নীলফামারী জেলায় সুষ্ঠু ভোট গ্রহনে কঠোর ছিল প্রশাসন

তাহমিন হক ববী॥
চৈত্রের মতো খরতাপে বৈশাখের বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করলেও  নীলফামারীর ১২টি ইউনিয়নে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে  ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। তৃতীয় দফার ইউপি নির্বাচনে আজ শনিবার  (২৩ এপ্রিল) সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে বিকাল ৪টায় শেষ হয়। এখানে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত  নারী ভোটারদের আর দুপুরের পর পুরুষ ভোটারদের আধিক্য ছিল। প্রচন্ড খরতাপ  উপো করে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ চলে। ভোট শেষে কেন্দ্রে কেন্দ্রে এখন ভোট গণনা চলছে। নীলফামারী প্রশাসনের অবাধ সুষ্ঠু ভোট গ্রহন সম্পন্ন করায় সাধারন ভোটারগন মন্তব্য করে বলেন কঠোর প্রশাসনে আমরা পেয়েছি সুষ্ঠু ভোট। এতে আমার ভোট আমি দিয়েছি দেখে শুনে বুঝে দিয়েছি।  তাই কঠোর প্রশাসনে সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠিত হলো।নীলফামারী জেলা সদরের ৫টি এবং ডিমলা উপজেলার ৭টিসহ মোট ১২ ইউনিয়নের ভোট গ্রহন হয় এই দিন। ইউনিয়ন গুলো হলো নীলফামারী সদর উপজেলার রামনগর, কচুকাটা, চড়াইখোলা, সোনারায় ও সংগলশী এবং ডিমলা উপজেলার নাউতারা, খালিশাচাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, পূর্বছাতনাই, পশ্চিমছাতনাই, বালাপাড়া ও ডিমলা সদর।প্রশাসনের পক্ষে ওই ১২টি ইউনিয়নের ১১১টি ভোট কেন্দ্রকেই অধিক ঝুকিপূর্ন হিসাবে চিহিৃত করা হয়েছিল। আর এ জন্য প্রশাসনের পক্ষে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে এবং টহলে বাড়তি ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থায় সাধারন ভোটাররা যে খুশী তা প্রমান করে ভোট কেন্দ্র গুলোর উপচে পড়া নারী পুরুষদের উপস্থিতি। এসব কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিল দুই লাখ ৩৭ হাজার ৬৫৪ জন।১২টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয়পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ মোট ৬৫ জন, সাধারণ সদস্য পদে মোট ৪৩৯ জন এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৫৭জন প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী।সরেজমিনে দেখা যায় নীলফামারী জেলা প্রশাসক জাকীর হোসেন,পুলিশ সুপার জাকির হোসেন খান,জেলা নির্বাচন অফিসার জিলহাস উদ্দিন বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে পরিদর্শন করেন। তারা ভোটারদের সাথে কথা বলেন। কোথাও কোন সমস্যার কথা জানতে পারলে তাৎক্ষনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহন করেন। এ ছাড়া ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বে যারা ছিলেন তারাও স্বচ্ছতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ছিল কঠোর অবস্থানে। কোন ছয় নয় করার চেস্টা পর্যন্ত কেউ করতে পারেনি। যারা অপ্রীতিকর ঘটনার পায়তারা করেছিল তাদের মুখে চুনকালি মেখে দিয়েছে প্রশাসক ও সাধারন ভোটাররা।ডিমলা উপজেলার ৭  ইউনিয়নের ভোট কেন্দ্র গুলো ঘুরে দেখা যায় আনন্দ উৎবের হাতছানী ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে ভোটারদের প্রতিবাদী হয়ে উঠার দৃশ্য।সকালে পুরুষ দের  বুথ গুলো ছিল ফাকা। অন্যদিকে, নারীদের বুথে ছিল উপচেপড়া ভিড়। তাঁরা দুপুরের আগেই দল বেঁধে ভোট দিতে এসেছিল। সকালে নারীদের উপস্থিতির ব্যাপারে মতামত জানতে জাহেরা বেগম (৫০) বলেন, তাড়াতাড়ি ভোট দিয়ে বাড়িতে গিয়ে রান্না করব। বাড়ির লোক ফসলের মাঠে কাজকর্মে গেছে। দুপুরের ভাত খেয়ে তারা ভোট দিতে আসবে। এ জন্যই সকাল সকাল এসেছেন।দুপুর দুইটার পর আবার পুরুষদের বুথে ভিড় জমতে শুরু করে। তখন নারীদের বুথ ছিল একেবারেই ফাঁকা।  ভোটার ইউনুস মন্ডল (৪০) বলেন, এখন বোরো আবাদের মাঠ ছেড়ে থাকার উপায় নেই। সবাই মাঠে গিয়েছিল। প্রতিদিন বিকেল চারটায় মাঠ থেকে শ্রমিকদের ছাড়া হয়। কিন্তু ভোট থাকার কারণে শ্রমিকেরাও সকাল করে মাঠে গিয়েছিলেন। এ জন্য দুপুর দুইটায় তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।ডিমলার পুর্বছাতনাই ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল লতিফ খান জানান সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সুষ্ঠু ভোট গ্রহন সম্পন্ন হয়। প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থাপনায় সুষ্ঠু ভোট এলাকাবাসীকে ধন্য করেছে।ডিমলা সদর ইউনিয়নের বিএনপির ধানের শীষ প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ডিমলা উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক  আমিনুজ্জামান ওরফে গাজী  বলেন, ভোট গ্রহন অত্যান্ত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সাধারন ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে এসে তাদের নিজের মতামতের ভোট প্রদান করেছে। যারা ভোট কেন্দ্র দখলের চেস্টা করেছিল তাদের ধাওয়া দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে ভোটার ও প্রশাসন। এ জন্য নির্বাচন পরিচালনায় প্রশাসনের ভুমিকায় আমি অত্যান্ত সন্তস্ট হয়ে প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই। তবে ভোটের ফলাফলও যাতে সুষ্ঠু হয় সেদিকে নজর রাখার দাবি করেন তিনি।এদিকে নীলফামারী সদর ইউনিয়নের ৫টি কেন্দ্রে দেখা গেছে আনন্দ উৎসবে ভোট গ্রহন।
সদরের চড়াইখোলা ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী পল্লী চিকিৎসক আব্দুর রহমান জানান তিনি এমন নিরপক্ষ ও সুষ্ঠু ভোটগ্রহন এর আগে কোনদিন দেখেননি। এ জন্য তিনি  শেখ হাসিনা ও নীলফামারী প্রশাসনকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানান।নীলফামারী সদর থানার ওসি শাহজাহান পাশা জানান, অবাধ সুষ্ঠু  ভোট গ্রহনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছিল সার্বক্ষনিক ভাবে দায়িত্ব পালন করেছে। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা হতে দেয়া হয়নি।ডিমলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন,শান্তিপূর্নভাবে ভোটগ্রহন সম্পন্ন করা হয়েছে। যেখানেই কোন ঘটনার খবর এসেছে সেখানে গিয়ে তা প্রতিহত করা হয়েছে। ফলে কেউ ভোট কেন্দ্র দখলের চেস্টা করতে পারেনি।জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জিলহাস উদ্দিন জানান শান্তিপূর্নভাবে ভোট গ্রহন সম্পন্ন করা হয়েছে। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 5864021579771798155

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item