আজ বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস

ডেস্কঃ
আজ সোমবার বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস- ২০১৬। প্রত্যেক বছরের মতো এবারও বিশে^র অন্যান্য দেশের পাশাপাশা বাংলাদেশে দিবসটি পালনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘কিশোরীদের জন্য বিনিয়োগ, আগামী প্রজন্মের সুরক্ষা। দিবসটিকে সামনে রেখে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা আলাদা বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে নতুন ও আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ও নিরাপদ বিশ্ব রেখে যেতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশের কিশোরীদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য ও প্রজনন সেবা নিশ্চিত করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। বাল্যবিবাহের মতো অন্যান্য সামাজিক ব্যাধি থেকে আমাদের কিশোরীদের রক্ষা করতে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। নতুন ও আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ও নিরাপদ বিশ্ব রেখে যেতে আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।
আবদুল হামিদ বলেন, জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশ হলো কিশোর-কিশোরী। কিশোরীরা আগামী প্রজন্মের ধারক। একজন কিশোরীর সুস্থতার ওপর নির্ভর করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুস্থতা। তাই আগামী প্রজন্মকে সুস্থ ও সুরক্ষিত করতে হলে কিশোরীদের বেড়ে ওঠাকে সুস্থ ও নিরাপদ করতে হবে। তাদের জন্য বিনিয়োগের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। আগামী বছরগুলোতে দেশের মোট প্রজনন হার ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারকে এরাই প্রভাবিত করবে।
বর্তমান সরকার এ প্রজন্মের শিক্ষা, জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের প্রজনন স্বাস্থ্যের পরিচর্যা নিশ্চিত করতে নানাবিধ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, সেবাদান কর্মীরা ঘরে ঘরে গিয়ে প্রতি মাসে ৩০ হাজার স্যাটেলাইট ক্লিনিকের মাধ্যমে পরিবার পরিকল্পনা সেবা এবং মা ও শিশুস্বাস্থ্য বিষয়ে সেবা ও পরামর্শ প্রদান করছে। তিনি বলেন, ‘ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা খাতের প্রতিটি স্তরে কিশোরীদের সেবা প্রদানের সুব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন তিনি।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে সুস্থ সবল জাতি গঠনে পরিবার পরিকল্পনা, মা-শিশু ও প্রজনন স¦াস্থ্যসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে দেশজুড়ে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত গড়ে ওঠা সকল সেবা-অবকাঠামোসমূহের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সকলকে আরো নিবেদিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস- ২০১৬’ উদ্যাপিত হচ্ছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্যÑ অর্থাৎ ‘কিশোরীদের জন্য বিনিয়োগ, আগামী প্রজন্মের সুরক্ষা’ যা দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।’
শেখ হাসিনা বলেন,বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশ কিশোরী। আজকের কিশোরী আগামী দিনের জননী। তাই এদের সুস¦াস্থ্য, শিক্ষা ও দক্ষতার ওপর দেশের ভবিষ্যৎ সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন অনেকখানি নির্ভর করে। তিনি বলেন, আমাদের সরকার কিশোরীদের মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করা এবং কন্যাশিশুকে সঠিকভাবে লালন ও সুশিক্ষা প্রদান করতে বিভিন্নমুখী কর্মসূচি বাস্তÍবায়ন করে যাচ্ছে। তিনি স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে বলেন,আমরা দেশব্যাপী কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স¦াস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রসহ অন্যান্য সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে কিশোরী, নারী ও শিশুদের স¦াস্থ্যসেবা দিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত গার্ল সামিটে ২০২১ সালের মধ্যে ১৫ বছরের নিচে বাল্যবিবাহকে শূণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনা, ২০২১ সালের মধ্যে ১৫-১৮ বছর বয়সের মধ্যে সংঘটিত বাল্যবিবাহের হারকে এক-তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনা ও ২০৪১ সালের মধ্যে বাল্যবিবাহমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক করেছি। মেয়ে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। এ সকল কার্যক্রমের ফলে কিশোরীদের উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধিত হয়েছে। জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তর করতে পারলেই দেশের সার্বিক উন্নয়ন ত্বরানি¦ত হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ জন্য সুনাগরিক হিসেবে কিশোরীদের গড়ে তোলার ব্যয়কে আমরা বিনিয়োগ হিসেবে মনে করি।
সরকার প্রধান বলেন, কিশোরীদের জন্য শৈশব থেকেই প্রয়োজন দেশপ্রেমের মহান শিক্ষা ও সঠিক দিক-নির্দেশনা। আমি আশা করি, কিশোরীদের সামাজিক, নৈতিক, প্রজনন স¦াস্থ্যসহ সার্বিক উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সকলে আরো ভূমিকা রাখবেন। ছেলে-মেয়ের মাঝে কোন বৈষম্য না করে তাদেরকে সমান সুযোগ দিয়ে কিশোরীদের জনসম্পদে পরিণত করতে মা-বাবা ও অভিভাবকগণকে আরো এগিয়ে আসতে হবে। এ কার্যক্রমে বেসরকারি সংগঠন, গণমাধ্যম, সচেতন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই। ‘বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস ২০১৬’-এর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন তিনি।//

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 8287879614675737384

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item