সৈয়দপুরে নৌকা- ধানের শীষের লড়াই
https://www.obolokon24.com/2015/12/saidpur_77.html
মো. জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
উত্তরের ব্যবসা-বাণিজ্য সমৃদ্ধ নীলফামারীর ১ম শ্রেণির সৈয়দপুর পৌরসভার নির্বাচনী প্রচার- প্রচারণা জমে উঠেছে। এখানে বাঙালি- বিহারীর অবস্থানের কারণে বাংলার পাশাপাশি উর্দুতে চলছে প্রচারণা। পৌরসভার নির্বাচনে ৩ জন মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় বর্তমানে চারজন মেয়র প্রার্থী দলীয় প্রতীকে প্রচারণা ও জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
জানা যায়, ২০১১ সালের ১২ জানুয়ারি সৈয়দপুর পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রাচীনতম এই পৌরসভাটি ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ৩৪/১৩ বগকিলোমিটার আয়তনের ১৫টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পৌরসভা এলাকায় মিশ্র ভাষাভাষীর মানুষ বসবাস করেন। যাদের মধ্যে অধিকাংশ হচ্ছে উর্দুভাষী (বিহারী)। ফলে নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের ব্যাপারে তারা একটি বড় নিয়ামক বলে মনে করেন সচেতনমহল।
প্রতিদ্বন্দ্বি চারজন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সৈয়দপুর পৌর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক সাখাওয়াৎ হোসেন খোকন ( নৌকা), বর্তমান মেয়র, বিএনপি রাজনৈতিক জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপি প্রার্থী অধ্য আমজাদ হোসেন সরকার (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও পৌর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন ( লাঙ্গল) ও ইসলামী আন্দোলন সৈয়দপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হাফেজ নূরুল হুদা (হাত পাখা)। সকল প্রার্থীরা পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন ভোটের জন্য।
মুলতঃ চরজন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে নৌকা ও ধানের শীষের প্রার্থীর মধ্যে মুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। তিন তিনবার মেয়র হিসাবে দায়িত্ব পালনকারী বিএনপির প্রার্থী অধ্য আমজাদ হোসেন সরকার বলেন, সুষ্ঠ নির্বাচন হলে বাঙালি- বিহারীরা তাকে আবারও নির্বাচিত করবেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী অধ্যাপক সাখাওয়াৎ হোসেন খোকন জনসংযোগকালে বলেন, উন্নয়নের জন্য ভোটাররা তাকে নির্বাচিত করবেন বলে আশা করেন।
এদিকে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ার কারণে ভোটাররা এখনও মন খুলে সমর্থন ও বিরোধীতা করতে পারছে না। তারা বলছেন, কোন প্রার্থীকে সমর্থন করা বা বিরোধীতা করার মানেই হল নৌকা বা ধানের শীষের পক্ষে বা বিপক্ষে মত প্রকাশ। ভোটার তালিকার হালনাগাদ অনুযায়ী, সৈয়দপুর পৌর এলাকায় মোট ভোটার সংখ্যা ৮১ হাজার ৩৬৫ জন। এরমধ্যে ৪০ হাজার ৮৫২ জন পুরুষ ও ৪০ হাজার ৫১৩ জন নারী ভোটার রয়েছে। ভোটারদের মধ্যে উর্দুভাষী ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৩৮ হাজার।
স্বাধীনতার পর যতগুলো নির্বাচন হয়েছে সবকটি নির্বাচনই উর্দুভাষী ভোটাররা প্রার্থীর জয়-পরাজয়ে বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছে। ভোট ব্যাংক হিসেবে পরিচিত এসব মানুষকে পক্ষে নেয়ার জন্য কাজ করেন সবাই। ফলে প্রচার-প্রচারণা বাংলার পাশাপাশি উর্দুতে চলে। শহরের আটকেপড়া পাকিস্তানি ২২টি ক্যাম্পের বাসিন্দা টার্গেট করে এগিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর সমর্থনে নারী- পুরুষের আলাদা-আলাদাভাবে ভোট সংগ্রহ টীম প্রতিটি ভোটারের বাড়ি বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন।