ডিমলায় উজানের ঢলে ফুঁসে ওঠা তিস্তানদীর গতিপথ পরিবর্তন ,বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন

জাহাঙ্গীর আলম রেজা, ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি ঃ

টানা কয়েক দিনে ভারী বর্ষন ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি ফের বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে।  শুক্রবার বিকাল ৬টা থেকে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ বিপদসীমা (৫২ দশমিক ৪০ মিটার) ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। এদিকে উজানের ঢলে ফুঁসে ওঠা তিস্তানদীর গতিপথ পরিবর্তনে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চর খড়িবাড়ী এলাকার ১ হাজার পরিবার বিপাকে। শুক্রবার সকাল থেকে চরখড়িবাড়ির সেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বালির বাঁধের আরো দুইশত মিটার বিলিন হয়। এ ছাড়া তিস্তা নদীতে বিলিনের পথে টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চরখড়িবাড়ি মধ্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির পুরাতন ভবনটি। এতে স্কুলের নতুন ভবনটিও হুমকীর মুখে পড়েছে। তাই বাড়ি ঘর ভেঙ্গে অন্যত্র সরে যেতে বাধ্য হচ্ছে তারা। চরখড়িবাড়ি এলাকাগুলোতে নদীর পানি প্রবেশ করে ঘরবাড়িগুলো হাটুপানিতে তলিয়ে দিয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে চরখড়িবাড়ি এলাকা পরিদর্শন করেন ডিমলা উপজেলার চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা তবিবুল ইসলাম , উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম ও টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন, স্থানীয় সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম রেজা, বাদশা সেকেন্দার ভুট্টু প্রমূখ।

ইউএনও রেজাউল করিম জানান নদীর ভাঙ্গনে সেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁধটি যেমন বিলিন হচ্ছে সেই সাথে চরখড়িবাড়ি মধ্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির পুরাতন ভবনটি সহ একতার বাজার ও চরখড়িবাড়ী সীমান্ত ফাঁড়ি (বিজিবি ক্যাম্প) তিস্তা নদীর বানের পানিতে তলিয়ে গিয়ে  ধীরে ধীরে বিলিন হতে শুরু করেছে। হুমকীর মুখে পড়েছে স্কুলটির নতুন ভবনটি। শুক্রবার চরখাড়িবাড়ির অর্ধশত পরিবারের বসতভিটা নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। শতশত পরিবার ঘরবাড়ি ভেঙ্গে নিরাপদ স্থানে সরে যাচ্ছে।
                 
ওইসব এলাকার মালেক, আব্দুর রাজ্জাক, ইব্রাহিম, আকর আলী জানান গত বছর থেকে তিস্তা নদী গতিপথ শুরুর আলামত ফুটে উঠেছিল। ফলে চরখড়িবাড়ির সাথে ভারত সীমান্ত বরাবর তারা তিস্তা নদীর গতিপথকে ঠেকাতে সেচ্ছাশ্রমে এক হাজার মিটার দীর্ঘ বালির বাঁধ নির্মান করে। কিন্তু তিস্তা যেন রাক্ষুসী হয়ে উঠছে। তিস্তার মুল গতিপথ ভারতের মেখলিগঞ্জ হয়ে বাংলাদেশের জিরো পয়েন্ট কালিগঞ্জ দিয়ে। কিন্তু ওই পথ পরিবর্তন করতে শুরু করে তিস্তা।

বন্যায় চুলো ও টিউবওয়েল ডুবে যাওয়ার কারনে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে রয়েছে বন্যা কবলিত মানুষগুলো। কোথাও হাটু ও কোথাও কোমড় পানির নিচে চলে গেছে রাস্তা-ঘাট, স্কুল ও বাড়ি-ঘর। পানিবন্দী মানুষজন তাদের ঘর-বাড়ি ভেঙে গবাদী পশু নিয়ে উচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে বাধ্য হয়ে বাঁধের উপর ঘর নির্মান করেছে। রোজার মাসে বানের পানির এই দুর্ভোগ এলাকাবাসীকে চরম হেনস্তা করে রেখেছে।        
       
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোডের বন্যা পুর্বাভাস ও সর্তকীকরন কেন্দ্র সুত্র জানায় শুক্রবার সকাল ৬টায় তিস্তা নদীর প্রবাহ ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। সকাল ৯টা ও দুপুর ১২টায় ৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পায়।  বিকাল ৩টায় ২ সেন্টিমিটার ও বিকাল ৬টায় আরো ৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে  বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে  প্রবাহিত হলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। 

উক্ত বন্যা কবলিত এলাকার ১ হাজার পরিবারের জন্য ৩০ হাজার টাকা ও দশ কেজি করে চাউল জেলা প্রশাসক বরাদ্দ দিয়েছেন।



পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 3709820299094727431

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item