আপডেটঃচাঞ্চল্যকর রিশা হত্যার খুনি ওবায়দুল ডোমারে গ্রেফতার

আনিছুর রহমান মানিক, আবু ফাত্তাহ্ কামাল পাখি,ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়ঃ
ঢাকার উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশার (১৫) হত্যাকারী বৈশাখী টেইলার্স কাটিং মাস্টার ওবায়দুল হক(২৮) অবশেষে গ্রেফতার হয়েছে। আজ বুধবার সকাল আটটায় নীলফামারীর ডোমার উপজেলার সোনারায় বাজারে একটি হোটেলে নাস্তা করার সময় এলাকাবাসী ধরে ডোমার থানা পুলিশ খবর দিলে ডোমার থানা পুলিশ , র‌্যাব ও ডিএমপি পুলিশ তাকে গ্রেফতারে সক্ষম হয়।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা হতে ডোমারের বিভিন্ন স্থানে ডিএমপি পুলিশ, ডোমার থানা পুলিশ, র‌্যাব তাকে ধরতে সাঁড়াশী অভিযান পরিচালনা করছিল। 
ডোমার থানার ওসি আহমেদ রাজিউর রহমান জানান গোপন সংবাদে থানার এসআই ফজলুল হকের নেতৃত্বে  চাঞ্চল্যকর রিশা হত্যা কান্ডের ৭দিনের মাথায় খুনি ওবায়দুল হক গ্রেফতার হলো।
খুনি ওবায়দুর গ্রেফতারের পর পর ডোমার থানায় ছুটে যান নীলফামারী পুলিশ সুপার জাকির হোসেন খান। তিনি জানান এই আসামীকে গ্রেফতারে সারারাত ধরে ডোমারের বিভিন্ন স্থানে অভিযানের পর সকালে সোনারায় বাজারে  গ্রেফতার করা হয়।  তাকে এখন ঢাকা পাঠানো প্রস্তুতি চলছে। খুনি ওবায়দুল ঠাকুরগাঁও গোয়ালপাড়া মহল্লার আব্দুস সামাদ ও চান্দনী বেগমের ছেলে। তাদের গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের মিরাটঙ্গী গ্রামে।
ডোমারের হরিনচড়া গ্রামের আফতাব উদ্দিনের ছেলে মাংস বিক্রেতা দুলাল হোসেন (৪০) ,সোনারায়ের  ইউনিয়নের অটোচালক ইসমাইল হোসেন জানান সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রিশার খুনি ওবায়দুলকে সোনারায় বাজারে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখি ।এর আগে এই খুনির ছবি বিভিন্ন সংবাদপত্রে ও ফেসবুকে দেখেছিলাম। রফিকুল ইসলামের হোটেলে নাস্তা খাওয়াই। চেহারা মিলে যাওয়ায় তাৎক্ষনিকভাবে ডোমার থানার এস,আই ফজলু মোবাইল করে  খবরটি জানালে ডোমার থানার পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে। এরপর ঘটনাস্থলে আসে ডিএমপি পুলিশ ও র‌্যাব।
ডোমারে অবস্থানকারী এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই)  মোশারফ হোসেন জানায় গত ২৪ আগস্ট (বুধবার) উইলস ফ্লাওয়ার স্কুলের সামনের ফুটওভার ব্রিজে রিশাকে ছুরিকাঘাত করে বৈশাখী টেইলার্স কাটিং মাস্টার ওবায়দুল হক। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত রবিবার (২৮আগস্ট) রিশা মারা যায়। রিশাকে ছুরিকাঘাত করার পরদিন তার মা তানিয়া হোসেন বাদি হয়ে রমনা থানায়
একটি মামলা দায়ের করেন। রিশার মৃত্যুর পর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।
 ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষে রিশা হত্যার ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর হিসাবে আখ্যায়িত করা  সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করে।
তদন্তে পুলিশ পেয়েছে ওবায়দুল প্রায়ই রিশার স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতো। ঘটনার দিনও সে সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিল। রিশা আসলে তার সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় ওবায়দুল।
খুনি ওবায়দুল ঢাকা হতে পালিয়ে প্রথমে দিনাজপুরের বীরগঞ্জে তার বোন ও দুলাভাইয়ের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছিল। সেখানেও পুলিশ অভিযান চালায়। খুনিকে পাওয়া না গেলেও  ওবায়দুলের বোন মোছাম্মৎ খাদিজা বেগম (৩৬) ও দুলাভাই মো. খাদেমুল ইসলামকে (৪৬) আটক করে পুলিশ। তাদের নিয়ে ডোমারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় ।তাদের ঢাকায় নেয়া হয়েছে।
গত সোমবার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টার দিকে রমনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই)  মোশারফ হোসেন বীরগঞ্জ থানা পুলিশের সহযোগিতায় ঘাতক ওবায়দুলের নিজ বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের মিরাটঙ্গী গ্রামে ও ঠাকুরগাঁও শহরের গোয়ালপাড়ার বাড়িতে অভিযান চালায়।

