গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি: বামতীর বাঁধ ধ্বসে নদী গর্ভে
https://www.obolokon24.com/2016/07/gaibandha_22.html
মুহাম্মদ শামীম সরকার শাহীন, গাইবান্ধা প্রতিনিধি:-
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা, হরিপুর, কাপাসিয়া, শ্রীপুর,
কঞ্চিবাড়ি ও চন্ডিপুর ইউনিয়ন দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি
বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এতে বানের পানিতে ভাসছেন নদীদ্বয়ের চরাঞ্চলসহ কূলবর্তী সাড়ে ২৮ হাজার
পরিবারের মানুষ জন। এছাড়া,হরিপুর ইউনিয়নের পাড়াসাদুয়া মৌজায় তিস্তা নদীর
বামতীর ২শ ফুটবেড়িবাঁধ ধ্বসে নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় আরো কয়েকটি মৌজা
প্লাবিত হয়েছে। চরাঞ্চলে বসবাসরত বন্যা দুর্গত মানুষের ঘর-বাড়ি, পাট ক্ষেত,
শাক-সব্জি, মরিচ ক্ষেত, অগভীর নলকূপসহ অন্যান্য পানীয় জলের উৎসগুলো
নিমজ্জিত হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এসব বানভাসি মানুষ। এছাড়া তিস্তা নদীর
বিভিন্ন পয়েন্টে দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙ্গন। হুমকির মুখে পড়েছে বন্যা
নিয়ন্ত্রন বেড়িবাঁধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শত শত হেক্টর জমির তোষা পাট ক্ষেত,
বীজতলাসহ ঘর-বাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনা। ইতোমধ্যে বন্যার পানির খরস্রোতে উজান
থেকে নেমে আসা পানির ঢল ও ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকলে বন্যার ভয়াবহরূপ ধারণ
করার আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নুরুন্নবী সরকার বলেন- এর আগে বন্যা ও
নদী ভাঙ্গন কবলিত পরিবারগুলোর জন্য তিন দফায় ৩ লাখ ৮০ হাজার নগদ টাকা ও ৬
মেট্রিকটন ৯শ ৮০ কেজি চাল বরাদ্দ এসেছিল। তা বিতরণ করা হয়েছে।
গাইবান্ধা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকাশ চন্দ্র রায়
জানান, বর্তমানে তিস্তা নদীর পানি অপরিবর্তিত থাকায় এখন ২৪ দশমিক ১৯
সেন্টিমিটার। একই সময়ে রেকর্ড অনুযায়ি ব্রহ্মপুত্র নদের ১৯ দশমিক ২৮
সেন্টিমিটার থেকে এখন ১৯ দশমিক ২৩ এবং ঘাঘট নদীর পানি ০ দশমিক ০৬
সেন্টিমিটার রয়েছে। এদিকে বন্যা কবলিত হরিপুর ইউনিয়নের পাড়াসাদুয়া মৌজায়
তিস্তা নদীর বাম তীর বেড়িবাঁধের ২শ মিটার ধ্বসে যাওয়ায় আরো কয়েকটি মৌজায়
বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে বলে ইউপি সদস্য বিদ্যুৎ কুমার দেব সর্মা জানিয়েছেন।
বন্যা কবলিত রামডাকুয়া, তালুক বেলকা, মাঝবাড়ী,বেকরীর চর, জিগাবাড়ি,
পঞ্চানন, বেলকা নবাবগঞ্জ, কিশামত সদর, পূর্ব বেলকা, উজান তেওড়া, চর
চড়িতাবাড়ি, পাত্রখাতা, গেন্দুরাম, মাদারীপাড়া, লখিয়ারপাড়া, পাড়াসাদুয়া,
হাজারীর হাট, লালচামার, ভাটীকাপাসিয়া, উজান বুড়াইল, বোচাগাড়ি, ভাটী
বোচাগাড়ি, কালাইসোতার চর, বেকড়ির চর, বাদামের চর, পোড়ার চর, কেরানীর চরসহ
তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদীদ্বয়ের অন্যান্য চর ও কূলবর্তী বসবাসকারী বানভাসী
এসবমানুষজন গৃহপালিত পশু-পাখি, নারী-শিশু ও বয়বৃদ্ধদের নিয়ে এখনদুর্বিসহ
জীবন-যাপন করায় তারা বন্যা পরিস্থিতি ও নদী ভাঙ্গণের স্থায়ী সমাধান দাবী
করেন।