পীরগঞ্জের ভেন্ডাবাড়ীর জয়দুল! নিখোঁজ না হত্যা?

মামুনুর রশিদ মেরাজুল-পীরগঞ্জ (রংপুর) থেকে ঃ

পীরগঞ্জের জয়দুল ইসলাম (২০) নামের এক যুবককে ৩ বছর ধরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এলাকাবাসীর ধারনা তাকে হত্যার পর মোটা টাকায় পরিবারের সাথে দফারফা করে এলাকাতেই লাশ পুঁতে রাখা হয়েছে। তবে পরিবারের দাবী জয়দুল চুরি করে, সে নিজেই বাড়ী থেকে বের হয়ে গেছে। সম্প্রতি উপজেলার ভেন্ডাবাড়ী গ্রামে ওই ঘটনা ফাঁস হলে ভেন্ডাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ তদন্ত শুরু করেছেন।সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ভেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের ভেন্ডাবাড়ী গ্রামে আনছার আলী তার স্ত্রী জয়গুন নাহার ও ২ ছেলে (জয়দুল ও ইজারুল) এবং ২ কন্যা (ইসমোতারা ও ফুল মাই) নিয়ে বসবাস করছেন। আনছার পেশায় দিনমজুর, ভেন্ডাবাড়ী বাজারে ছোট্ট খিলি পানের দোকানদারী করেন। ওই দোকানের আয়েই চলে তার ৬ সদস্যের সংসার। তার বড় ছেলে অবিবাহিত জয়দুল ইসলাম (২০) ভেন্ডাবাড়ী হাটের ফারুকের মিষ্টির দোকানের কর্মচারী ছিল। জয়দুলের বিরুদ্ধে ছিচকে চুরিরও অভিযোগ রয়েছে। তাকে চুরির অভিযোগে কয়েকবার থানাতেও দেয়া হয়েছিল। এ ব্যাপারে ওই ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর হোসেন মন্ডল জোর দিয়ে বলেন- জয়দুল ছিচকে চোর। চুরির সময় ধরা পড়ায় মানুষ তাকে মারধর করে আমাকে দিলে আমি থানায় দিয়েছি। সে ৫/৬ বার থানায় গেছে।
প্রায় ৩ বছর আগে একটি এনজিও’র একটি কম্পিউটার চুরি গেলে জয়দুল কে থানায় সোপর্দ করা হয়। প্রায় ২ মাস হাজতবাসের পর জয়দুল বাড়ীতে আসে। এরপর আবারো একটি কম্পিউটার চুরির অভিযোগে সন্দেহের বশে জয়দুলকে তার বাড়ী থেকে ধরে ভেন্ডাবাড়ী ইউপি কার্যালয়ে নিয়ে এসে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। সে দিন তাকে মারধরের পর সন্ধ্যায় তার চিকিৎসা করানো হয়েছে বলে বিশ্বস্ত সুত্র জানিয়েছে। কয়েকজন গ্রাম পুলিশ সদস্যও ওই ঘটনার স্বাক্ষী রয়েছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান। এরপর জয়দুলকে থানায় দেয়ার কথা হলেও রাতে থানায় দেয়নি এবং ওই রাতের পর থেকেই তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ইউপি কার্যালয়ে জয়দুলকে মারধরের কথা অস্বীকার করে চেয়ারম্যান মঞ্জুর হোসেন বলেন- কম্পিউটার চুরির ব্যাপারে কাউকে ধরা হয়নি। ওর (জয়দুল) বাবা-মাই চুরির অভিযোগে মারধর করেছে। জয়দুলের মা জয়গুন বলেন- অন্যায়ভাবে আমার ছেলেকে মারধর করা হয়েছে। ছেলে মারা গেছে, না বেঁচে আছে। তাও জানি না। অনেক জায়গায় খোঁজ করেছি। তাকে ফিরে পেতে থানায় জিডি, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি বা মাইকিং করা হয়নি বলে তিনি জানান। ভেন্ডাবাড়ী হাটে জয়দুলের বাবা আনছার আলী পানের দোকানে গিয়ে কথা হলে তিনি বলেন- ছেলে হারিয়ে গেছে। কোথায় আছে, জানি না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই এলাকার অনেকেই বলেছেন- জয়দুল হারিয়ে যাবার কয়েকদিন পর থেকেই আমাদের গ্রামে মানূষ মরে পঁচে যাওয়ার দুর্গন্ধ পেয়েছি। আমরা বলাবলির পর আর দুর্গন্ধ পাইনি। তারা আরও বলেন- জয়দুলকে মেরে ফেলে বিষয়টি মোটা টাকায় দফারফা করা হয়েছে। ভেন্ডাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ শাহীনুর সিদ্দিকী বলেন- বিষয়টি শোনার পর জয়দুলের বাবা-মাকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। জয়দুল জঙ্গী, না সে নিখোঁজ বা তাকে হত্যা করা হয়েছে, সে ব্যাপারে তদন্ত করছি। ওসি রেজাউল করিম বলেন- এ রকম ঘটনা শুনিনি। রংপুরের সার্কেল-বি এএসপি সাইফুর রহমান সাইফ বলেন- কেউ হারিয়ে গেলে আইনগত প্রক্রিয়া বা পেপারে বিজ্ঞাপন দিতে হয়। কিন্তু পীরগঞ্জের ছেলেটি (জয়দুল) নিখোঁজের ব্যাপারে তা না করায় সন্দেহের সৃষ্টি হচ্ছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখবো।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 779938135830169212

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item