সৈয়দপুর উপজেলায় সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা
https://www.obolokon24.com/2016/05/election-saidpur.html
মোঃ জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে ঃ
৬ষ্ঠ ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায়। আগামী ৪ জুন’ ২০১৬ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। সৈয়দপুর উপজেলার ৫ ইউনিয়নেই আওয়ামীলীগ ও বিএনপি’র একক প্রার্থী রয়েছেন। তবে পূর্বের প্রতিশ্র“তি মোতাবেক বিজয়ী চেয়ারম্যানরা নিজ নিজ ইউনিয়নের কোন উন্নয়নই করেননি এ কারনে আসন্ন নির্বাচনে ওইসব চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানান বিদ্রোহী প্রার্থীরা।
বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী প্রনবেশ চন্দ্র বাগচি (আনারস) বাবুল বাবু জানান, এলাকার ভোটাররা তার সাথে আছেন। যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় তাহলে ভোটাররা তার গলায় জয়ের মালা পড়াবেন।
বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুল ইসলাম (ঘোড়া মার্কা) জানান, তিনি গতবারে বিপুল ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে তারই মনোনয়ন দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাকে না দিয়ে দেয়া হয়েছে হেলাল চৌধুরী (নৌকা) নামের এক ছাত্র নেতাকে। এ কারনেই ভোটাররা ফুসে উঠেছেন। যদি ভোট কেন্দ্রে ঝামেলা না হয় তাহলে তাকে হারানো সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন। অন্যদিকে বিএনপি’র প্রার্থী রফিকুল ইসলাম (ধানের শীষ) বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার আশা তিনি করছেন না। কারন আওয়ামীলীগের প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর মাঝে সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে। যদি প্রশাসন কঠোর ভূমিকা পালন করেন তাহলে চেয়ারম্যান হওয়া থেকে কেউই তাকে রুখতে পারবে না বলে জানান তিনি।
কামারপুকুর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আনোয়ার হোসেন (মটর সাইকেল) বলেন, গতবারে আওয়ামীলীগ থেকে জিকো আহমেদ জিকো কে (নৌকা) মার্কায় মনোনয়ন দেয়ায় তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় তিনি ভুলে যান আওয়ামীলীগের আদর্শের কথা। এলাকার উন্নয়ন না করে তিনি নিজের আখের গুছিয়েছেন। জড়িয়ে পড়েন নারী কেলেঙ্কারীতে। এ কারনে ভোটাররা আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জিকো আহমদকে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন না দেয়ার অনুরোধ জানান। কিন্তু দল তাকে পুনরায় মনোনয়ন দেয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন ভোটাররা। এরফলে ভোটারদের মতামতেই তিনি (আনোয়ার সরকার) বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। তিনি বলেন জিকো আহমেদ পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার জন্য ভোট কেন্দ্রে ঝামেলা করতে পারেন। যদি ভোট কেন্দ্রে ঝামেলা না হয় এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে তার জয় নিশ্চিত বলে দাবী করেন তিনি।
খাতামধুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুয়েল চৌধুরী (আনারস) বলেন, জনগনের সুখ, দুঃখে প্রার্থী ছিলেন এবং হয়েছেন। জনগন তাকে ভাল বাসেন বলেই গত নির্বাচনে বিপুল ভোটে তাকে নির্বাচিত করেছেন। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এ কারনেই তিনি পুনরায় প্রার্থী হয়েছেন। তবে আওয়ামীলীগের প্রার্থী মাসুদ রানা পাইলট (নৌকা) ভোটকেন্দ্র দখল করে ভোট নেয়ার পায়তারায় লিপ্ত রয়েছেন। ভোটারদেরও হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের আজহারুল ইসলাম ভুতলু (মোটর সাইকেল) জানান, আওয়ামীলীগ প্রার্থী এনামুল হক চৌধুরী (নৌকা) যদি ভোটকেন্দ্রে সন্ত্রাসীমূলক কর্মকান্ড না চালায় তাহলে তিনি অবশ্যই বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জানা যায়, সৈয়দপুর উপজেলার ৫ ইউনিয়নে ১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে আওয়ামীলীগের ৫জন, বিএনপির ৫জন, জাতীয় পার্টির ৩জন, ওয়ার্কাস পার্টির ১জন ও জাকের পার্টির ১জন প্রার্থী রয়েছেন।