ডোমারে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলিতে অনিয়ম। উপবৃত্তির টাকার পরিবর্তে গলা ধাক্কা দিয়ে বিদায়

এ আই পলাশ:
জেলার ডোমার উপজেলার একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপবৃত্তির টাকা প্রদানে ব্যপক অনিয়ম সহ স্বজন প্রীতির অভিযোগ উঠেছে। অনেক বিদ্যালয়ে সুবিধা ভোগী অভিভাবকদের হুমকি-ধুমকী ও গলাধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানান, চলতি অর্থ বছরে উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলিতে জুলাই ২০১৫ থেকে  জুন ২০১৬ চার কিস্তির উপবৃত্তির টাকা একযোগে প্রদান করা হয়। চাহিদা অনুযায়ী উপবৃত্তির কার্ড সরবরাহ না থাকায় মাষ্টার রোলের মাধ্যমে সুবিধা ভোগীদের টাকা দিতে দেখা গেছে। অনেক শিক্ষক আতœীয় স্বজনদের তালিকা ভুক্ত করে উপবৃত্তির টাকা হাতিয়ে নেয়। সুবিধা ভোগীদের মাতা শিল্পী,রহিমা ও মেরিনা জানান উপজেলার কেতকীবাড়ী ইউনিয়নের দক্ষিন চান্দখানা বোদাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডবল কার্ডধারীদের ২৪০০ টাকার পরিবর্তে ২০০০ টাকা, একক কার্ডধারীদের ১২০০ টাকার পরিবর্তে ১০০০ টাকা ও ৫ম শ্রেনীর উত্তির্নদের ৫০০ টাকার পরিবর্তে ২৫০ টাকা করে প্রদান করা হয়। এসময় ৫ম শ্রেনীর উত্তির্ন ছাত্রী বন্যার পিতা রেজাউল ইসলাম প্রতিবাদ করলে তার মেয়ের নামে বরাদ্দকৃত উপবৃত্তির টাকা না দিয়ে হুমকী-ধুুমকী দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিভাবক মনোয়ারা জানান, আমার দুইটি ছেলে ১ম শ্রেনির ছাত্র রিফাত ও ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্র মনির ঐ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। তাই আমার নামে ডবল উপবৃত্তির কার্ড রয়েছে। ছবিও তোলা হয়েছে। আমি উপবৃত্তির টাকা তুলতে গেলে পূর্ব শত্রু“তার জের ধরে একজন উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক প্রকাশ্য বিদ্যালয়ের অফিস থেকে আমাকে হুমকির পর গলাধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। দক্ষিন চান্দখানা বোদাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তৈয়বুর রহমান জানান উপবৃত্তির চাহিদা দেয়া ছিল ৩৭৯২০০ টাকা কিন্তু বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩৬৯৩০০ টাকা। ঘাটতি পূরনের জন্য এ কাজ করতে হয়েছে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রমজান আলী জানান, প্রধান শিক্ষক প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তির টাকা কর্তন করার ঘটনা শুনেছি। তবে কবে উপবৃত্তির টাকা প্রদান করা হয়েছে তা আমাকে জানানো হয়নি। এমনকি উক্ত বিদ্যালয়ের স্লীপের ৪০ হাজার টাকা উত্তেলন করা হয়েছে কি-না তাও আমি জানি না ।তবে গোপন সূত্রে জানতে পেরেছি প্রধান শিক্ষক ¯ী­পের টাকা উত্তেলন করেছে। এলাকাবাসীর একটি সূত্র জানান প্রধান শিক্ষক তৈয়বুর রহমান ইতিপূর্বে বঙ্গবন্ধুর ছবি অবমাননা, বর্তমান প্রধান মন্ত্রির নির্দেশ অবমাননা সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তিনি বিভিন্ন বিদ্যালয়ের দালালি কাজ কর্ম নিয়ে অধীকাংশ সময় ঢাকায় পড়ে থাকেন। সেই সূত্র ধরে প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রানালয়ের এক উদ্ধর্তন কর্মকর্তার