বিলুপ্ত ছিটের ১২০ বছরের বৃদ্ধার ব্যাকুলতা, শেখের বেটিক দুই চোখ ভরি দেখিবার চাও
https://www.obolokon24.com/2015/10/sit-mohol.html
আবু ফাত্তাহ্ কামাল পাখি,স্টাফ রিপোর্টারঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাখাৎ পেতে ব্যাকুল হয়ে উঠেছেন।নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ২৮ নম্বর বড়খানকিবাড়ি খারিজা বিলুপ্ত ছিটমহলের বাসিন্দা ১২০ বছরের বৃদ্ধা ময়মন বেওয়া। আগামী ১৫ অক্টোবর কুড়িগ্রামে বিলুপ্ত ছিটমহল পরিদর্শনে সফরে আসার খবর জানতে পেরে প্রধানমন্ত্রীকে সামনা সামনি দেখা ও কথা বলার জন্য অধির আগ্রহ পোষন করেছেন তিনি।
বৃদ্ধা বললেন শেখের বেটি হাসিনা হামাক ছিটমহলের বন্দী জীবন হইতে উদ্ধার করিছে। মুই(আমি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দুই চোখ দিয়া প্রাণ ভরি সামনা সামনি দেখিবার চাও। মোর ম্যালা (অনেক) দিনের সখ। মুই শেখের বেটিক দেখিম আর আও কারিম(কথা বলবো)। মোর বয়স ১২০ বছর হইছে। আর কতদিন বাঁচিম। মরনের আগত (আগে) শেখের বেটির দুই নয়ন ভরি দেখিলে মোর শ্যাষ(শেষ) জীবনে আশা পুরন হইবে। বয়সের ভারে ন্যুজো হলেও মনোবল হারায়নি এই বৃদ্ধা। রবিবার সরেজমিনে গেলে দুইটি বাঁশের লাঠিতে ভর করে ঘর থেকে বাড়ির বাহিরে এসে দাঁড়িয়ে বৃদ্ধা ময়মন বেওয়া এই কথা গুলো বললেন। তার সাথে কথা বলে জানা যায় ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে স্বামী বাবর আলী দেওয়ান কে চিরদিনের জন্য হারিয়েছেন। ১৪ বছর বয়সে তার বিয়ে হয়েছিল। সংসার জীবনে ৭ ছেলে ও ৭ মেয়ে সহ ১৪ জন সন্তান ছিল। এর মধ্যে ২ ছেলে ও ৪ মেয়ে ে মারা গেছে। বেঁচে আছে ৩ ছেলে ৫ মেয়ে। বড় ছেলে লাল মামুদ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার খেতাপ পায়। সে এখন পরিবার পরিজন নিয়ে ডিমলা উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিম খড়িবাড়ীর পুর্ব পাড়া গ্রামে বসবাস করছে। অন্যান্য জীবিত ছেলে মেয়েরা সংসার করছে।
৪২ জন নাতি-নাতিনী রয়েছে এই বৃদ্ধার। নাতী ও নাতনীদের মধ্যে মারা গেছে ৫ জন। বিয়ে হয়েছে ২৮ জনের। বিবাহিত নাতী নাতনীর ঘরে তিনি পুতি ( নাতী নাতনীর সন্তান) পেয়েছেন ৪২ জন। আবার পুতিদের মধ্যে বিয়ে হয়েছে ৬ জনের। বিবাহিত পুতিদের ঘরে সন্তান রয়েছে একজন করে ৬ জন। পুতিদের সন্তানদের সাথে এই বৃদ্ধার সম্পর্ক বা কি বলে সম্বোধন করে ডাকবে তার হদিস খুঁজে পাননি এই বৃদ্ধা। ১২০ বছর বয়স ধরে বেঁচে থাকা এই বৃদ্ধার স্বার্থকতা যেন বিশাল পরিবারের বংশধরের মাথা তিনি।
স্বামীর ভিটায় এই বৃদ্ধার বসবাস। তার নাতী জিন্নু রহমান তার দেখাশোনা করেন। ছিটমহলের ভেতরে মেজ ছেলে মৃত আবু তালেবের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৫৫), দুই নাতি জিন্নু ও আবুল হোসেনসহ ৩টি পরিবারের ৯জন সদস্য বসবাস করছেন।এই বৃদ্ধা স্বামীর কবর ছিটমহলের ভেতরে থাকায় স্বামীর ভিটা ছাড়েননি। স্বামীর এই ভিটাবাড়ি বুকে আঁকড়ে ধরে আছেন আজও। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এই বৃদ্ধা প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করতে চান,দুটি কথা বলতে চান।