে তারা সেতু না পাওয়ায় এলাকাবাসী স্বেচ্ছা শ্রমে বাঁশের সাকো তৈরী করে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। অথচ ওই উপজেলায় ২০১৫/২০১৬ অর্থ বছরে ত্রান মন্ত্রনালয়ের ২ কোটি ২ লাখ ৭৪ হাজার ৬৭০ টাকা ব্যয়ে ৭টি সেতু নির্মান করা হয়েছে। মজার বিষয় ওই ৭ সেতু যে সব স্থানে নির্মান   হয়েছে সে সকল স্থানে নেই রাস্তাঘাট বা মানুষজন চলাচলের কোন পথ।
রবিবার সরেজমিনে দেখা যায় গ্রামীন রাস্তায় (১২ মিটার) দৈর্ঘ্য পর্যন্ত সেতু নির্মান প্রকল্পে ত্রান মন্ত্রনালয়ের অধিনে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার ৭টি সেতু নির্মান করা হলেও সেতু গুলো জনসাধারনের চলাচলে কোন উপকারে আসছেনা।  যে ৭টি সেতু নির্মান করা হয়েছে সেগুলো জনবসতিহীন ফাকা স্থানে দন্ডায়মান অবস্থায় পড়ে রয়েছে। নেই কোন চলাচলের সংযোগ সড়ক বা চলাচলের পথ। পাশাপাশি এতো নি¤œমানের কাজ করা হয়েছে যে এই সেতুগুলোর উপরি ভাগের সব কিছু খসে পড়তে শুরু করেছে।  অথচ ঠিকাদারদের চুড়ান্ত বিল পরিশোধ করা হয়েছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ক কর্মকর্তার কার্যালয় হতে।
এলাকার সোলেমান আলী,মফিদুল ইসলাম,আজগর আলী মন্তব্য করে  বললেন এসব সেতুর নির্মানের দৃশ্যমান অবস্থা দেখে মনে হয় ”সরকারি মাল যেন দরিয়ামে” ঢেলে দিয়ে সংশ্লিষ্টরা লুটপাট করেছে।  অথচ বসুনিয়াপাড়ার বুল্লাই নদীর খালের সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষজন ও শিক্ষার্থীরা চলাচল করছে বাঁশের সাকো তৈরী করে। সেখানে সেতুর দাবি করতে করতে এলাকাবাসী হাফিয়ে গেলেও আজও সেতু পায়নি সেখানে। 
খোঁজ নিয়ে জানা যায় উপজেলার সদর ইউনিয়নের কামারপাড়া হতে ইসমাইল পাড়া যাওয়ার রাস্তায় ইসমাইলের দোলায় ৪০ ফিট সেতু ৩২ লাখ ৫২ হাজার ৬৫৩ টাকায়  মের্সাস মিনারা এন্টার প্রাইজ নামের ঠিকাদার নির্মান করেছে। সেখানে কোন চলাচলের রাস্তা নেই। অথচ সেতু তৈরী করা হয়েছে।
এমন আরো ৬টি সেতুর মধ্যে মাগুড়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়াডের মাস্টারপাড়া নিজাম উদ্দিনের বাড়ির পূর্বদিকে বুল্লাই নদীর উপরে  ৪০ ফিট সেতু নির্মান করা হয় ৩২ লাখ ৫২ হাজার ৬৫৩ টাকায় । ঠিকাদার দেখানো হয় মের্সাস আহসান হাবিব চৌধুরীকে। পুটিমারী ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়াডের ভেড়ভেড়ি গ্রামের সালামের মোড় হতে সাতপাই যাওয়ার রাস্তায় জমসের মাস্টারের বাড়ির সামরে ৪০ ফুট সেতুটিও  ৩২ লাখ ৫২ হাজার ৬৫৩ টাকায় নির্মান দেখানো হয়। ঠিকাদার ছিলেন নুরজাহার এন্টারপ্রাইজের পক্ষে মিনহাজুল ইসলাম।
আবার বাহাগিলী ইউনিয়নের নয়ালখাল ডাঙ্গারহাটে ধনীর উদ্দিন বাড়ির পশ্চিমে ৩৪ ফুট সেতু নির্মান করা হয় ২৭লাখ ৯৪ হাজার ২৫৬ টাকায়। ঠিকাদার ছিলেন  নুরজাহার এন্টার প্রাইজের মিনহাজুল ইসলাম।
নিতাই ইউনিয়নের ইউপি পরিষদ হতে খাতা মধুপুর ইউনিয়ন যাওয়ার রাস্তায় শিষারতলী যাওয়ার দোলার পানি নিস্কাশনের জন্য ৩৪ ফিট সেতু নির্মান করা হয় ২৭লাখ ৯৪ হাজার ২৫৬ টাকায়। ঠিকাদার ছিলেন মের্সাস রাশেদ এন্টারপ্রাইজ।
 মাগুড়া ইউনিয়নের কামারের হাটে বুল্লাই নদীর উপর ৪০ ফুট সেতু  ৩২ লাখ ৫২ হাজার ৬৫৩ টাকায় নির্মানে  ঠিকাদার ছিলেন মেসার্স এমকো এন্টার প্রাইজ।
নিতাই ইউনিয়নের পানিয়ালপুকুর গুয়াপাড়া ত্রিপুতি হতে মুশরত পানিয়াল পুকুর বেলতলী রাস্তায় গেন্দুর বাড়ির সামনে ডাঙ্গায় ২০ ফুট সেতু নির্মান করা হয় ১৬ লাখ ৭৫ হাজার ৫৪৬ টাকায়। ঠিকাদার ছিলেন মোঃ নাছিমুল একরাম। এই ৭টি সেতু নির্মানে সর্বমোট ব্যয় দেখানো হয় দুই কোটি ২ লাখ ৭৪ হাজার ৬৭০ টাকা।
এ ব্যাপারে কথা হয় কিশোরগঞ্জ উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা জলঢাকা উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা মোয়াজ্জেম হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন ওই সব সেতু নির্মানের প্রকল্প ও চুড়ান্ত বিল প্রসঙ্গে আমার কিছু জানা নেই। সেখানে পূর্বে যিনি দায়িত্বে ছিলেন সাইফুল ইসলাম তিনি চাকুরী হতে অবসর গ্রহন করে চলে গেছেন। তবে মোয়াজ্জেম হোসেনের এই সব সেতুর বিষয় তদন্ত করে দেখবেন বলে জানান।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 5950066597329190614

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item