সাথে তার সু-সম্পর্ক গড়ে উঠেন। উক্ত কর্মকর্তার দোহাই দিয়ে তিনি সব বিষয়ে পাড় পেয়ে যান। সূত্রটি আরো জানান, প্রাধান শিক্ষক তৈয়বুর রহমান জামাতের নেতা,সহকারী শিক্ষক সলেমান আলী বিএনপির প্রভাবশালী নেতা। তারা নিয়মিত স্কুল না করলেও তাদের দাফটে এলাকার কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। এছাড়া সহকারী শিক্ষক সলেমান আলী জমি দখল ও মারপিঠ মামলার ১নং আসামী। ডোমার থানায় মামলা নং ১০ তাং:১৯/০৩/১৬।তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি রয়েছে। গত তিন মাস থেকে তিনি পালাতক থাকার পরও  প্রতি মাসে সরকারী বেতন ভাতা হাতিয়ে নিচ্ছে।
অপর দিকে ভোগডাবুরী ইউনিয়নের খানকায়ে কারামতিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপবৃত্তির টাকা প্রদানে স্বজন প্রীতি সহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এ বিদ্যালয়ে ছাত্রÑছাত্রীর উপস্থিতি তুলনা মূলক হারে কম থাকলেও উপবৃত্তি প্রদান কালে শতভাগ কোঠা পূরণ থাকে। অভিভাবক ও এলাকাবাসীরা জানান, উপবৃত্তির টাকা প্রদান কালে উক্ত বিদ্যালয়ে ঘটেছে তুঘলকী কারবার। যা সরেজমিনে তদন্ত কালে  সত্যতা বেরিয়ে আসবে। বিদ্যালয়ের অভিভাবক রাবেয়া জানান, আমার মেয়ে দুলালী ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্রী আমার নামে উপবৃত্তির ১২০০ টাকা বরাদ্দ থাকলেও তা দেয়া হয়নি। এমন ঘটনা অনেক রয়েছে । ইতিপূর্বে আমার মেয়ের বই কেড়ে নেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক অবায়দুর রহমান রাজু এ ঘটনাটি অস্বীকার করেন। সূত্রটি আরো জানান উক্ত বিদ্যালয়ের স্লীপের ৪০ হাজার টাকা আতœসাত ও নাম মাত্র বিদ্যালয় ভবনে রং-এর কাজ করে সংষ্কারের একলক্ষ টাকা হরিলুট করা হয়েছে। এরুপ অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে দক্ষিন কেতকীবাড়ি শান্তি নগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,দক্ষিন চান্দখানা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,দক্ষিন কেতকীবাড়ী তেলিপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ আরও অনেক বিদ্যালয় রয়েছে। এসমস্ত বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিতি খুবই নগন্ন থাকলেও উপবৃত্তির টাকা শতভাগ কোঠা পূরণ করা হয়ছে। ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাত দিয়ে সরাসরি উপবৃত্তির সুবিধা ভোগীদের হাতে টাকা প্রদানের নিয়ম থাকলেও এখানে তা আদৌ মানা হয়নি। ব্যাংকের লোকজন প্রতিটি বিদ্যালয়ের শিক্ষদের হাতে উপবৃত্তির টাকা তুলে দেয়। অভিভাবকরা জানান, ব্যংকের লোক জনের পরিবর্তে শিক্ষকরা উপবৃত্তির টাকা প্রদান করায় এ অনিয়ম চরমে উঠেছে। এব্যাপারে ডোমার জনতা ব্যাংকের ক্যশিয়ার সুশান্তরায় জানান জনবলের অভাবে স্ব-স্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষদের হাতে টাকা দেয়া হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার শাহাজাহান মন্ডল জানান, উপবৃত্তির টাকা ব্যাংকের লোকজনের মাধ্যমে দেওয়ার কথা। তবে অভিযোগ পেলে ব্যাপারটি খতিয়ে দেখা হবে।

পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 3677630008627231331

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item