সৈয়দপুরকে জেলা বাস্তবায়ন প্রস্তুতি ভেস্তে গেছে

মো. জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে

নীলফামারীর সৈয়দপুরকে জেলা বাস্তবায়ন করার সকল প্রস্তুতি ভেস্তে গেছে। এ শহরে রয়েছে দেশের বৃহৎ রেলওয়ে কারখানা, জিআরপি জেলা, আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর, সেনাবাহিনীর বৃহৎ ইএমই সেন্টার এন্ড স্কুল, বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি, বিসিক শিল্প নগরী, উত্তরা ইপিজেড, ছোট বড় মিলে প্রায় ৭০০টির মত ফ্যাক্টরী বা কারখানাসহ ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা। আর বাণিজ্যিক শহরে খ্যাত হয়ে সর্বমোট ২৫টি ব্যাংক শাখাসহ বীমার কারণে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়ায় বার বার দাবি উঠেছিল সৈয়দপুরকে জেলায় উন্নীতকরণের। এ কারণে ১৯৮৮ সাল থেকে ২০১০ পর্যন্ত দেশ প্রধান অথবা সংসদ সদস্যরা সৈয়দপুরকে জেলা করার প্রতিশ্র“তি দিলেও তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। যার ফলে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন সৈয়দপুরবাসী।
জানা যায়, ১৯৮৮ সালে সৈয়দপুরকে জেলায় উন্নীত করার প্রথম দাবি তোলে আন্দোলনের নামে শহরবাসী। দীর্ঘ ৮ বছর টানা আন্দোলনের পর ১৯৯৬ সালে সাবেক সাংসদ আওয়ামী লীগ নেতা আলিমউদ্দিনকে আহ্বায়ক করে একটি জেলা বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়। ওই সময় সাবেক সাংসদ অধ্যাপক আব্দুল হাফিজ উদ্দিনের (ন্যাপ) নেতৃত্বে সৈয়দপুরকে জেলা করার দাবি তুলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। কিন্তু এর পরই অধ্যাপক আব্দুল হাফিজ উদ্দিন মৃত্যুবরণ করলে কিছুটা হলেও ওই কমিটির কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়ে। এরপর ২০০৬ সালে সাবেক সাংসদ আলিম উদ্দিনের নেতৃত্বে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সৈয়দপুরকে জেলা করার দাবিতে রাজপথে নামেন সৈয়দপুরবাসী। ওই আন্দোলনে জোরদার ভূমিকা রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মোখছেদুল ইসলাম, সাংবাদিক এম আর আলম ঝন্টু ও সাংবাদিক জহুরুল ইসলাম খোকনসহ শহরের প্রকৃত সাংবাদিকরা। এরপরে ধীরে ধীরে সৈয়দপুরকে জেলা করার দাবি তুলে যখন সৈয়দপুরের সর্বস্তরের মানুষ একত্রিত হচ্ছিল তখন ২০০৮ সালে নীলফামারী-৪ আসনের সাবেক সাংসদ এএ মারুফ সাকলান সৈয়দপুরকে জেলা করার শতভাগ প্রতিশ্র“তি দিয়ে নির্বাচন করেন। ওই নির্বাচনে মারুফ সাকলান বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হলেও ভুলে যান তার প্রতিশ্র“তির কথা। এরপর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে নামেন ব্যারিস্টার মোখছেদুল ইসলাম। তিনি সৈয়দপুরকে জেলা করার দাবি তুলে ঢাকার হাইকোর্ট সংলগ্ন র‌্যালি ও মানববন্ধন করেন। এ দাবিতে একই সময় রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের সামনে র‌্যালি ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন রাজশাহীতে বসবাসরত সৈয়দপুরের সকল শিার্থী ও ব্যবসায়ীরা।
এ আন্দোলনের কারণে সৈয়দপুরকে জেলা করার শতভাগ সকল সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও পরবর্তীতে রহস্যজনক ভাবে আটকে যায় জেলা বাস্তবায়নের কার্যক্রম। সাংসদ মারুফ সাকলান বলেছিলেন জীবনের শেষ বয়সে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তার মৃত্যুর আগেই সৈয়দপুরকে জেলা হিসাবে রূপান্তরিত করবেন বলে প্রতিশ্র“তি তিনি দিয়েছিলেন। তার প্রতিশ্র“তির কারণে ওই সময় এ শহরে একে একে গড়ে ওঠে ২৬টি ব্যাংকের শাখা ও বীমা। বাড়তে থাকে শিল্প কলকারখানা। কিন্তু সরকার গিয়ে সরকার এলেও পূরণ হয় না সৈয়দপুরবাসীর স্বপ্ন। জেলা বাস্তবায়ন কমিটি ও সৈয়দপুরবাসীর স্বপ্নের ফাইলে লেগে যায় লালফিতা।
কথা হয় সৈয়দপুর উপজেলার চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা জাওয়াদুল হক সরকার ও পৌর মেয়র আমজাদ হোসেন সরকারের সাথে। তারা বলেন, সৈয়দপুরের ব্যবসায়ী যে হারে কর দিয়ে থাকেন তা অনেক বিভাগ বা জেলার ব্যবসায়ীরা দেন না। এখানে রয়েছে দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে কারখানা, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। সৈয়দপুরকে জেলা রূপান্তরিত করা হলে সৈয়দপুরই হতো দেশের মডেল। বর্তমান সরকারই সৈয়দপুরবাসীর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে পারেন বলে মতামত ব্যক্ত করেন তারা।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 7101507906577934021

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item