‘আল্লাহু আকবর বলে মানুষ হত্যা করলে জিহাদ হবে না’- আল্লামা শফী

ডেস্কঃ
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেছেন, আল্লাহু আকবার বলে মদ পান করলে যেমন কেউ সেটাকে ইসলামী মদ বলবে না, তেমনি কোনো সন্ত্রাসী আল্লাহু আকবার বা ইসলামের নাম নিয়ে মানুষ হত্যাকে জিহাদ বলবে না। তিনি বলেন, বেদেশি, অমুসলিম ও ধর্মীয় ব্যক্তিদের টার্গেট করে দেশে ইসলামের নাম ব্যবহার করে গুলশান ও শোলাকিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে একের পর এক সন্ত্রাসী হামলা দেশে ও জাতির জন্য অশনি সংকেত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে হেফাজত আমিরের প্রেস সচিব মাওলানা মুনির আহমদ স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
আল্লামা শফি বলেন, শক্তিশালী কোন পক্ষের ইন্ধন ছাড়া বিচ্ছিন্ন গুটিকয়েক অপরাধীর পক্ষে এমন সন্ত্রাসী কর্মকা- পরিচালনা করা অসম্ভব। এই দেশ থেকে ইসলামকে উচ্ছেদ করে আধিপত্য ও শোষণের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করতেই এই হামলা। সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য করে কাউকে বিনা কারণে হত্যা ও সমাজে ভীতি তৈরীর নাম কখনোই জিহাদ নয় বরং ইসলামের জিহাদ হচ্ছে অন্যায় আগ্রাসন ও সন্ত্রাস দমনের। তিনি বলেন, বিদেশি, অমুসলিম ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের হত্যা করা, হত্যার হুমকি দেওয়া, মসজিদ, মন্দির ও গীর্জায় হামলা প্রচেষ্টা চরম উদ্বেগজনক। সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এসব সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের পেছনে ইন্ধনদাতাদের চিহ্নিত করতে হবে।
বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে ধ্বংস করার জন্য এসব সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও জাতীয় ঐক্যকে বাধাগ্রস্ত ও ধ্বংস করার জন্যে বিভিন্ন অপশক্তি গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা এদেশ থেকে ইসলামকে উচ্ছেদ করে আধিপত্য ও শোষণের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এই কাজে তারা কলেজ-ইউনিভার্সিটির উচ্চ শিক্ষিত ছাত্রসহ সরলমনা কিছু মুসলিম যুবককে আদর্শীকভাবে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যায় প্রভাবিত করে ব্যবহার করতে সক্ষম হচ্ছে।
আল্লামা শফি এ ব্যাপারে দেশের আলেম সমাজ, ইসলামী নেতৃবৃন্দ, মসজিদের ইমাম ও খতিবকে ইসলামের সঠিক জ্ঞান ও শিক্ষার প্রচার-প্রসারে আরো জোরালো ভূমিকা রাখার আহবান জানান। তিনি বলেন, কোনো মদ পানকারী আল্লাহু আকবার বলে মদ পান করলে যেমন কেউ সেটাকে ইসলামী মদ বলবে না,  তেমনি কোন সন্ত্রাসী আল্লাহু আকবার বা ইসলামের নাম নিয়ে মানুষ হত্যাকে জিহাদ বলবে না।
আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেন,  সৎ ও সরল চিন্তার প্রতিটি মানুষই কোন না কোনভাবে ধর্মেও প্রতি দুর্বল থাকে। কারণ ধর্ম মানুষকে সৎ ও আদর্শবান হতে সাহায্য করে। আর দেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষার অনুপস্থিতির কারণে সাধারণ শিক্ষিত বিশাল ছাত্রসমাজ পরিপূর্ণ সঠিক ধর্মীয় জ্ঞান থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। বাংলাদেশের শত্রুরা এই সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছে। তারা সাধারণ শিক্ষিত তরুণদেরকে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বিভ্রান্ত ও বিপথগামী করতে এ কারণে সক্ষম হচ্ছে। ইসলামী নেতৃবৃন্দ ও মসজিদের ইমাম-খতিবদেরকে উদ্দেশ্য করে হেফাজত আমীর বলেন,  দেশকে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের হাত থেকে বাঁচানোর জন্যে আরো বেশী ভূমিকা পালন করতে হবে। মানুষের দ্বারে দ্বারে শান্তির ধর্ম ইসলামের সঠিক শিক্ষা পৌঁছে দিতে হবে। বিশেষ করে স্কুল, কলেজ ও ইউনিভর্সিটি ক্যাম্পাসসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় সভা-সেমিনার করা যেতে পারে। এসব সভা-সেমিনারে ইসলামের সার্বিক বিধি-বিধান তুলে ধরতে হবে। সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য করে কাউকে বিনা কারণে হত্যা ও সমাজে ভীতি তৈরীর নাম কখনোই জিহাদ নয় বরং ইসলামের জিহাদ হচ্ছে অন্যায় আগ্রাসন ও সন্ত্রাস-নৈরাজ্য দমনের।
মসজিদের ইমাম ও মাহফিলে পুলিশের নজরদারির সমালোচনা করে আল্লামা শফি বলেন ,দেশ থেকে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যকে নির্মূল করতে যদি প্রকৃত অর্থে আন্তরিক হউন, তবে মসজিদের ইমাম-খতিব ও মাহফিল নজরদারী করার কথা বলে ভীতি তৈরী ও ধর্মীয় কর্মকান্ড সংকোচিত করবেন না। বরং নজরদারীর পরিবর্তে আলেমদেরকে স্বাচ্ছন্দে কাজ করতে সহযোগিতা করুন। কারণ সমাজের মানুষের মধ্যে সৎ ভাবে জীবন যাপনের যে মানসিকতা ভেতর থেকে কাজ করে সেটা এই ইমাম ও খতিবরাই  করে থাকে।
হেফাজতের আমির বলেন,  মসজিদে খতিব নজরদারির কথা বলার মানেই হচ্ছে, সন্ত্রাস ও হত্যাকান্ডের দায় ইসলামের উপর চাপানোর চেষ্টা। বাংলাদেশের উপর এখন সারা বিশ্বের দৃষ্টি। খতিব নজরদারির সংবাদে বিশ্ববাসীর কাছে এমন বার্তা যাবে যে, বাংলাদেশের লাখ লাখ মসজিদের খতিব জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে কাজে জড়িত।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 3172232068341691610

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item