ডিমলায় ১৬ গ্রামের ভেতর দিয়ে বন্যার পানি বয়ে যাচ্ছে

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়,নীলফামারী ২৭ জুলাই॥
তিস্তা নদীর বন্যা ও ভাঙ্গন পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। উজানের ঢলে  নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ১৬ গ্রামের ভেতর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত অব্যাহত ছিল। বুধবার  ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এ ছাড়া তিস্তা ভাঙ্গনে বুধবার দুপুরে নতুন করে চরখড়িবাড়ি এলাকার ৫২টি পরিবার এসে আশ্রয় নিয়েছে বাঁধে।
 ছাতুনামা,ভেন্ডাবাড়ী,টাবুর চর, জিঞ্জির পাড়া, একতার চর, বাঘের চর, ইসুফের চর, বাইসপুকুর ,পূর্ববাইসপুকুর,চরখড়িবাড়ি,পূর্বখড়িবাড়ি সহ আশেপাশের ১৬টি গ্রামের  উপর দিয়ে তিস্তার বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানালেন জনপ্রতিনিধিরা। তারা জানায় যাদের সবতভিটা  নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে তারা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে বানের পানি মধ্যেই গ্রামে চরম কষ্ট করে বসবাস করছে। ওই সব পরিবার গুলো নিরাপদে নিয়ে আসা জরুরী হয়ে পড়েছে।
 ইউপি চেয়ারম্যানদের তথ্য মতে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়ে গেলেও সরকারী ভাবে ১হাজার ১৩২টি পরিবারের তালিকা দেখানো হয়েছে। অবশিষ্ট পরিবারগুলো তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। ভাঙ্গনের ফলে টেপাখড়িবাড়ীর একতা চর জিঞ্জিরপাড়া, টাবুর চর, খালিশা চাপানির খোকার চর ও ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের ফরেষ্টের চর ও ছাতুনাম প্রবল ভাঙ্গনে পবিবারগুলোর বসতভিটা, আবাদি জমি, রাস্তঘাট, স্কুলসহ ব্রীজ কালভার্ট বিলিন হয়ে পড়েছে।
উপজেলা প্রশাসন ও ত্রান মন্ত্রনালয়ের উদ্দ্যেগে গতকাল মঙ্গলবার (২৬ জুলাই)সন্ধ্যায় ঝুনাগাছ চাপানির পশ্চিম ছাতুনামার ১৭০টি পরিবারের মাঝে শুকনা খাবারের প্যাকেজ বিতরন করা হয়। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে ৫কেজি চাল, মশুর ডাল, লবন, সোয়াবিন তেল, মুড়ি চিড়া, চিনি ১ কেজি করে, দিয়াসালাই ও মোমবাতি ১ বান্ডিল। এসব ত্রান বিতরন করেন ডিমলা উপজেলা নির্বাহী  কর্মকর্তা রেজাউল করিম। এ সময় সহকারী কমিশনার ভুমি মিল্টন চন্দ্র রায়, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নায়েমা তাবাচ্ছুম শাহ, ঝুনাগাছ চাপানি ইউপি চেয়ারম্যান একরামুল হক চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ডিমলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ  কমান্ডার সামছুল হকের নেতৃত্বে  ১ হাজার পরিবারের মাঝে তিস্তার বাঁধে আশ্রিত বানভাসীদের মাঝে শুকনা খাবারের ত্রান সামগ্রী বিতরন করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ডিপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজানুল হক চৌধুরী, আজিজুল ইসলাম, মোফাজ্জল হোসেন, আব্দুল মজিদ, গোলাম কিবরিয়া, নাসির উদ্দিন ভাষানী, জগৎ চন্দ্র ব্যানার্জী, সোহরাব হোসেন, লিয়াকত আলী, ৭নং খালিশা চাপানী ইউনিয়ন কমান্ডার শরিলাল রায়, আব্দুল হাকিম, মেনাজ উদ্দিন, সবুর খান, সজল কুমার, রবিউল করিম, রফিকুল ইসলাম, নবাব আলী, আব্দুল হামিদ, হারুন অর রশিদ, আব্দুল সামাদ প্রমুখ।
অপর দিকে একই দিন বুধবার সকালে আরডিআরএসের উদ্দ্যেগে তেলির বাজারে ২শ পরিবারকে শুকনো খাবার, ১০টি লেট্রিন ও ৫টি টিউবওয়েল বিতরন করা হয়েছে। এ সময় উপজেলা ভাইস চেযারম্যান মুজিবুর রহমান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সিদ্দিকা, টেপাখড়িবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন, আরডিআরএসর প্রোগ্রাম ম্যানেজার আব্দুস সালাম, জেলা মনিটরিং কর্মকর্তা ফুয়াদ খান, এলাকা ব্যবস্থাপক সোরওয়াদী মিয়া, সামাজিক ক্ষয়তাযনের সিনিয়র ম্যানেজার সুমিত্র কুমায় উপস্থিত ছিলেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য ডিমলা হাসপাতালের সহকারী সার্জন রাশেদুজ্জামান, পরিসংখ্যানবিদ জহুরুল হক, সিএমসিপি ময়নুল হক দুর্গম চরে পরিদর্শন করেন।
তিস্তা বন্যা ও ভাঙ্গনের খেলায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তা অববাহিকার চর ও চরগ্রাম গুলো একে একে লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন ভাঙ্গনের শিকার হচ্ছে অসংখ্য পরিবার বতসভিটা। জমি জিরাত সব হারিয়ে ওই সব পরিবার গুলো আশ্রয় নিয়েছে তিস্তা নদীর বিভিন্ন বাঁধ ও উঁচু স্থানে। নদীর গতি পরিবর্তন করার ফলে তিস্তার ব্যারাজের ফ্লাইড ফিউজ চরম হুমকিতে পড়েছে।
ডিমলা সহকারী কমিশনার ভুমি মিল্টন চন্দ্র রায় জানায়, মঙ্গলবার পর্যন্ত তিস্তার বাধসহ উচু স্থানে ১ হাজার ১৩২ পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, সরকারীভাবে প্রতিটি পরিবার মাঝে শুকনো খাবারসহ ত্রান বিতরন করা হয়েছে।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 5373377722883092053

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item