বন্যা ও ভাঙ্গনে দিশেহারা তিস্তাপাড়ের হাজারো পরিবার

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়,নীলফামারী ১৯ জুলাই॥
বন্যা ও ভয়াবহ ভাঙ্গনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তাপাড়ের হাজারো পরিবার। ভাঙ্গনের তীব্রতা এতোবেশী যে সোমবার বিকাল থেকে আজ মঙ্গলবার  দুপুর পর্যন্ত ঘর ভেঙ্গে আসবাসপত্র ও গবাধী পশু নিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবারগুলো তিস্তা বাঁধ ও উচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। তার উপর চলছে বৃস্টি। পলেথিন বা ত্রিপল দিয়ে কোন রকমে ঠাই নিয়েছে পরিবারগুলো। 
ওই সব এলাকার তিস্তা এখন ১৫টি চর ও চর গ্রাম গো-গ্রাসে গিলে খেতে শুরু করেছে।  সোমবার রাতেই ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম, টেপাখড়িবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহীন, খালিশা চাপানি ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান সরকার শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানির পটসহ প্রয়োজনীয় উপকরন বিতরন করেন বাঁধে ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলোর মাঝে। এ ছাড়া সেখানে ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডাঃ জেএ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে  মেডিকেল টিম রয়েছে।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজউিল করিম  বলেন, টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চরখড়িবাড়ী ও টাবুর চরের ২৮১টি ও খালিশা চাপানি ইউনিয়নের খোকার চরের ২৩টি পরিবারের জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ২ বান্ডিল ঢেউটিন ও নগদ ৬ হাজার টাকার প্রস্তাব ত্রান মন্ত্রানালয়ে পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসন মঙ্গলবার জরুরী ভিত্তিতে ৩৫ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করেন। বাধের আশ্রিত পরিবারদের জন্য ২টি নলকুপ ও ১০টি স্যানিটারী ল্যাট্রিন তৈরির কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন।
দীর্ঘ ৫৪ বছর বসবাস করার পর সর্বনাশা তিস্তা আমাগোর জমি জিরাত সব শ্যাষ কইরা দিলো, একই দিনে পথের ফকির বানে দিলো। মঙ্গলবার সকালে কথাগুলো বলেন একতার চরের দিঘীর পাড় গ্রামের মৃত আকবর আলী পুত্র বুধা মন্ডল (৮০)। তিনি আরও বলেন, তিস্তা আমাগো পথের ভিখারী বানায়ে দিল। একতার বাজার সংলগ্ন দিঘীর পাড়ের মৃত্য সয়ন আলী পুত্র মোসলেম উদ্দিন (৪২) বলেন,  আমাগোর বসতভিটা নিমিষেই তিস্তা বিলিন করে দিছে। একই এলাকার মৃত মইমুদ্দিনের স্ত্রী সুরতন বেওয়া (৫৫) জানায় তিনমাস আগে রোগভোগে মারা যায় তার ছেলে।  বাড়ির ভিটায় করব দিয়েছিল ছেলের বাবার পাশে। তিস্তার বন্যা আর ভাঙ্গন তার বাড়ির ভিটা সহ স্বামী সন্তানের কবর ভেসে নিয়ে গেছে। তিনি কান্না বিজরিত কন্ঠে বলেন  ৬জনের সংসার এখন কিভাবে চলবে।
 টেপাখড়িবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহীন বলেন তিস্তার পানি বিপদসীমার নিচে আসার সাথে সাথে চরখড়িবাড়ী ঝিঞ্জিরপাড়া, টাবুর চর, একতার বাজারসহ সহ¯্রাধিক পরিবারের বসতভিটা ও কয়েকশত হেক্টর জমি, স্কুল পুল কালভার্ট বিলিন হচ্ছে। নীলফামারীর জেলা প্রশাসক জাকীর হোসেন  জানায়, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের তালিকা করে সরকারী সকল সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। জরুরী ভিত্তিতে ৩৫ মেট্রিক টন চাল ও নগদ এক লাখ  ৫৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 5664099526956569810

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item