ডিমলায় ৩২ শিক্ষক কর্মচারীর ইস্তফা!
https://www.obolokon24.com/2015/11/dimla_14.html
বিশেষ প্রতিনিধি॥
নীলফামারীর ডিমলা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগের অভ্যান্তরিন কোন্দলের জেরে ৩২ জন শিক্ষক-কর্মচারী চাকুরী থেকে গণ ইস্তফাপত্র দেয়ার ঘটনা নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। তবে উপাধ্যক্ষ আশরাফ- উল ইসলাম জুয়েল পৃথকভাবে অধ্যক্ষ বরাবর ইস্তফা পত্র দিলেও বাকী ৩১ জন শিক্ষক কর্মচারী একই কাগজে গণ ইস্তফাপত্রে স্বাক্ষর করে।অধ্যক্ষের প্রমানিত ব্যাপক দুর্নীতির কারনে তাকে অপসারন দাবী নিয়ে এই গণ ইস্তফাপত্র নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে এলাকায়।
জানা যায়, চলতি মাসের গত ১৪ নভেম্বর উপাধ্যক্ষ আশরাফ -উল ইসলাম জুয়েল কলেজ অধ্যক্ষ মোখলেছুর রহমান বরাবর একটি ইস্তফাপত্র জমা দিয়ে আর কলেজ মুখী হননি তিনি। এ অবস্থায় গত ২৩ নবেম্বর কলেজের তিনজন শিক্ষক ছাড়া বাকী ৩১ জন শিক্ষক ও কর্মচারী অধ্যক্ষ বরাবর একটি পত্রে একযোগে গণস্বাক্ষর করে গণ ইস্তফাপত্র দাখিল করে। তারা সেখানে উল্লেখ করেন কলেজের উপাধ্যক্ষ আশরাফ- উল ইসলাম জুয়েল গত ১৪ নবেম্বর কলেজের চাকুরী হতে ইস্তফাপত্র দিয়েছেন। কি কারনে তিনি ইস্তফা দিয়েছেন তা অধ্যক্ষ আমাদের অবগত করেননি। যেহেতু আমরা কলেজ প্রতিষ্ঠালগ্ন ১৯৯৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর হতে এক সাথে চাকুরী করে আসছি সেহেতু তার (উপাধ্যক্ষ আশরাফ- উল ইসলাম জুয়েল) অভিমান,ক্ষোভ ও রাগ-অনুরাগের সঙ্গে আমরাও একাত্বতা প্রকাশ করে ৩১ জন শিক্ষক ও কর্মচারীরা নিজ নিজ পদ থেকে ইস্তফা প্রদান করলাম।
এদিকে বিভিন্ন সুত্র অভিযোগ করে জানায় ২০১৩ সালের ১১ অক্টোবর ডিমলা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে মোখলেছুর রহমান যোগদান করেন। যোগদানের পর হতে তিনি ওই কলেজের নন এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা করে দেয়ার নামে ১লাখ ২৫ হাজার,বাউবি’র অধিনে ডিগ্রী কোর্স খোলার নামে ১০ হাজার, ৫জন শিক্ষককের উচ্চতর স্কেলে বেতন করার জন্য ২০ হাজার, কলেজের মামলা পরিচালনার নামে ১ লাখ, কলেজের ষ্টীলের আলমারী কেনার নামে ১৫ হাজার, অধ্যক্ষ নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা পরিচালনার নামে ১ লাখ ৫০ হাজার এবং কলেজের বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের নামে প্রায় ৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। এসব ঘটনায় এলাকার সচেতন মহল ওই অধ্যক্ষের বিচার দাবী করে ডিমলা উপজেলা সদরে পোস্টারিংও করেছিলো। যা তখন বেশ কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়।
সে সময় অধ্যক্ষ মোখলেছুর রহমান পূর্বের ম্যানেজিং কমিটিকে বিশেষভাবে ম্যানেজ করে অর্থ আত্মসাতের ঘটনাটিকে ধামা-চাপাদিলেও বর্তমান ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক ৩ সদস্যের গঠিত অডিট কমিটি কলেজের আয়-ব্যয় অডিট কালে সে সময়কার অর্থ আত্মসাতের ঘটনা বেড়িয়ে পড়ে। ৩ সদস্যের এই অডিট কমিটির আহবায়ক লুৎফর রহমান, সদস্য আবু তাহের ও আশরাফ-উল ইসলাম জুয়েল অডিট সমাপ্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেছিল। এসব অনিয়মের মধ্যে অদ্যাবদী কলেজের ষ্টীল আলমিরা ক্রয় করা হয়নি।
এদিকে ইস্তফাপত্র প্রদানের বিষয়ে উপাধ্যক্ষ আশরাফ উল ইসলাম জুয়েল সাংবাদিকদের বলেন, ইস্তফাপত্র গ্রহনে অধ্যক্ষ আপত্তি জানিয়েছেন।তিনি জানান কলেজের সকল শিক্ষক-কর্মচারীরাই চান কলেজটিকে দুর্নীতি মুক্ত পরিবেশে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হউক।
অপর দিকে সাংবাদিকদের কাছে গন ইস্তফা পত্রে স্বাক্ষরকারীরা এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হয়নি।
এব্যাপারে অধ্যক্ষ মোখলেছুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, উপাধ্যক্ষ আশরাফ-উল ইসলাম জুয়েলের কোন ইস্তফাপত্র তিনি পাইনি। তিনি বর্তমানে ছুটিতে রয়েছেন। অপর দিকে অধ্যক্ষ ৩১ জন শিক্ষক-কর্মচারীদের ইস্তফা পত্রের বিষয়ে জানান বিধিগত ভাবে সেটি সঠিক হয়নি বলে তা গ্রহন করেননি। তবে ইস্তফাপত্রটি তারা আমার টেবিলে রেখে গেছেন।