গাইবান্ধায় লাভবান হচ্ছে বিষমুক্ত লিচু চাষি কৃষকরা

মুহাম্মদ শামীম সরকার শাহীন :


গাইবান্ধায় দিন দিন লিচুর চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধান কিংবা অন্য ফসলাদিতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এ জনপদে লিচু চাষে অনেকেআগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তাপদাহ ও অনাবৃষ্টি থাকলেও গাইবান্ধায় বিষমুক্ত লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। ধান কিংবা অন্য ফসলাদিতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এ জনপদে লিচু চাষে অনেকে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। পাশাপাশি আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব লিচু এখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হচ্ছে। লিচু সংরক্ষণাগার নির্মান হলে পাকা লিচু প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে বাজারজাত করা হলে লিচু ব্যবসায়ীরা যেমন লাভবান হবেন তেমনি লিচুর ক্ষতিসাধনের হাত থেকে রক্ষা পাবে।বাড়ির পতিত জমি ফেলে না রেখে অনেকে লিচু গাছ রোপণ করছেন। কেউ কেউ শখের বশে বসতভিটায়বা অন্য কোনো স্থানে দুই/চারটি লিচু গাছ রোপণ করলেও পরবর্তীতে সেই গাছের লিচু থেকে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বাকিটা বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন। সামান্য খরচে লিচুর ভাল ফলন, বাজারে লিচুর চাহিদা ও নগদ বিক্রির লাভ দেখতে পেয়ে অনেকে আবার লিচুরবাগান করার পরিকল্পনা করছেন। গাইবান্ধা ৩টি উপজেলা সাদুল্লাপুর, পলাশবাড়ি ও গোবিন্দগঞ্জে লিচু চাষে এমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, লিচু চাষের ব্যাপকতা। এখানকার প্রায় ২০টি পরিবার লিচু চাষ করে অভাবকে হার মানিয়েছেন। তাদের লিচুই এখন উর্পাজনের মূল সম্পদ। ছোট বড় ১৫ থেকে ২০টি বাগানে হাইব্রিড চায়না থ্রি, বোম্বাই ও বেদেনা লিচুর চাষ করা হয়েছে।লিচু চাষিরা এখন খুব কর্মব্যস্ত।  লিচু বিক্রির মৌসুম হওয়ায় গাছ থেকে লিচু পেড়ে তা খাঁচা বন্দী করা, লিচু সাইজ করে আটি বেঁধে তা বাজারে বিক্রির জন্য প্রস্তত করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন লিচু চাষিরা। এখানে নারী-পুরুষ-শিশু-কিশোররা কেউ বসে নেই। সকলে মিলে নবান্নের উৎসবের মতো আনন্দঘন পরিবেশে বিক্রির জন্য লিচু পরিচর্যা করছেন। লিচু চাষিদের কাজের ফাঁকে চন্ডিপুর গ্রামের উদ্যোমী লিচু চাষি আব্দুর রহিমের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, আমি আগে অনেকটা অস্বচ্ছল ছিলাম। নিজের পায়ে দাঁড়াবার সাধ্য ছিল না। ২০০৭ সালে দুই/একটি লিচুর গাছ বসতভিটায় রোপণ করেতার পরিচর্যায় ফলন ভালপেয়ে মনোনিবেশ করি লিচু চাষে। এখানকার মাটি লিচু চাষে মানানসই হওয়ায় ধীরে ধীরে আমি ২৫ শতাংশ জমিতে লিচুর গাছ লাগিয়ে বাগান করে পুরোদমে লিচু চাষ শুরুকরি। মাত্র ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা উৎপাদন খরচব্যয় করে বর্তমান আমারলিচু বাগানের ৬৩টি গাছথেকে আমি লিচুর ফলন পাচ্ছি।আব্দুর রহিম আরও জানান, গতবার এ লিচু বাগান থেকে তিনি খরচ বাদ দিয়ে ৫০ হাজার টাকা আয় করেছেন।
এবারও পাইকাররা তার বাগানের লিচু প্রায় ৮০ হাজার টাকা দাম করেছেন। কিন্তু পাইকারের কাছে তা বিক্রি না করে তিনি নিজেই বাগানের লিচু ছিড়ে বিক্রি করছেন। ওই এলাকায় অনেকেই রহিমের লিচু বাগানকে অনুকরন করে তারাও বাগান গড়ে তুলছেন। এছাড়া পলাশবাড়ি ও সাদুল্লাপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপকভাবে লিচু চাষ হচ্ছে।লিচু চাষে অধিক মুনাফা হওয়ায় এবং কোন ঝুঁকি না থাকায় গাইবান্ধা জেলায় প্রতি বছরই লিচুর বাগানের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। একটি বড় গাছে ২ থেকে ৮ হাজার পর্যন্ত এবং সবচেয়ে ছোট গাছে ১ থেকে ২ হাজার লিচু এক মৌসুমে পাওয়া যায়। নতুন গাছে ৫০০ থেকে ৬০০টি পর্যন্ত লিচু হয়। তবে লিচু পাকার মাঝামাঝি সময়ে প্রচন্ড তাপদাহে কিছু লিচু ফেটে গেলেও কৃষকদের তেমন ক্ষতি হয়নি। প্রতি শত লিচু ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। মধু মাসের এ লিচু মৌসুমে লিচুর ব্যবসা সরবরাহ ও শ্রমের সাথে ব্যাপক লোকের সংযুক্ত রয়েছে।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আ.কা.মো.রুহুল আমিন বলেন, জেলায় ১ হাজার হেক্টর জমিতে ফলের বাগান রয়েছে। এর মধ্যেআম ও লিচুই বেশি। আমরা কলা বাগানের পাশাপাশি লিচু চাষে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

পুরোনো সংবাদ

নিবিড়-অবলোকন 7350692056597739761

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item