সীমান্ত ব্যাংকের যাত্রা শুরু

ডেস্ক:
অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করলো বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পরিচালনাধীন সীমান্ত ব্যাংক। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিজিবি সদর দফতর পিলখানার ফজলুর রহমান খন্দকার মিলনায়তনে বিজিবি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাংকের কর্মসুচীর অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। বিজিবি’র সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের কল্যাণের লক্ষ্যে সীমান্ত ব্যাংক কাজ করবে। সীমান্ত ব্যাংকের উদ্বোধন এ বাহিনীর সকল সদস্যের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ঈদের বিশেষ উপহার উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি আশা করি, এই ব্যাংক বিজিবির সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখবে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বিজিবি সদস্যদের শৃঙ্খলা, আনুগত্য ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান বিজিবি’র সুনামকে অক্ষুণœ রাখার পাশাপাশি সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে দেশ ও জাতির স্বার্থ রক্ষা ও উন্নয়নে আরও নিবেদিত হবারও আহবান জানান। প্রসঙ্গত এ বছর ২১ জুলাই সীমান্ত ব্যাংক বাংলাদেশ বাংকের ‘সিডিউলড ব্যাংক’ হিসেবে নথিবদ্ধ হয় এবং এ বছর ১ আগস্ট এটি গেজেডভূক্ত হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামন খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোজাম্মেল হক খান, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। সীমান্ত ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং বিজিবি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ স্বাগত বক্তৃতা করেন। মন্ত্রীবর্গ, সংসদ সদস্য, তিনবাহিনী প্রধান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ উচ্চপদস্থ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা শৃঙ্খলা, আনুগত্য ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান বিজিবি’র সুনামকে অক্ষুণœ রাখবেন। সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে দেশ ও জাতির স্বার্থ রক্ষা ও উন্নয়নে আরও নিবেদিত হবেনতিনি বলেন, এ দেশটি আমাদের সকলের। আসুন, সকলে মিলে কাজ করে বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করি। তিনি আরও বলেন, আজ বিজিবির প্রতিটি সদস্যদের জন্যও বিশেষ আনন্দের দিন। মাত্র কয়েকদিন পর পবিত্র ঈদ-উল-আজহা। সীমান্ত ব্যাংকের উদ্বোধন এ বাহিনীর সকল সদস্যের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ঈদের বিশেষ উপহার।
সংসদ নেতা বলেন, আমি আশা করি, এই ব্যাংক বিজিবি’র সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখবে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী প্রথম গ্রাহক হিসেবে নতুন প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকটিতে একটি একাউন্ট খোলেন।
অনুষ্ঠানে সীমান্ত ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোখলেসুর রহমান ব্যাংকটির ওপর একটি অডিও ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। শেখ হাসিনার চিন্তাপ্রসূত এ বেসরকারি খাতের ব্যাংকটির যাত্রা শুরুর মাধমে বিজিবি সদস্যদের দীর্ঘদিনের একটি স্বপ্ন পূরণ হল। তিনি বলেন, স্বনির্ভরতা অর্জনে প্রতিটি বাহিনীকে আমরা সহায়তা করতে চাই। আজ যে সীমান্ত ব্যাংক চালু হচ্ছে তা বিজিবি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট-এর একটি স্বনির্ভর প্রতিষ্ঠান। আমি আশা করি, ‘বিজিবি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট’ আরও নতুন নতুন উপার্জনশীল প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করবে।
২০১৪ সালে পিলখানায় অনুষ্ঠিত দরবার হলে আপনারা আমার কাছে একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার আবেদন জানিয়েছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি তৎক্ষণাৎ তাতে সম্মতি দেই। বিজিবি মহাপরিচালকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেই। তিনি বলেন, গত বছর বিজিবি দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি সীমান্ত ব্যাংকের ‘লোগো’ উন্মোচন করেন। একইসাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সীমান্ত ব্যাংকের ‘লেটার অব ইনটেন্ট’ বিজিবিকে হস্তান্তর করেন। বিজিবি’র ৪০০ কোটি টাকার প্রাথমিক মূলধন যোগান দেয়াসহ অন্যান্য কাজ শেষে আজ থেকে সীমান্ত ব্যাংকের আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাংকের আয় বিজিবি’র মুক্তিযোদ্ধা সদস্য, কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সদস্য ও তাদের পরিবারের কল্যাণে ব্যয় করা হবে। এ ব্যাংক সহজ শর্তে ঋণ প্রদান, পেনশন স্কিম, গৃহনির্মাণ ঋণ, দুরারোগ্য রোগের জন্য দেশে-বিদেশে চিকিৎসা সহায়তা, কৃষি ঋণ, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মত বহুবিধ খাতে ঋণ সহায়তা প্রদান করবে। এছাড়া সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী মানুষের কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তা প্রদান করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিজিবি’র নিজস্ব উদ্যোগে পরিচালিত ‘আলোকিত সীমান্ত’ ও ‘সমৃদ্ধির পথে সীমান্ত’-এর মতো বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্প বাস্তবায়নেও এই ব্যাংক সহায়তা দেবে, যা সীমান্ত অপরাধ রোধে ভূমিকা রাখবে। বিজিবি সদস্যের যোগ্য সন্তানদের এ ব্যাংকে নিযোগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে, যা বেকারত্ব হ্রাসে ভূমিকা রাখবে।
মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার অবিচ্ছেদ্য অংশীদার হিসেবে বিজিবি তাদের উপর অর্পিত সকল দায়িত্ব গভীর দেশপ্রেম ও নিষ্ঠার সাথে পালন করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেসামরিক প্রশাসনকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা প্রদান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলা ও দেশগঠনমূলক বিভিন্ন কর্মকা-ে বিজিবি’র ভূমিকা ও পেশাদারিত্ব আজ সর্বমহলে প্রশংসিত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ও পরে বিএনপি-জামাতের আগুন দিয়ে নিরীহ মানুষ পুড়িয়ে হত্যা, সরকারি সম্পদ ধ্বংস, নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি সদস্যরা যে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে তা প্রশংসার দাবি রাখে।
তিনি বলেন, সীমান্তে বিজিবি’র কঠোর অবস্থানের ফলে চোরাচালান, মাদক পাচার, নারী-শিশু পাচার ও সীমান্ত অপরাধ অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। বিজিবি-বিএসএফ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারের ফলে সীমান্তে নিহতের ঘটনা কমে এসেছে। এছাড়া কোন কারণে বিএসএফ’এর হাতে বাংলাদেশি নাগরিক আটক হলে প্রয়োজনীয় যোগাযোগের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 1201633387704131901

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item