বৈশাখী মেলাকে সামনে রেখে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা


মুহাম্মদ শামীম সরকার শাহীন,গাইবান্ধা প্রতিনিধি:



গাইবান্ধার পলাশবাড়ি উপজেরার বিভিন্ন এলাকায় বৈশাখী মেলাকে সামনে রেখে মাটির সামগ্রী তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করেছেন মৃৎশিল্পিরা। এককালে মৃৎশিল্পের তৈজসপত্র রাজা, জমিদার ও অভিজাত পরিবারের নিত্যদিনের ব্যবহার্য বস্ত ছিল। সন্ধ্যাপ্রদীপ কিংবা সকালের পান্তা-মরিচ খাওয়া পর্যন্ত এই শিল্পের ব্যবহার ছিল বেশ উল্লেখ করার মতো। প্রযুক্তির অগ্রগতি আর বিজ্ঞানের জয়ের ফসল হিসাবে কম দামে অধিক টেকসই অ্যালুমিনিয়াম, মেলামাইন, প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন মেটাল সামগ্রীর দাপটে মৃৎশিল্পের তৈরি সামগ্রীর চাহিদা ব্যাপক হারে হ্রাস পেয়েছে। স্থানীয়ভাবে মৃৎশিল্পীদের কুমার বলা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রিক্ত হস্তে মৃৎশিল্পীরা পৈতৃক ভিটেমাটিতে বাপ দাদার পেশাকে আঁকড়ে ধরে জীবিকা নির্বাহ করছে। তবু কেউ কেউ কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুধু টিকে থাকার লড়াই করে চলেছেন মাত্র। মৃৎশিল্পের বর্তমান বাজার জানতে পলাশবাড়ীর কালিবাড়ী বাজারের বিক্রেতা হাসমত আলী এর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, মরা গাছে পানি দেয়ার মতো চলছে বেচা- বিক্রি ভালো না। শৌখিন কিছু মানুষ ছাড়া কেউ আর কিনতে আসে না তেমন। তবে বিভিন্ন মেলাই খুব ভালো বিক্রি হয়। সামনে পহেলা বৈশাখ, তাই পণ্যের সমাহার ও বেশ দেখার মতো।মাটির ফুলদানি কিনতে আসা একজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, সময়ের পরিবতর্ন হচ্ছে তাই মাটির জিনিসের ব্যবহার কমে যাচ্ছে। তাছাড়া মাটির জিনিসের দাম একটু বেশি থাকে, সেজন্য সবাই এর বিকল্প খুঁজছে। তবে এই প্রাচীন শিল্পকে রক্ষা করতে হলে ক্রেতাদেরই সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে। কুমাররা শৈল্পিকতা ও মনের মধ্যে লুকায়িত মাধুর্য দিয়ে চোখ ধাঁধানো সব কাজ করে থাকেন। নকশা করা হাঁড়ি-পাতিল, চাড়ি, কলস, বদনা, খানদা, ফুলের টপ, ফুলদানী, জীবজন্তু, পাখির অবয়ব,সাজ-সজ্জা অলংকারসহ বাংলার চিরাচরিত সব নিদর্শন উঠে আসে সে শিল্পে। তবে আশার কথা হল, শিল্প সচেতন ব্যক্তিরা মৃৎশিল্পের কদর করছেন বেশ। তাদের চাহিদায় শৌখিনতার অনুষঙ্গ হচ্ছে মাটির এসব পাত্র। মৃৎশিল্পের পণ্য ব্যবহার বাড়ানো গেলে দেশের কর্মসংস্থানও বৃদ্ধি পাবে অনেক। পলাশবাড়ীর অনেক জায়গাতেই পেতে পারেন আপনার শখের ফুলদানী কিংবা মাটির বাসনসহ নিত্য প্রয়োজনীয় মাটির পণ্য। বিক্রয়ের পাশাপাশি দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্ব বাজারে রফতানি করেও অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। মৃৎশিল্প সম্পর্কে পলাশবাড়ী এসএমবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহ আলম বলেন, আমাদের ছোট বেলায় হরেক রকমের মৃৎশিল্পের পশরা সাজিয়ে বিক্রি করতে দেখেছি। কিন্তু কালের আবর্তে তা আজ রুপকথার গল্পের মতো হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে প্লাস্টিকের তৈজসপত্রের যুগে মৃৎশিল্প যেন অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছে।

পুরোনো সংবাদ

শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি 4236884377395811492

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item