সবুজ সংকেত-৫ দফায় ৯৮৫ বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী ভারত গমন করবে

তাহমিন হক ববী॥
ভারতের নাগরিকত্ব বজায় রাখা সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর স্থায়ীভাবে ভারত গমনের অনিশ্চিতার বিষয়টি অবশেষে কেটে গেল। এবার ভারত কর্তৃপক্ষের সবুজ সংকেত দিয়েছে। আগামী ২২ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত পঞ্চম দফায় পঞ্চগড়,লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের ২০টি ভারতীয় ছিটমহলের ২০১টি পরিবারের ৯৮৫জন সদস্য স্থায়ীভাবে ভারত গমন করবে। এর মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা যাবে যথাক্রমে ২২,২৩ ও ২৪ নভেম্বর। চতুর্থ দফা যাবে ২৬ নভেম্বর এবং পঞ্চম ও শেষ দফায় যাবে ৩০ নভেম্বর।
চিলাহাটি-হলদিবাড়ি অভিবাসন সীমান্ত দিয়ে যাবে পঞ্চগড় জেলার ১১টি বিলুপ্ত ছিটমহলের ৯৯ পরিবারের ৪৭১ জন সদস্য। বুড়িমারী-চ্যারাবান্ধা অভিবাসন দিয়ে লালমনিরহাটের ৭ বিলুপ্ত  ছিটমহলের ৪০ পরিবারের ১৯৭ জন ও বাঘভান্ডার -সাহেবগঞ্জ অভিবাসন দিয়ে কুড়িগ্রামের দুটি বিলুপ্ত ছিটমহল থেকে ৬২ পরিবারের ৩১৭ জন সদস্য।
 ভারত কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে  দিনক্ষন ঠিক করে বাংলাদেশকে অবগত করেছে। যা নীলফামারী জেলা প্রশাসক জাকীর হোসেন নিশ্চিত করেন।
সুত্র মতে এর আগে এই পরিবার গুলোর ভারত গমনের  দিনক্ষন প্রস্তুত করা হয়েছিল  চার দফায় ৯ নবেম্বর,১৮ নবেম্বর,২৩ নবেম্বর ও ২৪ নবেম্বর। কিন্তু ভারত কর্তৃপক্ষ তা স্থগিত করেছিল। ফলে ওই সব পরিবারের ভারত গমন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল।
 সুত্র মতে এদের ভারত গমনে সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে  বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে নীলফামারীর চিলাহাটি সাথে ভারতের হলদিবাড়ি সীমান্ত পর্যন্ত একটি সংযুক্ত সড়ক নির্মান করা হয়েছে। এ ছাড়া যে  সব পরিবার ভারতীয় নাগরিকত্ব নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে, তাদের বর্তমান বাসস্থান থেকে সরকারের স্থানীয় প্রশাসন যানবাহন যোগে চিলাহাটি সীমান্তে পরিবহন যোগে নিয়ে আসবে। এখান থেকে ভারতীয় সীমান্ত অতিক্রমের সময় ওপারের ভারতীয় প্রতিনিধিদের হাতে তাদের বুঝিয়ে দেয়া হবে।
এ ছাড়া এসব পরিবারের সদস্যদের জন্য বাংলাদেশ সরকার  ভ্রমণ কর মওকুফ করে দিয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে ১১ নবেম্বর। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বিলুপ্ত ছিটমহলের যে সকল  বাসিন্দা ভারতের নাগরিকত্ব বহাল রেখেছে তাদের এই কর মওকুফ করা হয়েছে।১৯৭৪ সালে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সীমান্ত চুক্তি ও ২০১১ সালের দুই দেশের মধ্যে প্রটোকল চুক্তি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে প্রদেয় এ কর দিতে হবে না।ভ্রমণ কর আইন-২০০৩ ধারা (৪) উপধারা-১ এ প্রদত্ত ক্ষমতা বলে এ আদেশ দেওয়া হয়েছে।
অপর দিকে  যারা গমন করছে তাদেরকে ভারতের পক্ষে ভারতীয় নাগরিকের পরিচয়পত্র সহ ট্র্যাভেল পাস(ভিসা) প্রদান করা হয়। নির্ভনযোগ্য সুত্র জানায় যারা ভারত গমন করছে তাদের বরন করে নিতে হলদিবাড়ি সীমান্তে ভারত কর্তৃপক্ষ বিশাল সবুজ রং এর একটি প্যান্ডেল তৈরী করে রেখেছে। সেখানে বরন অনুষ্ঠান করবেন তারা। এরপর তাদের নিয়ে যাওয়া হবে স্থানীয়ভাবে বসবাসের জন্য তৈরী করা হলদিবাড়ি কৃষিখামার আবাসন প্রকল্পে। সেখানে প্রতিটি পরিবারের জন্য একটি করে দুইশত স্কোয়ার ফিটের ঢেউটির দিয়ে তৈরী ঘর নির্মান করা হয়েছে।
উল্লেখ যে” ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে স্থল সীমান্ত চুক্তির পর গত ৩১ জুলাই মধ্যরাত থেকে দুই দেশের ভিতরে থাকা ১৬২টি ছিটমহল বিলুপ্ত হয়। ভারতের ছিটমহল বাংলাদেশ ভূখন্ডে মিশে গিয়েছে, বাংলাদেশের ছিটমহল ভারত ভূখন্ডের সঙ্গে মিশে গিয়েছে। সে সময় বাংলাদেশে থাকা উক্ত তিন জেলার ২০টি ভারতীয় ছিটমহলের ২০১টি পরিবারের ৯৮৫জন সদস্য  যৌথ সমীক্ষায় ভারতের নাগরিকত্ব বজায় রেখেছিল। তারাই স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য ভারত গমন করবে। এদের মধ্যে কুড়িগ্রামের ১৩ পরিবারের ৫৫ জন্য সদস্য তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব সহ ভারত গমন বাতিল চেয়ে আবেদন করেছে।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 5323509802843603724

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item