এলাকাবাসী জানায় সেখান হতে পালিয়ে খুনি ওবায়দুল নীলফামারীর ডোমার দুলাভাই মো. খাদেমুল ইসলামের ছোট ভাই ও পঞ্চগড় জেলার পার্শ্ববতী দেবীগঞ্জ উপজেলার ব্রাকের সোনাহার শাখার হিসাবরক্ষক খুসবু আলমের খোঁজে ভুলক্রমে ডোমার ব্রাকে আসে ॥খুসবু আলমের খোজ করে ।ব্র্যাকের ডোমার শাখার হিসাবরক্ষক সাহাদাৎ হোসেন তাকে জানায়,খুসবু আলম এখানে নয় দেবীগঞ্জ উপজেলার সোনাহার শাখায় চাকুরী করে ।তা ম্যাধ্যমে খুসবু সাথে মোবাইলে কথা বলে টাকা ধার চায় ।খুসবু আলম মোবাইলে ওবায়দুরকে ব্র্যাক অফিসে অপেক্ষা করতে বলেন, টাকা নিয়ে আসছি ।সাহাদাৎকেও জানায় তাকে (ওবায়দুর) চা খেয়ে ধরে রাখার ব্যবস্থা কর ।অপরদিকে খুসবু আলম বীরগঞ্জ পুলিশকে জানান,ওবায়দুর আমার খোজে ভুলক্রমে ডোমার ব্র্যাক অফিসে অবস্থান করছে ।আপনারা আসেন ,ডোমার পুলিশকে খবর দেন ।আমিও ডোমারে যাচ্ছি ।বীরগঞ্জ পুলিশ ও রমনা জোনের ডিএমপি পুলিশ ডোমার থানাকে মোবাইল করলে খুসবু আসার আগে ডোমার পুলিশ ডোমার ব্র্যাক অফিসে অভিযান চালালে সটকে পড়ে ওবায়দুল ।সারারাত ব্র্যাক অফিসের পিছনে বাশঁঝাড়ে রাত কাটায় ।রাত কাটানোর পড়ে নীলফামারী যাওয়ার পথে ডোমারের  সোনারায় বাজারে গেলে এলাকাবাসী তাকে আটক করে ডোমার পুলিশকে খবর দেয় ।মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, প্রায় সাত মাস আগে জামা বানাতে গেলে টেইলার্সে পরিবারের মোবাইল ফোন নাম্বার দেওয়া হয়। আর সেই মোবাইল ফোন নাম্বারের সূত্র ধরেই রিশাকে উত্যক্ত করে আসছিল ওবায়দুল। একপর্যায়ে নাম্বারটি বন্ধ করে দিলে ওবায়দুল আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৪ আগস্ট উইলস ফ্লাওয়ার স্কুলের সামনের ফুটওভার ব্রিজে রিশাকে ছুরিকাঘাত করে ওবায়দুল পালিয়ে যায়।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 8461613244330381216

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item