এই অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ থাকবে না সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি--- চিলমারীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

কুড়িগ্রাম থেকে ফিরে হাজী মারুফ-জ্যোতি

এই কুড়িগ্রাম শুনলে মঙ্গা শুনতে হয়। বৃহত্তর রংপুরে মঙ্গা শব্দটা আর মূখে বা কানে যেন শুনতে না হয় এজন্য কাজ শুরু করা হয়েছে। এই অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ হবে না। মঙ্গা থাকবে না। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। দেশের যারা হতদরিদ্র কিনে খাওয়ার সামর্থ নাই তাদেরকে ১০টাকা কেজি দরে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির মাধ্যমে মাসে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছে। সমস্ত বাংলাদেশে যে মাসে কাজ থাকে না সেই সব সময়ে বছরে ৫ বার চাল বিতরণ করা হবে। জাতির পিতার নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন করা হয়েছে। বাংলাদেশের একটি মানুষও না খেয়ে মরবে না। যারা গৃহহারা হয়েছে ঘর নাই, তারা ঘর পাবে। কেউ বিনা চিকিৎসায় মরবে না। সকল ছেলে-মেয়ে লেখাপড়ার সুযোগ পাবে। গতকাল বুধবার কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ‘খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি’ উদ্বোধন করতে এসে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
“শেখের বেটি হাসিনা হামাক ১০ ট্যাকায় চাউল খোওয়াইবে। এটা হামরা কল্পনাতেও আনবার পাই নাই। হামার দুঃখের দিনতো শ্যাষ হয়া গেইল বাহে।” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় ৩০ কেজি চাল পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ফাতেমা বেগম (৬৫) এ অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেন।
হতদরিদ্র মানুষের মাঝে প্রতিকেজি  ১০ টাকা দরের ৩০ কেজি করে চাল বিতরণের মধ্যদিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে চিলমারী থেকেই খাদ্যবান্ধব এ কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন। একে একে  ফাতেমা বেগম, হালিমা বেগম, শ্রীমতি বাসন্তি রাণী, শ্রীমতি মালতি রাণী, জিয়ারা খাতুন, রশিদা খাতুন, আঃ হক, আজিজুল হক, জাহাঙ্গীর আলম, আবু বকর সিদ্দিক, আলিফ উদ্দিন, আমজাদ হোসেন, মোস্তফা আলী, আঃ খালেক ও ফরিদ উদ্দিন প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে এ চাল পেয়ে আনন্দে উদ্বেলিত। মালতি রাণীর স্বামী ভবেশ চন্দ্র দাস জোড়গাছ মাঝিপাড়ার অধিবাসী। জমি-জমা নেই। মাছ ধরতে পারলে জোটে খাবার, না হলে উপোস। তিন মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে টানা টানির সংসার। ১০ টাকার রেশন কার্ড পেয়ে সে আনন্দে উদ্বেলিত। বাসন্তির স্বামী মনোজ মাছ ধরে। তার ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে। রুপভান দু’বছর আগে আকস্মিকভাবে স্বামী নুর ইসলামকে হারিয়ে ২ ছেলে ৫ মেয়েকে নিয়ে পড়ে অথৈ সাগরে। সন্তানদের লালন-পালন করতে সে কাজ নেয় চাতালে। সে কাজও নেই এখন। এরকম দুঃখের দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এ রেশন কার্ড পেয়ে তিনি খুবই খুশি। তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, আল্লাহ যেন তাকে (শেখ হাসিনা) দীর্ঘজীবি করেন। এরকম নানা অনুভুতির কথা জানান, উদ্বোধনী দিনে খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসুচীর আওতায় রেশন কার্ডধারী ৬৪জন উপকারভোগী।
প্রধানমন্ত্রী সকাল ১১টায় সভাস্থলে উপস্থিত হন। এ্রআগে তিনি হেলিকপ্টারযোগে চিলমারী হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন। ব্যাপক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যদিয়ে এক কিলোমিটার দূরে সভাস্থলে আসেন। এসময় পথে পথে হাজার হাজার মানুষ তাকে এক নজর দেখার জন্য ভীড় জমায়। হাত নেড়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানায়। থানাহাট এ,ইউ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নির্ধারিত আমন্ত্রীত অতিথি ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেয়নি নিরাপত্তা বিভাগের লোকজন। সূধী সমাবেশে প্রায় ১০ হাজার মানুষের সংকুলান হলেও লক্ষাধিক মানুষ বাইরে উদগ্রীব হয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শোনেন। প্রচন্ড রোদ উপেক্ষা করে মাইকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনতে পেলেও এক নজর দেখতে না পাওয়ার বেদনা তাদেরকে ক্ষুব্ধ করে। ভোর থেকে রৌমারী, রাজিবপুর, উলিপুর, নাগেশ্বরী, ফুলবাড়ী, ভুরুঙ্গামারী, বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়া, রাজারহাট ও কুড়িগ্রাম থেকে হাজার হাজার মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে এক নজর দেখতে অপেক্ষা করে। তারা সভাস্থলে যেতে না পারলেও চিলমারীর শহরের পথে পথে খন্ড খন্ড মিছিল করে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানায়। প্রধানমন্ত্রী সোয়া ১২টা থেকে  পৌনে ১টা পর্যন্ত প্রায় ৩০ মিনিট ধরে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান শেষে দুপুর পৌনে ২টার দিকে তিনি হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 7259749706962812370

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item