ভয়াবহ বন্যা ও ভাঙ্গন মোকাবেলা করছে তিস্তা পাড়ের লাখো মানুষ

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়,নীলফামারী ২৬ জুলাই॥
তিস্তা ব্যারাজের ফ্লাড বাইপাস ঘিরে উজানের ঢলের পানির চাপ বাড়ছে। এটি বিধ্বস্থ্য হলে তিস্তা নদী গতিধারা আরেকদফা পাল্টে যেতে পারে। এমনই আশঙ্কা করছে এলাকাবাসীবাসী।
 ৮৮ ও ৯৬ সালের চেয়েও সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা মোকাবেলা করছে নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলার ৪ উপজেলার প্রায় লাখো মানুষ। উজানের লাগামহীন ঢলের পানি অব্যাহত ভাবে ধেয়ে আসায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির ক্রমান্বয়ে অবনতি হয়ে চলেছে।স্রোতের টানে ভেসে যাচ্ছে ঘর-বাড়ি। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পাকা ও কাঁচা সড়ক ডুবে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে আজ মঙ্গলবার বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচে থাকলেও নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার তিস্তা তীরবর্তি ১৬ গ্রামের উপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। ওই সব গ্রামের রাস্তাঘাট, ব্রীজ কালভাট, হাট বাজার বলতে কিছুই নেই।
এলাকাবাসী জানায় উজানের ঢল আর তিস্তা নদীর উথাল পাতাল ঢেউ এ গত ২৪ ঘন্টায় প্রবল স্রোতের টানে বিধ্বস্থ হয়েছে অন্ততঃ অর্ধশত ঘর-বাড়ি। রাস্তা, গুচ্ছগ্রাম ও বাঁধে আশ্রিতদের সংখ্যা বাড়ছে। ডিমলা উপজেলা বন্যা তথ্য কেন্দ্র সুত্র মতে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তিস্তার ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজ এলাকার বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে ৮৩০ পরিবার।
কৃষি বিভাগের মতে প্রায় এক হাজার  হেক্টর জমির ফসল প্লাবিত হয়েছে। নিমজ্জিত রয়েছে ৩শত হেক্টরের ফসল ও ৩৫ হেক্টর আমনের বীজতলা।
৮৮ ও ৯৬ সালের বন্যার কথায় এলাকাবাসী জানায় একদিনে ঢল এসে সব লন্ডভন্ড করে দিয়েছিল। এবারের টানা উজানের ঢল বিগত সময়ের বন্যাকে হারমানিয়ে তিস্তা অববাহিকার লাখো মানুষজনকে পথে বসিয়ে দিয়েছে।
এদিকে ডিমলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন জানান বন্যা ও ভাঙ্গনের কারনে ডিমলা উপজেলার ৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আড়াই হাজার শিক্ষার্থীর ষান্মাসিক পরীক্ষা গ্রহন সম্ভব হচ্ছেনা। ডিমলার  চর খড়িবাড়ির জিরো পয়েন্টে তিস্তা নদী থেকে পৃথক একটি চ্যানেল তৈরি হয়ে তা চর খড়িবাড়ি, একতার বাজার, জিঞ্জিরপাড়া, পুর্ব খড়িবাড়ি, টাবুর চর ও মেহেরের চর, তিস্তা বাজার হয়ে লালমনিরহাট জেলার সানিয়াজান ইউনিয়নের গাইড বাঁধ ঘেঁষে পুনরায় ডালিয়ার তিস্তা ব্যারাজের উজানে এসে মিলিত হয়েছে। 
তবে তিস্তা ব্যারাজের ফ্লাড বাইপাসে উজানের ঢলের চাপ বাড়ছে। এটি বিধ্বস্থ্য হলে তিস্তা নদী আরেক দফায় গতিপথ পাল্টে ফেলতে পারে। এমনটি ঘটলে তিস্তা ব্যারাজ অকেজো হয়ে পড়তে পারে।
এ ব্যাপারে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজার রহমান বলেন ফ্লাড বাইপাস এলাকায় সর্তকাবস্থায় দেখা নজরে রাখা হয়েছে।
ডিমলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, গত কয়েকদিনের বন্যা ও ভাঙ্গনে  ডিমলা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও জলঢাকা উপজেলার দুইটি ইউনিয়নের ১৬টি গ্রাম বন্যা ও ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। স¤পূর্ণ ক্ষতি হয়েছে তিনশ ৮৮টি ঘড়বাড়ি ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে পাঁচ হাজার দুইশ ৪৬টি ঘরবাড়ি।ক্ষতিগ্রস্থ্যদের মধ্যে শুকনো খাবার, ত্রাণের চাল একশ তিন মেট্রিক টন, নগদ টাকা চার লাখ ৩৫ হাজার  বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত ত্রান মজুদ রেখে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় বিতরন করা হচ্ছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোডের বন্যা পুর্বাভাস ও সর্তকীকরন কেন্দ্র জানায় আজ মঙ্গলবার তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কিছুটা কমলেও বন্যার সার্বিক পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি ঘটেনি। বেড়েছে ভাঙ্গন।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 5622578428060314880

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item