জালিয়াতির রকমফের! ৫৮ বছরের বৃদ্ধকে ৩৫ বছর দেখিয়ে মাদরাসায় নৈশ্য প্রহরী নিয়োগ!

আদালতের আদেশ কি হয় হোক, আমরা নিয়োগ দিয়েছি বললেন মাদরাসার অধ্যক্ষ

মামুনুর রশিদমেরাজুল-পীরগঞ্জ (রংপুর) থেকে ঃ

পীরগঞ্জে আইন মানছেন না এক মাদরাসার অধ্যক্ষ। তথ্য গোপন করে ৫৮ বছরের এক ব্যক্তিকে ৩৫ বছর দেখিয়ে মাদরাসায় নৈশ্য প্রহরী নিয়োগ দেয়ার ঘটনাটি ফাঁস হওয়ায় নিয়োগটি বাতিলের জন্য ডিজির প্রতিনিধি নির্দেশ দিয়েছেন। তারপরও তথ্য গোপন করে এমপিওভুক্তির জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে কাগজপত্র প্রেরন করা হয়েছে। উপজেলার কুতুবপুর সদরা আমিনিয়া সিনিয়র আলিম মাদরাসায় ওই ঘটনা ঘটেছে।
মামলা ও এলাকাবাসীর সুত্রে জানা গেছে, মহিলা কোঠা পুরন না হওয়া উপজেলার ওই মাদরাসায় আরবী প্রভাষক ও নৈশ প্রহরী পদে গত ২৮ মে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলে প্রভাষক পদে- জয়পুরহাটের ওয়াহেদা খাতুন ও হালিমা খাতুন এবং সিরাজগঞ্জের নুরুন নাহার আবেদন করেন। এরপর গত ৩ আগষ্ট মাদরাসাটির অধ্যক্ষ একই পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেন। প্রভাষক পদে মহিলা প্রার্থীদের ইন্টারভিউ কার্ড না দিয়ে মাদরাসাটির অধ্যক্ষ সরকারী কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষকে ডিজির প্রতিনিধি করে নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ নির্ধারন করলে চাকরী প্রত্যাশী ওয়াহেদা খাতুন রংপুর আদালতে মামলা (অন্য নং- ১৩০/১৫) করেন। আদালত মাদরাসাটির নিয়োগ বন্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা এবং অধ্যক্ষ ও গভর্নিং বডির সভাপতিকে আদালতের কাছে জবাব দেয়ার জন্য শোকজ করে। পরে আদালত ওই নিয়োগ বন্ধে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন। ওই তথ্য গোপন করে আবারো গত ৮/১১/২০১৫ইং মাদরাসার অধ্যক্ষ রংপুর সরকারী বেগম রোকেয়া কলেজের অধ্যক্ষকে ডিজির প্রতিনিধি করে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়। বিষয়টি প্রকাশ হলে ডিজির প্রতিনিধি তার দপ্তরের স্মারক নং-সবেরোকরং/৩০৫৪/২০১৫, তাং-১৫/১১/২০১৫ইং এ সম্পূর্ন নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দেন। তা না করায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালকের কাছে নিয়োগ বাতিল, এমপিওভুক্ত না করা এবং ওই মাদরাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ডিজির প্রতিনিধি অনুরোধ করেন। এ ব্যাপারে ডিজির প্রতিনিধি বেগম রোকেয়া কলেজের অধ্যক্ষ ড. আব্দুল লতিফ মিয়া বলেন- তথ্য গোপন করে নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ায় তা বাতিলের নির্দেশ দিয়েছি এবং এমপিওভুক্ত না করার জন্য মাউশির ডিজির কাছে অনুরোধ করেছি। তারপরও তথ্য গোপন করে পীরগঞ্জ মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের মাধ্যমে এমপিওভুক্তির জন্য কাগজপত্র প্রেরন করা হয়েছে। এটা বড় জালিয়াতি।
অপরদিকে ওই মাদরাসায় নৈশ্য প্রহরী পদে নিয়োগপ্রাপ্ত রইচ মিয়ার ভোটার তালিকা অনুযায়ী বর্তমান বয়স ৫৮ বছর হলেও তাকে ৩৫ বছর দেখিয়ে অধ্যক্ষ যোগদান করে নিয়েছেন অভিযোগ উঠেছে। রইচ মিয়া উপজেলার মিঠিপুর ইউনিয়নের কাশিমপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর পুত্র। কাশিমপুর ভোটার এলাকার কোড নং- ১৫৬৭, ডাকঘর- কাশিমপুর, ভোটার ক্রমিক নং-০৭৮৯, ভোটার নং- ৮৫১৫৬৭৫৭৬৬১০ এ তার জন্ম তারিখ- ১৩/০৫/১৯৫৭ রয়েছে। তার মাতা- আম্বিয়া বেগম, পেশা- কৃষক, তিনিই উপজেলার জাহাঙ্গীরাবাদ দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৮ম শ্রেনী পাশের প্রত্যয়নপত্র নিয়ে এসে নৈশ প্রহরী পদে যোগদান করেছেন। গত ১৩/০৪/২০১৫ইং তারিখে ইস্যুকৃত ওই প্রত্যয়নপত্রে তার জন্ম তারিখ ০১/০৬/১৯৮০ ইং রয়েছে। এ ব্যাপারে জাহাঙ্গীরাবাদ দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন- প্রত্যয়নপত্রটি আমরা ইস্যু করিনি। এটিতে ক্রমিক নং নেই, স্বাক্ষরেও জালিয়াতি করা হয়েছে। সেইসাথে রইচ মিয়া আমাদের এখানে ৬ষ্ঠ শ্রেনী থেকে ৮ম শ্রেনী পর্যন্ত পড়ালেখা করারও রেকর্ড নেই। মাদরাসাটির অধ্যক্ষ একেএম রফিকুল ইসলাম বলেন- আদালতের আদেশ কি হয় হোক, আমরা নিয়োগ দিয়েছি। ডিজির প্রতিনিধি নিয়োগ বাতিল করতে পারেনা না। আর নৈশ্য প্রহরীর কাগজপত্রে কোন ত্র“টি নেই। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহতাব হোসেন বলেন- ঠিকভাবে কাগজপত্র পেয়েই এমপিওভুক্তির জন্য প্রেরন করা হয়েছে। জালিয়াতির প্রমান পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে তিনি আদালতের নিষেধাজ্ঞা, ডিজির প্রতিনিধির নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ সম্পর্কে কোন মন্তব্য করেননি।

পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 8484878702846145400

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item