পীরগাছায় অবশেষে যুবকের বিয়ে সম্পন্ন যৌতুকের টাকা পকেটস্থ

ফজলুর রহমান, পীরগাছা(রংপুর)প্রতিনিধিঃ

রংপুরের পীরগাছায় অবশেষে স্থানীয়ভাবে মোটা অংকের যৌতুকের বিনিময়ে সালিশের মাধ্যমে যুবকের বিয়ে সম্পন্ন হলো। সালিশের নির্ধারিত যৌতুকের টাকা পকেটস্থ করেছেন সালিশকারীরা।
 জানা যায়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাত ১১ ঘটিকার সময় প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় আবুল হোসেন, সাইফুল ইসলাম ও কবির হোসেন এর নেতৃত্বে ১২/১৫ জন পরিকল্পিত ভাবে সন্ত্রাসী কায়দায় রহমতচর গ্রামের আবুল কাশেম এর পুত্র আল-আমিনকে জোর পূর্বক একই গ্রামের কাফাতুল্লা এর মেয়ে নুরশাহীর সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে নিয়ে যান। তারা স্থানীয় আফাজ উদ্দিন এর তত্বাবধানে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আল-আমিন ও নুরশাহীকে আসাদ-মতিউর আনন্দলোক বিদ্যালয়ে তালাবদ্ধ করে রাখেন। পরে আবুল হোসেন ও আফাজ গং আবুল কাশেম এর নিকট ৫০ হাজার টাকা দাবী করেন, না দিলে তাকে চেড়ে দেওয়া হবে না । বরং   নুরশাহী এর সাথে বিয়ে দেয়া হবে বলে জানান আবুল হোসেন ও আফাজ গং। এক পর্যায়ে রাত পোহালে আল-আমিনকে কাফাতুল্লা এর মেয়ে নুরশাহী বেগম(২৫) এর সাথে বিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে তার বাড়িতে নিয়ে যান। আল-আমিনকে উদ্ধারের উদ্দেশ্যে তার দুলাভাই শফিউল ইসলাম পীরগাছা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে যুবককে উদ্ধার করেন। ওইদিন নুরশাহী বেগম বিয়ের দাবীতে থানায় উপস্থিত হন এবং স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার স্বার্থে ছেলে ও মেয়েকে ছেড়ে দেন থানা পুলিশ । স্থানীয়ভাবে মীমাংসা না হওয়ায় মেয়ের ভাই বাদী হয়ে আল-আমিন এর বিরুদ্ধে পীরগাছা থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলা করার পরে গত রোববার গভীর রাতে স্থানীয় ব্যাক্তিবর্গগণ ঘরোয়া সালিশের মাধ্যমে ২লক্ষ টাকা যৌতুকের বিনিময়ে কপোত-কপোতীর বিয়ের নিমিত্তে আপোষ-মীমাংসা হন। অবশেষে স্থানীয় নিকাহ রেজিষ্টার দ্বারা বিয়ে রেজিট্টি ও বিয়ে পড়ানো হয়। সালিশের যৌতুক হিসেবে বর আল-আমিনকে ২ লক্ষ টাকা দেওয়ার জন্য মেয়ে পক্ষের নিকট থেকে নেওয়া হলেও ছেলের অভিভাবকের হাতে দেওয়া হয়েছে ১লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। বাদবাকী ৪০ হাজার টাকা স্থানীয় সালিশ-বৈঠকে থাকা ব্যাক্তিবর্গগন খরচের জন্য পকেটস্থ করেছেন বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য যে, গত বছর ওই মেয়ের সাথে স্থানীয় প্রেমিক আব্দুল বারেক এর সাথে এলাকাবাসী আপত্তিকর অবস্থায় আটক করেন। প্রেমিক আব্দুল বারেক এর পিতা আলিম উদ্দিন ও পেমিকার বাবা কাফাতুল্লা বাদী হয়ে পীরগাছা থানায় একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টা-পাল্টী মামলা দায়ের করেন। পাল্টা-পাল্টী মামলা দায়ের করার কারণে অবস্থা বেগতিক হলে স্থানীয়ভাবে তৎকালীন সময়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত ইউপি সদস্য সালিশের মাধ্যমে প্রেমিক আব্দুল বারেক এর ১লাখ টাকা জরিমানা সাপেক্ষে বিষয়টি মীমাংসা করেন। এক বছর পেরিয়ে যেতে না যেতেই স্থানীয় প্রভাবশালীর সহযোগিতায় যুবক আল-আমিন এর সাথে নাটক সাজিয়ে অবশেষে বিয়ের পিড়িতে বসলেন নুরশাহী বেগম। ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে এলাকার মানুষের মাঝে চাঞ্চল্যকর অবস্থার সৃষ্টি করেছে।