যুদ্ধাপরাধী কাসেম আলীর ফাঁসি বিলম্বের নতুন কৌশল!

ডেস্কঃ
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে জাড়িত থাকার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলায় মৃত্যুদ- প্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলীর ফাঁসিকে আরও বিলম্ব করতে নতুন কৌশল গ্রহণ করেছে তিনি ও তার পরিবার। এর আগেও বিভিন্ন কৌশলে মামলা, আপিল ও রিভিউ শুনানির কার্যক্রম অনেক বিলস্বিত করেছে তারা। আসলে এরই ধারাবাহিতকতায় এখন বলছেন, নিখোঁজ থাকা তাদের ছেলেকে না পাওয়া পর্যন্ত প্রাণভিক্ষার আবেদন নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত তারা দিতে পারছেন না। আজ বুধবার দুপুরে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে থাকা যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা মীর কাসেমের সাথে দেখা করে এসে তার স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুন এ মতামত দেন। সাক্ষাদের সময় তার ২ মেয়ে সুমাইয়া রাবেয়া ও তাহেরা তাসনিম, পুত্রবধূ শাহেদা তাহমিদা ও তাহমিনা আক্তার এবং ভাতিজা হাসান জামাল তার সাথে ছিলেন। কারাগারে তারা প্রায় ২ ঘণ্টা কথা বলেন। এর পর বিকাল পৌনে ৪টার দিকে কারাগার থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
পরিবারের অভিযোগ, মীর কাসেমের ছেলে মীর আহমেদ বিন কাসেমকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে গত ১০ অগাস্ট পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে পুলিশ বলছে, এ বিষয়ে তারা কিছুই জানেনা। তবে ফাঁসি বিলম্বের বিষয়ে আইজি প্রিজন গণমাধ্যমকে জানান, কোনভাবেই তিনি ৭ দিনের বেশি সময় নিতে পারবেন না
কাসেমপতœী বলেন, আমার ছেলে ও আইনজীবী আহমেদ বিন কাসেমকে সাদা পোশাকের পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। তাকে না পাওয়া পর্যন্ত আমরা প্রাণভিক্ষা বা অন্য কোনো বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারছি না। এরপর আর কোনো কথা না বলে এম্বুলেন্সে চড়ে চলে যান যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা মীর কাসেমের পরিবারের ছয় সদস্য। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক বলেন, পরিবারের সদস্যরা প্রায় ২ ঘণ্টা মীর কাসেমের সাথে কথা বলেছেন।
এা আগে গতকাল মঙ্গলবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রিভিউ আবেদন খারিজ করে দিলে কারাগারে বসে এক ব্যান্ডের রেডিওর মাধ্যমে সে খবর জানতে পারেন মীর কাসেম। আজ বুধবার সকালে তাকে তার রিভিউ খারিজের রায় পড়ে শোনায় কারা কর্তৃপক্ষ। কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি না- সে সিদ্ধান্ত জানাতে কাসেম সময় চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেল সুপার।
জানা যায়, সব বিচারিক প্রক্রিয়ার নিষ্পত্তি হওয়ায় জামায়াতের অর্থ যোগানদাতা হিসেবে পরিচিত মীর কাসেমের সামনে এখন কেবল ক্ষমা প্রার্থনার সুযোগই বাকি। তিনি প্রাণভিক্ষার সুযোগ নিতে চাইলে তার দরখাস্ত রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে। রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের পরই দ- কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হবে। আর আবেদন না করলে, অথবা আবেদন করেও রাষ্ট্রপতির অনুকম্পা না পেলে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কারা কর্তৃপক্ষ দ- কার্যকর করবে।
এদিকে কারাগারের এক কর্মকর্তা জানান, সকালে রায় পড়ে শোনানোর পর কিছুটা চিন্তিত দেখাচ্ছিল মীর কাসেমকে। তার চোখে-মুখে ছিল উদ্বেগ। ৬৩ বছর বয়সী মীর কাসেম আলী ২০১২ সাল থেকে এ কারাগারে রয়েছেন। শুরুতে কারাগারে ডিভিশন পেলেও ২০১৪ সালে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদ-ের রায়ের পর তাকে পাঠানো হয় কনডেম সেলে।
কারা কতৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, প্রাণভিক্ষা না চাইলে যে কোন সময় তার ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে। ইতোমধ্যেই জল্লাদ প্রস্তুত করাসহ সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন করে রাখা হয়েছে। আদালত সূত্রে জান যায়, মঙ্গলবার সকালে যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে আপিল বিভাগের দেয়া রায় প্রকাশের পর ট্রাইব্যুনাল হয়ে এ রায় সন্ধ্যার পর কারাগারে পৌঁছেছে। এখন এ রায় ফাঁসির আসামি কাসেমকে শোনায় কারা কর্তৃপক্ষ; জানতে চাইবে, তিনি কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনার কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি না। আদালতের সব বিচারিক প্রক্রিয়ার নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ায় জামায়াতের অর্থ যোগানদাতা হিসেবে পরিচিত মীর কাসেমের সামনে এখন কেবল ক্ষমা প্রার্থনার সুযোগই বাকি রয়েছে।
প্রসঙ্গত জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীকে ২০১২ সালের ১৭ জুন যুদ্ধাপরাধ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরের বছর ৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় তার যুদ্ধাপরাধের বিচার। গ্রেপ্তারের পর কাশিমপুর কারাগারেই রাখা হয়েছিল তাকে। শুরুতে ডিভিশন পেলেও ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদ-ের রায়ের পর তাকে ফাঁসির সেলে পাঠানো হয়। গত ৮ মার্চ আপিলের রায়েও কাসেমের সর্বোচ্চ সাজার আদেশ বহাল থাকে। এরপর ২০ জুন তাকে কাশিমপুর থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হলেও ২৬ জুলাই আবার কাশিমপুরে ফেরানো হয়। সেই থেকে তিনি ওই কারাগারেই আছেন।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 1313918849227560604

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item