শিবির ক্যাডারদের নৃশংসতার শিকার মোশাররফের চারিদিক অন্ধকার

জীবিকার ব্যবস্থা করতে প্রয়োজন সহযোগিতা,


হাজী মারুফ,রংপুর ব্যূরো অফিস :


কারমাইকেল কলেজের প্রাক্তন ছাত্র মোশাররফ হোসেন। অল্প বয়সেই তিনি এখন নি:স্ব ও রিক্ত। মুক্তচিন্তা ও বুদ্ধির মানুষ হয়ে গনতান্ত্রিক শক্তির সহযোদ্ধা হিসেবে কাজ করেও ছাত্র সংগঠন নামধারি শিবির ক্যাডারদের নৃশংসতায় তার আজ চারদিক অন্ধকার। সরকারি চাকুরির বয়সও শেষ করে ফেলেছেন। হারিয়েছেন সংসার নামক বোঝা টানার একমাত্র ব্যক্তি বাবাকেও। তার বুকে এখন বাসা বেধেছে হতাশার বিশালাকায় পাথর। উপায়ন্তর না পেয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন সর্বত্র বেঁচে থাকার সম্বল একটি ছোট খাটো চাকুরির আশায়।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কর্মপদ্ধতির স্রোতধারার নির্ভিক সৈনিক মোশাররফ হোসেন ২০০৭ সালে রংপুর কারমাইকেল কলেজে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ভর্তি হন। যোগদেন ছাত্রলীগে। নিজ কর্মদতায় পরবর্তিতে তিনি ছাত্রলীগ কলেজ শাখার সাংগঠকি সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। কলেজ থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের প্রতিটি আলোচনা, সভা-সমাবেশে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন তথা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। তিনিও স্বপ্ন দেখতেন ডিজিটালের মাধ্যমে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া বাংলাদেশ ভালোভাবে বেঁচে থাকবেন। কিন্তু তার স্বপ্ন এখনো স্বপ্নই রয়ে গেছে। শারিরীকভাবে দুর্বল হলেও তার কাছে স্মৃতি হয়ে আছে ২০১৩ সাল। বেশিদিন আগের কথা নয়। আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে উন্নয়নমূখী কর্মকান্ডের কারনে দেশ যখন মধ্যম আয়ের দেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই বিএনপি-জামায়াত জোট আগুন ও পেট্রোল দিয়ে এবং বোমা দিয়ে মানুষ মেরে নরকের বাস্তবতায় বাংলাদেশকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করছিল। সে সময় ঘরে বসে চুপ না থেকে সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ববোধের ভিত্তিতে কারমাইকেল কলেজের শান্তি শৃঙ্খলা রাসহ লেখাপড়া স্বাভাবিক পরিবেশ রাখতে ছাত্রদল ও শিবিরের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছিলেন। এরপর ক্যাম্পাস ও লেখাড়ার পরিবেশ ছিল শান্ত। কিন্তু বছরের শেষদিকে অর্থাৎ ঐ বছরের ১১ সেপ্টেম্বর কলেজ ক্যাম্পাসে সশস্ত্র শিবির ক্যাডাররা মোশাররফ হোসেন কে হত্যার উদ্দেশে তার শরীরের এলোপাতারি ছুরিকাঘাত করে এবং দু’পায়ের রগ কেটে দেয়। তবে সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবাণী এবং আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সহযোগিতা ও সরকারি চিকিৎসা সহায়তায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকেও তাকে ১ (এক) লাখ টাকা অনুদান দেয়া হয়। কিন্তু তার দূর্ভাগ্যের বিষয় হল-পা দুটো ঠিক হলেও বেশিণ ভর দিয়ে রাখা বা ইচ্ছেমত চলাফেরা করা সম্ভব হয়ে উঠছে না।
এ অবস্থায় পড়াশুনায় তার মারাত্বক তি হয়ে যায়। সিকবেডে অনার্স ফাইনাল পরীা দিয়ে প্রত্যাশিত ফলাফল পেতে ব্যর্থ হন তিনি। দীর্ঘ সময় চিকিৎসারত থেকে লেখাপড়ায় ঘাচতি এবং পঙ্গুত্বজনিত কারনে প্রয়োজনমত চলাফেরা করতে না পারায় চাকুরির পরীাগুলোতেও কোন সাফল্য আসেনি। এর মাঝেই চলে যায় সরকারি চাকুরির বয়স। প্রতিবন্ধি (পঙ্গু) কোটায় চাকুরিতে নিয়োগের জন্য বিভিন্ন মহলে আবেদন-নিবেদন করেও কোন প্রাপ্তি ঘটেনি।
এদিকে প্রান্তিক অর্থের বাবা ছফির উদ্দিন আহমেদেও সংসারের অর্থনৈতিক অবস্থায় অচল হয়ে পড়ে তার চিকিৎসা ও উচ্চ শিার ব্যয় বাবদ। ছেলে মোশাররফের সোনালী দিনের আশায় সেই বাবাও মৃত্যুবরণ করলেন অনেক মনোকষ্ট নিয়ে। পিতৃহারা মোশাররফ এখন নীলফামারীর কচুয়া গ্রামে মা ও বিয়ে হয়ে যাওয়া বোনদের স্নেহ-মমতা ও ভালোবাসায় অতিকষ্টে দিন যাপন করছেন। শিবিরের নির্মমতার শিকার হয়ে এখন তিনি কোন উপার্জনও করতে পারছেন না।
মোশাররফ হোসেন বুকে আর্তনাদ নিয়ে বলেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে খুব অল্প দিনের মধ্যে আমার চূড়ান্ত ধ্বংস অনিবার্য। কারমাইকেল কলেজ ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি রাফিউর রহমান বলেন, মোশাররফ ছাত্রলীগের জন্য নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। এখন তার চারপাশ শুধুই অন্ধকার। তার এবং তার বিধবা মায়ের জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা করতে সংগঠন ও সরকারের এগিয়ে আসা উচিত।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 5207807745906308398

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item