পীরগাছায় প্রাইমারী স্কুল প্রতিষ্টার হিড়িক

ফজলুর রহমান, পীরগাছা(রংপুর)প্রতিনিধিঃ

রংপুরের পীরগাছায় সরকারী নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে একটি চক্র। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক কর্মচারীদের নানা সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করায় স্বার্থানেষী ব্যাক্তিরা নতুন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার ৯ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় একাধিক চক্র ১০/১৫ বছর পূর্বে বিদ্যালয় প্রতিষ্টার তারিখ দেখিয়ে বিভিন্ন নামের একাধিক নতুন বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছেন । পাশাাপাশি বিদ্যালয়ে শিক্ষক/শিক্ষিকা নিয়োগ দেয়ার নামে প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গিয়ে স্থানীয় ওই চক্র লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের রহমতচর গ্রামে মৌজা পরিবর্তন করে তাম্বুলপুর মাঝিপাড়া বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এর নাম দিয়ে ডিজিটাল সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় এক দালাল। সম্প্রতি সময়ে ১২/১৫টি স্কুল প্রতিষ্ঠা করে সেগুলোর স্থাপিত তারিখ দেখানো হয়েছে গত ২০০৯ সালের পূর্বে। ওইসব বিদ্যালয়ের চাকুরি দেয়ার নাম করে সাধারন মানূষের নিকট থেকে বহু টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি মিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওযার জন্য বিভিন্ন স্থানে দৌড়ঝাপ শুরু করেছে ওই প্রতারকচক্র্র। বিদ্যালয় সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকার বাসিন্ধাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নতুন করে গজিয়ে ওঠা বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো পূর্বে কখনো তাদের চোখে পড়েনি। এছাড়াও বিগত দিনে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষা অফিস থেকে বই গ্রহন করলে বই বিতরন তার করেননি। বিদ্যালয়গুলোতে কোন শিক্ষার্থী দেখা যায়নি। এমনকি পঞ্চম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষাসহ ক্লাস কিংবা কার্য্যক্রম দেখা যায়নি। রাতারাতি কেন এরকম নতুন নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্টা করা হচ্ছে তা তারা অবগত নন। এছাড়া শিক্ষক নিয়োগের নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ফাঁদ তৈরী করেছে ওই জালিয়াতচক্র। এ চক্রের প্রতারনার হাত থেকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ প্রশাসনের নজরদারী কামনা করছে স্থানীয় সচেতন মহল। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে, উপজেলা সদরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জানান, নতুন বিদ্যালয় প্রতিষ্টার ক্ষেত্রে সরকারী নিয়মনীতি থাকলেও জালিয়াতচক্র তার তোয়াক্কা না করে প্রশাসনের নাকের ডগায় ব্যাঙ্গের ছাতার ন্যায় বিদ্যালয় প্রতিষ্টা করে সাধারন মানুষকে চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতানোর ফন্দি এটেছে। বিষয়টির দিকে প্রশাসনের কঠোর নজর দেয়া প্রয়োজন। অন্যথায় শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ব্যহত হবে। অপরদিকে সদ্য নির্মিত হওয়া দুই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জানান, সরকার দেশের বিভিন্ন স্থানে নতুন দেড় হাজার বিদ্যালয় প্রতিষ্টা করতে চাচ্ছে। সে জন্য পীরগাছা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কিছু নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হচ্ছে। যা তৃতীয় ধাপে সরকারী হলে এলাকার কিছু মানুষ সুযোগ সুবিধা পাবে। তবে এনিয়ে লেখালেখি না করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি। এসব বিদ্যালয় প্রতিষ্টার কাজে স্থানীয় দালালের পাশাপাশি নামধারী কিছু শিক্ষক নিজ বিদ্যালয় ফঁিকি দিয়ে উপজেলা সদর অফিসে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকেন। এছাড়াও বিদ্যালয়ের কাজ নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে দৌড়ঝাপ করে থাকেন।  এবিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিক-উজ-জামান এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, বিভিন্ন নামে বিদ্যালয় প্রতিষ্টা করে স্থানীয়রা কেউ কেউ শিক্ষ অফিসের নাম ভাঙ্গিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি অবগত আছেন। তবে বিদ্যালয় প্রতিষ্টা করলেই সরকারী অনুমতি মিলবে না। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কয়েক দফা প্রতিবেদন পাঠানোর পর যাছাই-বাছাই এর শেষে নিয়মের মধ্যে পড়লে দুই একটি বিদ্যালয় অনুমোদন পেতে পারে। তবে চাকুরি দেয়ার নামে সাধারন মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়া চক্রদের ঠেকাতে প্রশাসনের পাশাপাশি এলাকাবাসীরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 1339266851208654426

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item