তিস্তা ব্যারাজের রবি মৌসুমে সেচ কার্যাক্রম উদ্ধোধন করবেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী

তাহমিন হক ববি॥
তিস্তা ব্যারাজ পরিদর্শনে আগামী ৫ জানুয়ারী দুই দিনের সফরে আসছেন পানিসম্পদ মন্ত্রালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বীর প্রতীক এমপি।
মন্ত্রীর একান্ত সচিব তোফাজ্জল হোসেন স্বাক্ষরিত মন্ত্রীর সফর সুচিতে জানানো হয় ৫ জানুয়ারী বিকালে পানিসম্পদ মন্ত্রালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বীর প্রতীক এমপি পানি উন্নয়ন বোডের নীলফামারী,রংপুর ও লালমনিরহাট জেলার প্রকল্প পরিদর্শন করে ডায়িয়ার অবসর রেষ্ট হাউসে রাত্রী যাপন করবেন। এরপর ৬ জানুয়ারী সকাল ১১টায় চলতি খরিপ-১  রবি সেচ মৌসুমের তিস্তা ব্যারাজের সেচ কার্যাক্রম উদ্ধোধন করবেন। এরপর তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের সম্প্রসারক কাজের জন্য জমি অধিগ্রহন বিষয়য়ে উত্তরাঞ্চলের পানি উন্নয়ন বোডের প্রধান প্রকৌশলী সহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে বৈঠক করবেন অবসরের সম্মেলন কক্ষে।
নদীর পানি স্বল্পতায় লক্ষ্যমাত্রা ১০ হাজার  হেক্টর জমিঃ-আগামী ৬ জানুয়ারী থেকে শুরু হতে যাচ্ছে তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের খরিপ-১ মৌসুমের সেচ কার্যক্রম। উজানের পানি প্রবাহ দিন দিন কমিয়ে আসায় তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্প কমান্ড এলাকার  পরিধি এবার অনেকাংশে কমিয়ে আনা হয়েছে। চলতি খরিপ-১ সেচ মৌসুমে বোরো আবাদে সেচ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে মাত্র দশ হাজার হেক্টর জমিতে। ফলে নদীর পানি স্বল্পতার কারনে তিস্তা সেচ এলাকার সুবিধাভোগী কৃষকরা  মহা সংকটের পড়তে পারে। এ জন্য তাদের নির্ভর করতে হবে গভীর ও অগভীর নলকুপে। ফলে তিস্তার সেচের পানির ব্যাপক চাহিদার কারনে তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ বেকায়দায় পড়তে পারে।  প্রথম পর্যায় তিস্তা সেচ প্রকল্পে কমান্ড এলাকায় সেচ প্রদানে  জমির পরিমান ছিল নীলফামারী,দিনাজপুর ও রংপুর জেলার প্রায় এক লাখ ১১ হাজার হেক্টর। কিন্তু সম্ভাবনা জাগিয়েও বারবার থেমে যাচ্ছে তিস্তা নদীর পানি বন্টন চুক্তি। বর্তমানে তিস্তা অববাহিকার উজানে নদীর পানির প্রবাহ এসে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার কিউসেকে। ভাটি অঞ্চল পানি শুন্য। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি কপাট বন্ধ রেখে উজানের অংশের পানি ধরে রেখে তা সেচখালে প্রবেশ করানো হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায় গত বছর  রবি ও খরিপ-১ মৌসুমে তিস্তা ব্যারাজের মাধ্যমে সেচ প্রদানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু নদীর পানি স্বল্পতায় সেচ প্রদান সম্ভব হয়েছিল মাত্র ৮ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে। সেই লক্ষ্যমাত্রা থেকে  এবার মাত্র ১০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই পরিমান জমির মধ্যে শুধুমাত্র নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় সাড়ে ৩ হাজার ৫শ হেক্টর, জলঢাকা উপজেলায় ৬ হাজার হেক্টর ও নীলফামারী সদরের কিছু অংশের ৫শ হেক্টর। ফলে সেচের পানি থেকে বঞ্চিত হবে নীলফমারীর ১৮ হাজার ৫শ, দিনাজপুর জেলার ২০ হাজার ও রংপুর জেলার ১৭ হাজার হেক্টর জমি।তবে উজানের পানি প্রবাহ পাওয়া গেলে সে ক্ষেত্রে কমান্ড এলাকা বৃদ্ধি পেতে পারে। নতুবা নয়। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় ২০১৩ সালে  এই মৌসুমে ৬৬ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ  লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও সেচ পায় মাত্র ২৫ হাজার হেক্টর জমি। একাধিক সুত্র জানায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, পশ্চিম দিনাজপুর, কোচবিহার ও মালদহ এলাকায় ভারত তাদের গজলডোবা ব্যারাজের মাধ্যমে সেচ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সেখানে তাদের প্রচুর সেচ দিতে হয়। তার উপর তিস্তা নদীর উপর একাধিক জলবিদ্যুৎ প্রকল্প রয়েছে। ফলে তিস্তায় যে পরিমাণ পানি সিকিম থেকে নামছে তা পর্যাপ্ত নয়। যা ভারতের ওই সমস্ত এলাকায় চাহিদা মতো সেচ প্রদান সম্ভব হয় না। সেখানে বাংলাদেশে তিস্তার পানির পাওয়া বিষয়টি প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে শুকনো মৌসুমে তিস্তার পানি প্রবাহ আশংকা জনকভাবে কমে যাচ্ছে। গত বছর পানি প্রবাহ ২শ কিউসেকে নিচে নেমে আসে।তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের সম্প্রসারন কর্মকর্তা রাফিউল বারী জানান, চলতি রবি ও খরিপ-১ মৌসুমে তিস্তা ব্যারাজ থেকে আগামী ৫ জানুয়ারী থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেচ প্রদান শুরু করা হবে। কিন্তু উজানের প্রবাহ দিন দিন কমে আসায় তিস্তা নদীর পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে তিস্তা ব্যারাজের কমান্ড এলাকায় সম্পুরক সেচ কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। গত ৩১ ডিসেম্বর  বৃহস্পতিবার রংপুর তিস্তা ভবনে প্রধান প্রকৌশলী আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে সেচ প্রদানের বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকের তিস্তার পানি প্রবাহ কম থাকায় চলতি মৌসুমে ১০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সরবরাহের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 5174931555981586869

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item