মেয়ের আলোয় দুনিয়ার আলো দেখবে অন্ধ মমিনুর।
https://www.obolokon24.com/2016/01/jaldhaka_85.html
মর্তুজা ইসলাম (জলঢাকা প্রতিনিধি)ঃ
জন্ম থেকে অন্ধ মমিনুর। পৃথিবীর আলো দেখেনি কোনদিন।ভিক্ষা করে ৭ জনের সংসার চালায় সে। অভাবের সংসার হলেও থেমে থাকেনি মমিনুর। ৫ সন্তানের মধ্যে ৪ সন্তানকে নিয়মিত স্কুলে পড়ায় সে। বড় মেয়ে মোকছেদিনা (১২ ) এবারের পিএসসি পরীক্ষায় ঘুঘুর ডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৩.৫৬ পেয়ে পাশ করে। মেয়ের এমন সাফল্য খুব খুশি মমিনুর। তাই সোমবার মেয়েকে নিয়ে কাজিরহাট পন্থাপাড়া আদর্শ আলিম মাদরাসায় ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে ভর্তি করতে আসে। কথা হয় তার সাথে বেজায় খুশি মমিনুর বলেন স্যার মেয়ের বিয়ে দেবনা পড়ালেখা করাব। শুনছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘরে ঘরে চাকরি দেয়ছে। মোর বেটি লেখাপড়া শিখলে সরকারই চাকরি দিবে।মুই দুনিয়ার আলো না দেখলেও বেটির চোখের আলোয় দুনিয়া দেখিম স্যার।সে তার দ্বিতীয় মেয়ে রুকাইয়া( ১০) কাস থ্রিতে একমাত্র ছেলে মনিরুজ্জামান ( ৭) ওয়ানে ও মোহনা (৫) কে এবার প্রি প্রাথমিকে ভর্তি করিয়েছে ঘুঘুর ডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। মমিনুরের বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ কাজিরহাট কাজিপাড়া এলাকায়।
সে ওই এলাকার মৃত জরমদ্দিন এর পুত্র।এলাকাবাসী ইউসুফের কাছে মমিনুর সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালানো যেখানে কষ্টকর।সেখানে তার ৪ সন্তানকে নিয়মিত স্কুলে পড়ানো আমাদেরও অবাক করে দিয়েছে। তিনি আরো বলেন তার সন্তানদের পড়ালেখার খরচ ফ্রি করার ব্যবস্থা করবেন ভাই। প্রত্যেকদিন পৌরসভা বাজারে মানুষের কাছে সাহায্য নিলেও মাঝে মাঝে বিভাগীয় শহর রংপুর ও রাজধানী ঢাকায় ভিক্ষা করার জন্যে যায় বলে সে জানায়। অন্ধ হলেও প্রচন্ড স্মৃতি শক্তির অধিকারি মমিনুর সকলের কাছে তার সন্তানদের জন্যে সহযোগিতা চেয়ে বলেন মোর ছোয়াগুলো যেন ফ্রি স্কুল পড়তে পারে তার ব্যবস্থা করবেন স্যার। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শাহাজাহানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমাদের প্রাথমিক স্কুলে বই ফ্রি বেতনও নাই। পরীক্ষার ফি যেন না নেয় আমি সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষককে বলে দিব।