তনু হত্যাঃহত্যার আগে ধর্ষণ


ডেস্কঃ



গতকাল সকালে মুরাদনগর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে তনুর লাশ তোলা হয়। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ছিলেন আদর্শ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার। এ ছাড়া পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন, সিআইডির বিশেষ সুপার (এসএস) নাজমুল করিম খান, সিআইডির প্রধান কার্যালয়ের ক্রাইম সিন ইউনিটের (ফরেনসিক আলামত) সহকারী সুপার আবদুস সালাম, মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র, জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধিসহ গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আশপাশের গ্রামের বিপুলসংখ্যক মানুষ জড়ো হয়। স্থানীয় যাত্রাপুর এ কে উচ্চবিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে কবরস্থানের কাছে আসে। তারা তনু হত্যার বিচারের দাবিতে স্লোগান দেয়।
দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত শেষে গত রাতেই একই কবরে তনুকে দাফন করা হয়। পুলিশ সুপার জানান, মামলাটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য সিআইডির বিশেষ সুপার আবদুল কাহার আকন্দকে প্রধান করে তদন্ত-সহায়ক একটি দল গঠন করা হয়েছে।
 বোর্ডের প্রধান কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. কামদা প্রসাদ সাহা। অন্য দুজন হলেন গাইনি বিভাগের প্রধান ডা. করুণা রানী কর্মকার ও ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক মো. ওমর ফারুক। তাঁরা গতকাল বিকেলে তনুর দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করেন। ময়নাতদন্তের বিষয়ে এখনই কিছু বলতে রাজি হননি তাঁরা। এর আগে ২১ মার্চ প্রথম দফা ময়নাতদন্ত করেছিলেন একই মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগেরই একজন চিকিৎসক।
কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনু যে হত্যার শিকার, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। লাশের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার তনুর লাশ তোলার পর কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন এ কথা বলেছেন।
এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য এবং পারিপার্শ্বিক আলামত থেকে পুলিশ সুপার এ ধারণা করছেন বলে জানিয়েছেন। এ জন্য দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তে এ-সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রতিবেদন চেয়েছেন তিনি। প্রতিবেদন পাওয়ার পর সব বিষয় স্পষ্ট হবে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তিনি মনে করছেন, তনুকে অন্য কোথাও হত্যা করে ঝোপের মধ্যে ফেলা হয়েছে। ঘটনাস্থলে যে আলামত রাখা হয়েছে, তা সাজানো মনে হয়েছে। একই কথা তিনি বিবিসিকেও বলেছেন।
তনুর লাশ তোলার পর এ কাজে যুক্ত একাধিক ব্যক্তি ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে ঘটনাস্থলে কথা বলে জানা গেছে, তাঁর মাথার পেছনে জখমের দাগ আছে। নাক থেঁতলানো। কানের নিচে আঁচড়ের দাগ ও চুল কাটা।
তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেছেন, তিনি প্রথম যখন তনুকে উদ্ধার করেন, তখন তাঁর মাথার পেছনে ও নাকে জখম দেখেছেন। এ ছাড়া তনুর জামার দুই বাহুর নিচের দিকে ছেঁড়া ছিল। তনুকে প্রথম দফা কবর দেওয়ার আগে যাঁরা শেষ গোসল দিয়েছেন, এমন একজনও তনুর মাথার পেছনে ও নাকে জখম এবং কানের নিচের আঁচড় ও চুল এলোমেলোভাবে কাটা দেখেছেন।
তনুর বাবা ইয়ার হোসেন গতকাল জানিয়েছেন, তিনি মেয়েকে খোঁজার সময় ঘটনাস্থল থেকে তিন ব্যক্তিকে পালিয়ে যেতে দেখেছেন। ওরা কারা, সেটা জানার জন্য তিনি তখন উপস্থিত এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞেসও করেছিলেন। এরপর একটু সামনে এগিয়েই মেয়ের লাশ দেখতে পান তিনি। ততক্ষণে ওই তিনজন দৃষ্টির আড়ালে চলে যায়। এ তথ্য তিনি শুরুতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে জানিয়েছিলেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মনজুর আলমও স্বীকার করেন, তাঁকে তনুর বাবা একই কথা বলেছিলেন।
২০ মার্চ রাত সাড়ে ১০টায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী তনুর লাশ কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে পাওয়ার হাউসের অদূরে কালভার্টের পাশের ঝোপের মধ্যে পাওয়া যায়।

পুরোনো সংবাদ

নিবিড়-অবলোকন 6181192142494874063

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item