সৈয়দপুরে ৩ সিনেমা হল বন্ধ সংস্কৃতি, ঐতিহ্যসহ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

মো. জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি

দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলার মত সৈয়দপুরেও বন্ধ হয়ে গেছে সিনেমা হল। ৪টি সিনেমা হলের মধ্যে ৩টিই হয়েছে বন্ধ। শুধুমাত্র দর্শক না থাকার কারণে লোকসানের ভারে সেগুলি বন্ধ হয়ে যায়। শহরের ক্যান্টনমেন্ট গ্যারিশন অডিটোরিয়াম হলটি বন্ধ করে সেখানে গড়ে উঠেছে কমিউনিটি সেন্টার। বিজলী ও লিবার্টি সিনেমা হল ভেঙ্গে সেখানে আধুনিক মার্কেট নির্মাণ কাজ চলছে। শুধুমাত্র শহরের প্রাণকেন্দ্রে থাকা তামান্না সিনেমা হলটি চালু রয়েছে। এটি জোড়াতালি দিয়ে চললেও অল্পদিনের মধ্যে সেটিও বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে জানান মালিক মাহবুব। এছাড়া নীলফামারী সদরে ২টি, কিশোরগঞ্জে ২টি, ডোমারে ২টি সহ মোট ৮/১০টি সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে কথা হয় তামান্না সিনেমা হলের মালিক মাহবুবের সাথে। তিনি জানান, টিভির বিভিন্ন চ্যানেলে নিয়মিত ছবি প্রদর্শন, ভারতীয় চ্যানেলের আগ্রাসনসহ মোবাইলে অশ্লীল ছবি প্রদর্শনের কারণেই দর্শকশূন্য হয়ে পড়েছে সিনেমা হলগুলো। টিভির চ্যানেলে ছবি প্রদর্শন, মোবাইলসহ ভারতীয় চ্যানেলের আগ্রাসন বন্ধ করা না হলে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত নামিদামি, মালিকসহ ব্যবসায়ীরা অল্পদিনেই ভিক্ষার ঝুলি হাতে নেবেন। এর পাশাপাশি সরকার হারাচ্ছেন দেশের ঐতিহ্যসহ মোটা অংকের রাজস্ব।
বাঙ্গালীপুর নিজপাড়ার সিনেমা পাগল দর্শক মোকছেদ আলী জানান, এক সময় মানুষের ঘরে ছিলনা টেলিভিশন, ডিস লাইনসহ সকলের হাতেই মোবাইল ফোন। তখন মানুষের একমাত্র বিনোদনের স্থান ছিল সিনেমা হলগুলো। পরিবারের সকলকে নিয়ে মজা করতো সিনেমা হল গিয়ে। কিন্তু প্রায় এক যুগ থেকে সে মজা ভুল গেছে দর্শকরা। কারণ টেলিভিশন খুললেই ডিসের মাধ্যমে নতুন নতুন সিনেমা প্রদর্শনসহ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অশ্লীল ছবি ইচ্ছেমত উপভোগ করা যাচ্ছে। এর কারণে সাধারণ মানুষ ভুলেই গেছে সিনেমা হলের মজা।
দর্শক মতিয়ার রহমান কাল্লু বলেন একই কথা। এক সময় সিনেমা হলগুলোতে ছিল দর্শকদের উপচেপড়া ভিড়। কে টিকেট কিনবেন এবং কে আগে হলের ভিতর প্রবেশ করবেন সে প্রতিযোগিতা ছিল সর্বত্র। ঈদ, পূজাসহ বিশেষ দিনগুলিতে সিনেমা দেখার জন্য সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটতো প্রতিনিয়ত। সেসব কথা এখন প্রায় স্বপ্নের মত। লোকসানে লোকসানে পূর্বের সব স্বপ্ন একে একে বন্ধ হয়ে গেছে। রুচিশীল দর্শকরা যেমন সিনেমা হলে গিয়ে মজা করতে পারছেন না তেমই এ বিভাগের সঙ্গে জড়িত শ্রমিক কর্মচারীরা অনেকেই বেকার হয়ে পড়েছেন। কেউবা চালাচ্ছেন রিক্সা, অটোরিক্সা বা পায়েচালিত ভ্যান।
ঝন্টু নামের এক সিনেমা হল মালিক জানান, সারাদেশের ন্যায় সৈয়দপুরেও রুচিশীর দর্শকের অভাব নেই। সরকার যদি বাংলাদেশকে ভারতীয় চ্যানেলের আগ্রাসন ও মোবাইলে অশ্লীলতার ওপর কঠোর ভূমিকা রাখেন তাহলে সৈয়দপুর তথা সারাদেশে আবারও গড়ে উঠবে সিনেমা হল। চোখে পড়বে দর্শকদের উপচেপড়া ভিড়। মেরুদন্ড শক্ত হবে দেশের সাংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য। সরকার মোটা অংকের রাজস্ব পাওয়ার সাথে সাথে যুব সমাজও বিপথগামী হওয়া থেকে ফিরে আসবে। যুবতিদের ইভটিজিংও বন্ধ হয়ে যাবে, সৃষ্টি হবে শান্ত ও সুন্দর পরিবেশের।

পুরোনো সংবাদ

শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি 2880776733692111036

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item